ঢাকা ০৮:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওরে ধান কাটার ধুম, ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় দিশেহারা হাওরের কৃষকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:০৮:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০১৯
  • ৩০৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাওর অঞ্চলে ধান কাটার ধুম হলেও নায্য মূল্য না পাওয়ায় দিশেহারা হাওরের কৃষক। হাওর উপজেলা গুলোতে বর্তমানে ৪শ থেকে ৫শ টাকা ধরে বিক্রি করছে। একদিকে শীলাবৃষ্টি অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে একফসলী বরো উৎপাদনে এই হাওর গুলোর কৃষকেরা যেন অসহায় হয়ে মজুরী এবং পাওনাদার দের টাকা পরিশোধ করতে ধান কেটে ঘরে তুলার আগেই ৪শ থেকে ৫শ টাকা ধরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে বলে একাধিক কৃষক জানান।

আর এই সুযোগে ফড়িয়া বেপারীরা হাজার হাজার মণ ধান খরিদ করে নিচ্ছে। হাওর অঞ্চলের অষ্টগ্রাম, মিঠামইন, বাজিতপুর, নিকলী, কুলিয়ারচর, আজমেরীগঞ্জ, লাখাই, নাছিরনগর ও পাশ্ববর্তী উপজেলার হাওর গুলোতে প্রচুর ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পর জীবনের তাগিদে মাঠে নেমে ধান কাটছে কৃষকরা। ধান কাটার পর মাড়াই, শুকানো, গোলাজাত করে শ্রমিক পরিবহনসহ প্রচুর অর্থের প্রয়োজনের ফলে এ ধানবিক্রি ছাড়া আর কোন পথ না থাকায় ৯০ভাগ কৃষক কম দামে কষ্টার্জিত ধান বিক্রি করছে।

ধান কাটার মৌসুমে ক্রমাগত বর্ষণ, বৃষ্টি এবং বৈরী আবহাওয়ার কারনে কৃষকরা ঠিক মত কাক্ষিত ধান না পাওয়ার চরম বিপন্য হয়ে পড়েছে হাওর অঞ্চলের কৃষকেরা। এই সুযোগে ফড়িয়া বেপারীদের নিকট ৪শ থেকে ৫শ টাকায় ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

অষ্টগ্রাম উপজেলার বর্ধমান পাড়ার কৃষক তারা মিয়া জানান, ১একর জমি করেছিল ধান্য পাওয়ার কথা ছিল ৬০ থেকে ৭০মণএই জমিতে ধান হয়েছে ১০ থেকে ১৫ মণ। পাওনাদার ও শ্রমিকদের মজুরী দিতে বাধ্য হয়ে ৫শ টাকা দরে ধান বিক্রি করছে।

বাঙ্গালপাড়া গ্রামের কৃষক খায়ের মিয়া তার জমিতে নিয়ে গিয়ে দেখান ১ একর জমিতে প্রায় ৩০হাজার টাকা খরচ করেছিল কিন্তু ধান পেয়েছে মাত্র ৪ থেকে ৫ মণ। মনোহারপুরের কৃষক আশরাফ মিয়ার স্ত্রী জানান খুব কষ্ট করে ধার কর্জ করে সাড়ে ৬একর জমি করেছিল এই জমিতে সাধারনত ৩শ মণ ধান পাওয়ার কথা থাকলেও পেয়েছে মাত্র ২০ থেকে ২৫মণ ধান।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন কিভাবে সন্তান সংসার এই বছর কীভাবে পাড় করব ওপরওয়ালা ছাড়া কেউ জানে না। সদর ইউনিয়নের খাইরুন মিয়া জানান সাড়ে ৩একর জমি করেছিল তার জমিতে ২৫থেকে ৩০মণ ধান হবে কি না যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

বিভিন্ন হাওর ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ধান কাটার ধুম থাকলেও কৃষকের মনে আনন্দ নেই একদিকে শীলাবৃষ্টি অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে অসহায় হয়ে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

হাওরে ধান কাটার ধুম, ন্যায্য মূল্য না পাওয়ায় দিশেহারা হাওরের কৃষকরা

আপডেট টাইম : ১২:০৮:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মে ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাওর অঞ্চলে ধান কাটার ধুম হলেও নায্য মূল্য না পাওয়ায় দিশেহারা হাওরের কৃষক। হাওর উপজেলা গুলোতে বর্তমানে ৪শ থেকে ৫শ টাকা ধরে বিক্রি করছে। একদিকে শীলাবৃষ্টি অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে একফসলী বরো উৎপাদনে এই হাওর গুলোর কৃষকেরা যেন অসহায় হয়ে মজুরী এবং পাওনাদার দের টাকা পরিশোধ করতে ধান কেটে ঘরে তুলার আগেই ৪শ থেকে ৫শ টাকা ধরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে বলে একাধিক কৃষক জানান।

আর এই সুযোগে ফড়িয়া বেপারীরা হাজার হাজার মণ ধান খরিদ করে নিচ্ছে। হাওর অঞ্চলের অষ্টগ্রাম, মিঠামইন, বাজিতপুর, নিকলী, কুলিয়ারচর, আজমেরীগঞ্জ, লাখাই, নাছিরনগর ও পাশ্ববর্তী উপজেলার হাওর গুলোতে প্রচুর ফসল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পর জীবনের তাগিদে মাঠে নেমে ধান কাটছে কৃষকরা। ধান কাটার পর মাড়াই, শুকানো, গোলাজাত করে শ্রমিক পরিবহনসহ প্রচুর অর্থের প্রয়োজনের ফলে এ ধানবিক্রি ছাড়া আর কোন পথ না থাকায় ৯০ভাগ কৃষক কম দামে কষ্টার্জিত ধান বিক্রি করছে।

ধান কাটার মৌসুমে ক্রমাগত বর্ষণ, বৃষ্টি এবং বৈরী আবহাওয়ার কারনে কৃষকরা ঠিক মত কাক্ষিত ধান না পাওয়ার চরম বিপন্য হয়ে পড়েছে হাওর অঞ্চলের কৃষকেরা। এই সুযোগে ফড়িয়া বেপারীদের নিকট ৪শ থেকে ৫শ টাকায় ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে।

অষ্টগ্রাম উপজেলার বর্ধমান পাড়ার কৃষক তারা মিয়া জানান, ১একর জমি করেছিল ধান্য পাওয়ার কথা ছিল ৬০ থেকে ৭০মণএই জমিতে ধান হয়েছে ১০ থেকে ১৫ মণ। পাওনাদার ও শ্রমিকদের মজুরী দিতে বাধ্য হয়ে ৫শ টাকা দরে ধান বিক্রি করছে।

বাঙ্গালপাড়া গ্রামের কৃষক খায়ের মিয়া তার জমিতে নিয়ে গিয়ে দেখান ১ একর জমিতে প্রায় ৩০হাজার টাকা খরচ করেছিল কিন্তু ধান পেয়েছে মাত্র ৪ থেকে ৫ মণ। মনোহারপুরের কৃষক আশরাফ মিয়ার স্ত্রী জানান খুব কষ্ট করে ধার কর্জ করে সাড়ে ৬একর জমি করেছিল এই জমিতে সাধারনত ৩শ মণ ধান পাওয়ার কথা থাকলেও পেয়েছে মাত্র ২০ থেকে ২৫মণ ধান।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন কিভাবে সন্তান সংসার এই বছর কীভাবে পাড় করব ওপরওয়ালা ছাড়া কেউ জানে না। সদর ইউনিয়নের খাইরুন মিয়া জানান সাড়ে ৩একর জমি করেছিল তার জমিতে ২৫থেকে ৩০মণ ধান হবে কি না যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।

বিভিন্ন হাওর ঘুরে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ধান কাটার ধুম থাকলেও কৃষকের মনে আনন্দ নেই একদিকে শীলাবৃষ্টি অন্যদিকে বৈরী আবহাওয়ার কারণে অসহায় হয়ে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।