স্কুলের টিউশন ফি নির্ধারণ করবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত মাসিক বেতনসহ অন্যান্য ফি আদায় বন্ধে নির্দেশনা জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এরপরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো ভর্তি ও টিউশন ফি নেয়া বন্ধ রেখেছে। ফলে ভর্তি না হওয়া শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা নতুন করে ভোগান্তিতে পড়েছেন। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে কোনোভাবেই ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করা যাবে না। ফি বাড়ানোর আগে যেভাবে অর্থ আদায় হতো ওই নিয়মে কার্যক্রম চালাতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী দেশে ফিরলে সমন্বয় সভা করে টিউশন ফি নির্ধারণ করা হবে। শিক্ষামন্ত্রণালয়ের সূত্রে এমন তথ্য জানিয়েছে।

জানা গেছে, নতুন পে-স্কেলের অজুহাতে রাজধানীর উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ভিকারুননিসা স্কুল অ্যান্ড কলেজ, খিলগাঁও ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল, উদয়ন উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জুনিয়র ল্যাবরেটরি হাই স্কুল, মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মিরপুরের শহীদ পুলিশ স্মৃতি স্কুল, বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়, গেন্ডারিয়া হাইস্কুল, রেসিডেনশিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সেন্ট জোসেফ উচ্চ বিদ্যালয়, ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল, সিদ্ধেশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়, জুনিয়র ল্যাবরেটরি স্কুলসহ অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অভিভাবকদের না জানিয়ে প্রায় দ্বিগুণ টিউশন ফি আদায় করছিল।

বর্ধিত বেতন প্রত্যাহারের দাবিতে রাজধানীসহ সিলেট, চট্টগ্রামের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা আন্দোলন করে আসছিলেন। শিক্ষামন্ত্রীর কাছে তারা লিখিত অভিযোগ এবং অভিভাবক ফোরাম মাসিক বেতন নির্ধারণে নীতিমালার দাবিতে স্মারকলিপি দেয়। প্রতিবাদ জানায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাসহ শিক্ষাবিদরা।

এ প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত রোববার মাসিক বেতন ও অন্যান্য ফি বর্ধিত হারে আদায় বন্ধে নির্দেশনা জারি করে। ওই ঘোষণার পর আন্দোলনরত অভিভাবকরা উল্লাস প্রকাশ করে।

তবে অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখে। ফলে যেসব শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়নি তারা নতুন করে দুর্ভোগে পড়েন।

উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের অভিভাবক ফোরামের নেতা মো. আমান জাগো নিউজকে বলেন, আন্দোলনের প্রেক্ষিতে মন্ত্রণায় অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধের নির্দেশে আমরা বিজয় উল্লাস করেছি। দ্রুত নির্দেশ দেয়ায় শিক্ষামন্ত্রীসহ মন্ত্রণালয় ও ঊর্ধ্বতন কর্মকতাদের ধন্যবাদ জানাই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার থেকে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ ভর্তি বাবদ ব্যাংকে টাকা জমা নেওয়া স্থগিত করেছে। ফলে অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানকে ভর্তির জন্য স্কুলে আনলেও ফিরে যেতে বাধ্য হয়। রাজধানীর অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও এ ধরনের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবুল হোসেন জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরবর্তী নির্দেশের পর ভর্তি-সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হবে। মন্ত্রণালয় বললে যাদের কাছে টাকা বেশি নেয়া হয়েছে, তা ফেরত দেয়া হবে।

তবে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ রাখার কোন সুযোগ নেই মন্তব্য করে শিক্ষা সচিব মো. সোহরাব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, আগে যেভাবে স্কুলগুলো বেতন নিতো সে হারে বর্তমানে বেতন নিতে হবে। যদি সকলে মনে করেন যে বেতন না বাড়ালে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যয় মেটানো সম্ভব হবে না। তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কতজন শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারবে কত টাকা বেতন বাড়াতে হবে তা সমন্বয় করে শিক্ষামন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।

তিনি আরো বলেন, শিক্ষামন্ত্রী দেশে ফিরলে সমন্বয় সভা করে স্কুলের টিউশন ফি নির্ধারণ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর