শিক্ষার্থীদের আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশের যোগ্য নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে প্রযুক্তিগত জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি মানবিক মানুষ হয়ে গড়ে উঠার আহবান জানানোর মধ্য দিয়ে সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) কুশিয়ারা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে বর্ণাঢ্য আয়োজনে এ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সমাবর্তন উৎসবে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাস্ট্রপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের চ্যান্সেলর প্রতিনিধি হিসেবে সভাপতিত্ব করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি।
সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তৃতা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক, বরেণ্য ইতিহাসবিদ, লেখক এবং বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ডক্টর সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাংলাদেশ এক্রেডিটেশন কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর মেসবাহউদ্দিন আহমদ এবং ইউজিসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর মোহাম্মদ আলমগীর। এছাড়াও অতিথি হিসেবে আরো উপস্থিত ছিলেন সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ট্রাস্টের প্রধান উপদেষ্টা শফিউল আলম চৌধুরী এমপি, এবং ট্রাস্টের চেয়ারপার্সন (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শামীম আহমদ।
সমাবর্তন উৎসব শুরু হয় মহান জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. আশরাফুল আলম এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ প্রফেসর নিতাই চন্দ্র চন্দ।
সভাপতির বক্তব্যে শফিকুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার সংগ্রামে সন্ধিৎসু ও দেশপ্রেমিক শিক্ষার্থীর ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে মানসম্মত ধীমান শিক্ষার্থী সৃষ্টির লক্ষ্যে শিক্ষাগবেষনা,উদ্ভাবনসহ নানান নিরীক্ষাধর্মী কর্মযজ্ঞে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদেরকে সম্পৃক্ত করার কোন বিকল্প থাকতে পারে না।
তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ‘স্মার্ট বাংলাদেশের’ লক্ষ্য পূরণে মানবসম্পদ সৃষ্টির মাধ্যমে এই মহাযজ্ঞে কৃতিত্বের ছাপ রাখবে।
সমাবর্তন বক্তা প্রফেসর ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, সমাবর্তন একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং তার শিক্ষার্থীর জীবনে প্রয়োজনীয় এবং আনন্দময় দিন। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় হবে ভিন্নমতের চারণক্ষেত্র। স্বাধীন চিন্তাবিকাশে ভিন্ন মতের পোষকতার বিকল্প নেই। তিনি আরও বলেন, গবেষণা একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বের সঙ্গে সংযুক্ত করে। তাই আমাদের প্রধানতম কাজ হচ্ছে গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন জ্ঞানের সৃষ্টি করা।
পুরো সমাবর্তন অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক প্রণবকান্তি দেব। আলোচনা অনুষ্ঠানের পর মানবিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন খালেদ হোসেন এবং আইন অনুষদের ডিন মাহমুদুল হাসান খান স্ব স্ব ফ্যাকাল্টির গ্র্যাজুয়েট তালিকা উপস্থাপন করেন।
এসময় চ্যান্সেলর প্রতিনিধি হিসেবে সমাবর্তনের সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি শিক্ষার্থীদের গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েটদের পক্ষে বক্তব্য দেন পাপ্পু ভট্রাচার্য। দীর্ঘ আকাঙ্খিত এ সমাবর্তনে ফল ২০০৯ থেকে স্প্রিং ২০২১ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ টি বিভাগের মোট ৬ হাজার ৭শ ২৩ জন শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট সনদ অর্জন করে। এছাড়াও চ্যান্সেলর, ভাইস চ্যান্সেলর, চেয়ারম্যান, ডিন এবং স্পেশাল এপ্রিসিয়েশন এওয়ার্ড ক্যাটাগরিতে মোট ৩৪ জন শিক্ষার্থীকে এ অনুষ্ঠানে পদক প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নৃত্যালেখ্য ‘বৈশাখের জয়ধ্বনি’ পরিবেশন করে নৃত্য সংগঠন ‘নৃত্যশৈলী’। এছাড়াও সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী তন্বী দেব ও প্রদীপ মল্লিক।
সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যবৃন্দ, সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্যবর্গ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যগনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান এবং আমন্ত্রিত।