বন্যা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কা প্লাবিত ছয় জেলা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ অবশেষে পূর্বাভাস সত্যে পরিণত করে এই করোনকালেই বন্যা ডেকে আনলো প্রকৃতি। এ যেন মড়ার উপর খাড়ার ঘাঁ। নদ-নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে ছয় জেলা। পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হতে পারে।

দেশের উত্তরাঞ্চল ও উত্তর পূর্বাঞ্চল এবং সেই সব এলাকার সীমান্তবর্তী ভারতের পাহাড়ি অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেড়ে যাওয়ায় বন্যাপ্রবণ প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে। কোনো কোনো নদীর পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আবার কোনো কোনো নদ-নদীর পানি শনিবারের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রম করার আভাস রয়েছে।

এ অবস্থায় দেশের ছয় জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে বন্যা পরিস্থিতির, যা আগামী তিনদিনে আরো অবনতি হবে বলে আশঙ্কা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুজ্জামান ভূঁইয়া জানান, বর্তমানে ধরলা ও তিস্তার পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, পদ্মা সুরমা, কুশিয়ার, খোয়াই, মনু, মেঘনা, সাঙ্গুসহ সব প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানির উচ্চতা। আগামী সোমবার নাগাদ এই প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।

এদিকে সবচেয়ে বন্যাপ্রবণ নদী ব্রহ্মপুত্র ও যমুনার পানি রোববার নাগাদ বিপৎসীমার অনেক উপরে উঠে যেতে পারে। ফলে বাহাদুরাবাদ, জামালপুর, সারিয়াকান্দি, কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে পানির উচ্চতা বিপৎসীমা অতিক্রমের আশঙ্কা রয়েছে।

অন্যদিকে শনিবারের মধ্যে সুরমা নদীর কানাইঘাট ও সুনামগঞ্জ পয়েন্টে এবং সারিগায়েইন নদী সারিঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।

আগামী শনিবারের মধ্যে তিস্তা নদীর পানির উচ্চতা স্থিতিশীল ও ধরলা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে উভয় নদীর পানির উচ্চতাই বিপৎসীমার উপরে অবস্থান করতে পারে।

এ অবস্থায় শনিবার নাগাদ কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, নীলফামারী, সিলেট এবং সুনামগঞ্জ জেলায় বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হতে পারে।

গত কয়েকদিন ধরেই ভারতের আসাম, মেঘালয়, বরাক উপত্যকা, ত্রিপুরা, দার্জিলিং ও সিকিমে ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হচ্ছে। সেখানে এমন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে বলে আভাস রয়েছে।

অন্যদিকে দেশে বৃষ্টিপাত আরো বাড়বে বলে জানিয়েছে আবাহাওয়া অধিদফতর। আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হামিদ মিয়া জানান, বাংলাদেশের উত্তরাংশে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকার কারণে শনিবার সন্ধ্যা নাগাদ রংপুর, ময়মনসিংহ এবং সিলেট বিভাগ এবং বগুড়া অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৯ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে।

চলতি সপ্তাহের শেষ নাগাদ বেশি বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। শুক্রবার দেশে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে তেঁতুলিয়ায়, ২১৬ মিলিমিটার। এদিন রংপুর ও রাজশাহী বিভাগেই বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর