অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে ভোগান্তিতে রোগীরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সরকারি অ্যাম্বুলেন্স সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মুমূর্ষু রোগীরা। উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা বেশির ভাগ রোগী ও তার স্বজনদের অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে পড়তে হচ্ছে নানা ভোগান্তিতে।

কেউ কেউ অ্যাম্বুলেন্সের দেখা পেলেও এর চালক জাহিদুলের খপ্পরে পড়ে গুনছেন বাড়তি ভাড়া। এতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যাম্বুলেন্স সেবা পাওয়াটা এক দুঃসাধ্য ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সর ভর্তি রোগীদের উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজনে ঢাকাসহ অন্যত্রে অ্যাম্বুলেন্স যোগে আনা-নেয়া বাবদ সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের সর্বনিম্ন ভাড়া প্রতি কিলোমিটার ভাড়া ১০ টাকা নির্ধারিত হলেও এখানে সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করা হচ্ছে না।

এখানে রোগীদের পরিবারের সদস্যদের ফাঁদে ফেলে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া হিসেবে নেয়া হচ্ছে ৯-১০ হাজার টাকা। এরপরও অ্যাম্বুলেন্স চালক বকশিশ বাবদ ১-২ হাজার টাকা দাবি করেন রোগীর স্বজনের কাছে।

এছাড়া বিভিন্ন অজুহাতে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া নিতে আসা লোকদের ফিরিয়ে দেন চালক জাহিদুল ইসলাম। চড়া ভাড়া দিতে না পারায় সরকারি অ্যাম্বুলেন্সের পরিবর্তে প্রাইভেট অ্যাম্বুলেন্স নিতে হয় ভুক্তভোগীদের।

শনিবার স্থানীয় শফিয়ার রহমান নামে এক ব্যক্তি রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লে তার পরিবার তাকে রৌমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। এখানে ওই অসুস্থ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন চিকিৎসক।

পরবর্তীতে ওই রোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসক আরএমও নাজমুল হাসান রোগীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করেন ঢাকা হাসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালে।

ওই রোগীকে ঢাকায় নেয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স খোঁজ করেন রোগীর পরিবারের লোকজন। এ সময় চালক জাহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, অ্যাম্বুলেন্স যাবে না। অন্য রোগীর জন্য বুকিং আছে।

বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. মোমেনুল ইসলামকে জানালে তিনি ছুটে আসেন। এ সময় চালক জাহিদুল জানান, অ্যাম্বুলেন্সটি অন্য এক রোগীর পরিবার বুকিং করেছে।

কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানানোর কারণে ওই চালক রেগে গিয়ে গোপনে অ্যাম্বুলেন্সের চাকার হাওয়া ছেড়ে দেন। পরে আবারো ওই রোগীর পরিবার অ্যাম্বুলেন্স সম্পর্কে জানতে চাইলে চাকায় হাওয়া নেই বলে জানান।

অবশেষে রোগীর লোকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় জামালপুর জেলার বকশিগঞ্জ থেকে অ্যাম্বুলেন্স ১০ হাজার টাকায় ভাড়া করে ঢাকা আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালে নেন রোগীকে।

ছামিউল ইসলাম ও মাইদুল ইসলাম নামের রোগীর আত্মীয়রা বলেন, আমরা সরকারি অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সঠিক সেবা পাচ্ছি না। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসনিক ভবনের যানবাহন শাখার সামনে একটি নতুন সরকারি অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও এর সেবা পেতে ভোগান্তি হচ্ছে আমাদের।

এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবেশ পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোমেনুল ইসলাম জানান, অ্যাম্বুলেন্স সংক্রান্ত বিষয়ে যে অভিযোগ রয়েছে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর