হাওর বার্তা ডেস্কঃ আহমেদাবাদে ‘কেম ছো ট্রাম্প’ অনুষ্ঠান সফল করতে ব্যাপক তৎপরতা চালাচ্ছে ভারতের ক্ষমতাসীন হিন্দুত্ববাদী নরেন্দ্র মোদি সরকার। এতে লাখের বেশি মানুষের সমাবেশ ঘটনার পরিকল্পনা রয়েছে।
ভারতীয় দৈনিক আনন্দবাজারপত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, কিন্তু বাণিজ্যচুক্তি ছাড়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দুই দেশের দূরত্ব বাড়ছে। সেটি পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদকে মদত দেয়ার প্রসঙ্গ।
চলতি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের আগে এই মতপার্থক্য প্রকাশ্যে চলে এসেছে বলে খবরে দাবি করা হয়েছে। লস্কর-ই-তৈয়বার প্রতিষ্ঠাতা হাফিজ সাঈদকে পাকিস্তানের আদালতে শাস্তি দেয়ার ঘটনায় ইমরান খান সরকারের ভূয়সী প্রশংসা করেছে হোয়াইট হাউস।
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি অ্যালিস ওয়েলস বলেন, সন্ত্রাসবাদ দমনে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ।
সূত্রের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের ইঙ্গিত এতেই পরিষ্কার হয়ে গেছে। প্যারিসে আসন্ন এফএটিএফ’র বৈঠকে ইসলামাবাদকে ধূসর তালিকা থেকে বাদ দিতে এবার কোমর বেঁধে নামবে যুক্তরাষ্ট্র।
গোটা বিষয়টি ভারতের কাছে নিরাশার বলেই দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে। হাফিজ সাঈদকে লোক দেখানো সাজা দেয়ার পরেই পাকিস্তানকে ক্লিন চিট দেয়া যেতে পারে বলে মনে করে না ভারত।
ওই শাস্তি আদতে কতটা ফলপ্রসূ হয়, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। ভারতের উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা পাক সেনা প্রশিক্ষণ কর্মসূচি ফের চালু করা হবে বলে সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এক্ষেত্রে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কংগ্রেসের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। এতে সাত কোটি ২০ লাখ ডলার খরচ করা হবে বলে বলে জানা গেছে।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে এই কর্মসূচি বন্ধ করা হয়েছিল। ইসলামাবাদকে সন্ত্রাস দমনে আরও চাপ দেয়ার জন্য তখন এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন।
তা ফের চালু করা পাকিস্তান নিয়ে মার্কিন নীতির একটি বড় মাপের পরিবর্তনের স্পষ্ট ইঙ্গিত বলেই ধরে নেয়া হচ্ছে। যেটাকে আদৌ সুসংবাদ বলে মনে করছে না ভারত।
এছাড়া আফগান তালেবানদের সঙ্গে চুক্তি করতে পাকিস্তানকে সঙ্গে নিয়ে যেভাবে এগোচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, নয়াদিল্লির সেটা অপছন্দ।
বারবার বিভিন্ন কূটনৈতিক চ্যানেলে ভারত এ কথা ওয়াশিংটনকে বলে আসছে যে, শান্তি চুক্তির পরেও তালিবানের জঙ্গি অংশকে পাকিস্তান নিয়মিত অস্ত্র ও অর্থ যোগান দিয়ে আসছে।
কিন্তু মার্কিন নির্বাচনের আগে আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের তাড়া রয়েছে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের। যা ভূকৌশলগত কারণেই পাকিস্তানকে বাদ দেয়া অসম্ভব। তাই পাক সরকারের উপর নির্ভরতা ক্রমশ বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের।
এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের দুই দিনের ভারত সফরের আগে কাশ্মীর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওকে চিঠি দিয়েছেন শীর্ষ চার মার্কিন সিনেটর।
কাশ্মীরের বিশেষ স্বায়ত্তশাসনের মর্যাদা বিলোপের পর ৬ মাস কাটতে চলল, এখনও কার্যত বিচ্ছিন্ন অধিকৃত কাশ্মীর উপত্যকা। বন্দিদশায় দিন কাটছে উপত্যকার সাবেক তিন মুখ্যমন্ত্রীর।
ছয় মাসের বেশি ইন্টারনেট বন্ধের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদেরকে আটকে রাখা নিয়েই মূলত ফের উদ্বেগ প্রকাশ করলেন তারা।