কৃষি জমি নষ্ট করে যত্রতত্র ইন্ডাস্ট্রি করা যাবে না

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে কৃষির ভূমিকা অন্যতম। আমাদের প্রধান উৎপাদন ও আয়ের উৎস কৃষি ও কৃষিজ পণ্য। তাই শিল্প উৎপাদনে এগিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কৃষির উন্নতি অনস্বীকার্য। তাই উন্নয়ন পরিকল্পনায় কৃষিকে অগ্রাধিকার না দিলে সকল উন্নয়ন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে।

বর্তমান সরকার কৃষি উন্নয়নের দিকে গুরুত্ব দিয়েছে প্রথম থেকে। সচরাচর দেখা যায়, অবাধ শিল্পায়নের সুযোগে দেশের কৃষি জমিগুলো নষ্ট করে গড়ে ওঠে নতুন নতুন শিল্প কারখানা। এতে দেশের কৃষির ক্ষতি ঘটেছে মারাত্মকভাবে। উৎপাদন কমেছে। কৃষি পণ্যের জন্য আমরা অন্য দেশের ওপর নির্ভর করছি। কিন্তু আশি ভাগ কৃষির এই দেশে উন্নয়নের প্রথম ধাপে কৃষিই থাকার কথা। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করে দেশকে কৃষিতে এগিয়ে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু দীর্ঘদিন এই খাত অবহেলিত থেকেছে।

আজ বাংলাদেশ কৃষক লীগের ১০ম সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন: কৃষি জমি নষ্ট করে যত্রতত্র ইন্ডাস্ট্রি করা যাবে না। তিন ফসলী জমিতে তো নয়ই। কোনো আবাদি জমিতে শিল্প কারখানা স্থাপন করা যাবে না। দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক জোন করা হয়েছে। শিল্প কারখানা স্থাপন করলে সেখানে করতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন: সরকার বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও শিল্পোন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার পথে কৃষি ও কৃষকদের পেছনে ফেলে রাখবে না। আমরা উন্নত হব, তবে আমরা আমাদের কৃষক ও কৃষিকে বাদ না দিয়ে শিল্পোন্নত হয়ে উঠব।

প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যকে আমরা যৌক্তিক বলেই মনে করি। আমরা আশা করি, দেশের উন্নয়নে কৃষিকে অগ্রাধিকার দিয়েই এগিয়ে যেতে হবে। কৃষিখাতে প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করে, সহজভাবে কৃষি ঋণ দিয়ে, সরকারি ভর্তুকি দিয়ে বাংলাদেশের কৃষির হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

তবে কৃষি জমিতে ইন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি বেশ কয়েকবছর ধরে বসতবাড়ি তোলার হিড়িকও লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কোনো ধরনের পরিকল্পনা বা অনুমতি ছাড়াই এসব বসতবাড়ি তোলা হচ্ছে। এতে কৃষি জমির পরিমাণ ব্যাপক হারে কমে যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার কথা বললেও তা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবার কৃষি জমি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে আমরা আশা করি। এখনও এ বিষয়ে উদ্যোগী না হলে অদূর ভবিষ্যতে দেশ গভীর সংকটে পড়বে। তাই কৃষি জমি রক্ষায় উদ্যোগী হতে আমরা সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর