ঢাকা ০৩:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হঠাৎ করে সারাদেশে একযোগে অভিযান চালায় দুদক

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:২৩:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৯
  • ২১৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), দুর্নীতি দমন, নিয়ন্ত্রণ, ও দুর্নীতি প্রতিরোধে গঠিত একটি কমিশন। ২০০৪ সালের ৯ মে মাসে দুর্নীতি দমন আইন অনুসারে পথচলা শুরু করে এই প্রতিষ্ঠানটি। যার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। হঠাৎ করে বুধবার (১০ এপ্রিল) সারাদেশে একযোগে অভিযান চালায় দুদক। অভিযানের বিষয় ছিল, ঘুষ লেনদেন।

নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ, নবায়ন, জন্ম নিবন্ধন সনদসহ বিভিন্ন সেবা প্রাপ্তিতে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দেশের ৮ সিটি কর্পোরেশন অফিসে একযোগে আকস্মিক ভাবে এ অভিযান চালানো হয়। দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম এ অভিযানে অংশ গ্রহণ করেন।

ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, রংপুর সিটি কর্পোরেশনে অভিযান একযোগে অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক। দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের তত্ত্বাবধানে দুদক প্রধান কার্যালয়, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।

ঢাকার দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে অভিযানের সময় দেখা গেছে, রাজস্ব বিভাগের কর অঞ্চল-১ এর অফিস সহায়ক মোহাম্মদ আলী গ্রাহকের নিকট ট্রেড লাইসেন্স এর নির্ধারিত ফি ৪৫০০ টাকার স্থলে ১৫,০০০ টাকা দাবি করলে দুদক টিম তাকে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার নিকট সোপর্দ করে।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এ গিয়ে দেখা যায়, অফিসের মধ্যে বহিরাগত কিছু লোক চেয়ার টেবিল নিয়ে অফিস করছে যারা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। এ ব্যাপারে রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হলে তিনি উক্ত ঘটনার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি এবং ব্যাপারটি তার জানা নেই বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। দুদক টিম তাঁকে এই ঘটনার ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক একটি রিপোর্ট দাখিল করতে বলেছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও রংপুর সিটি কর্পোরেশন অভিযানকালে বেশকিছু অসংগতি দুদক এনফোর্সমেন্ট টিমের কাছে ধরা পড়ে।

চট্টগ্রাম ও কুমিল্ল সিটি কর্পোরেশনে অভিযানকালে দেখা যায় ট্রেড লাইসেন্স এর ফি বাবদ গৃহীত অর্থের কোন রেজিস্টার সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা সংগৃহীত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার কোন রেকর্ড টিমকে তাৎক্ষণিকভাবে দেখাতে ব্যর্থ হন। তারা এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র একত্র করে দুদক অফিসে প্রেরণ করবেন মর্মে অঙ্গীকার করেন।

উক্ত অভিযানকালে আগত সেবা প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করে জানা যায় যে, ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের সাথে বহিরাগত একটি দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে যারা নগর ভবনের পেছনের গেট সংলগ্ন কয়েকটি ফটোকপির দোকানকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ সময় দালাল নির্মূলে দুদক টিমের পক্ষ হতে কর্তৃপক্ষকে বেশ কিছু সুপারিশ প্রদান করা হয়।

এর আগে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পাঁচটি অফিসে অভিযান চালিয়ে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় ছয়জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে পাঁচজন দালালকে।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বিআরটিএর পাঁচ দপ্তরসহ সাতটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে দুদক। সংস্থার উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া, লাইসেন্স নবায়ন, গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন, ডিজিটাল নাম্বার প্লেট দেওয়াসহ নানা সেবায় ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের পেয়ে পাঁচ জেলায় বিআরটিএ কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের তত্ত্বাবধানে দুদক প্রধান কার্যালয়, হবিগঞ্জ, বগুড়া, বরিশাল ও টাঙ্গাইল সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে একযোগে এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

হঠাৎ করে সারাদেশে একযোগে অভিযান চালায় দুদক

আপডেট টাইম : ১১:২৩:১০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ এপ্রিল ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), দুর্নীতি দমন, নিয়ন্ত্রণ, ও দুর্নীতি প্রতিরোধে গঠিত একটি কমিশন। ২০০৪ সালের ৯ মে মাসে দুর্নীতি দমন আইন অনুসারে পথচলা শুরু করে এই প্রতিষ্ঠানটি। যার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। হঠাৎ করে বুধবার (১০ এপ্রিল) সারাদেশে একযোগে অভিযান চালায় দুদক। অভিযানের বিষয় ছিল, ঘুষ লেনদেন।

নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ, নবায়ন, জন্ম নিবন্ধন সনদসহ বিভিন্ন সেবা প্রাপ্তিতে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে দেশের ৮ সিটি কর্পোরেশন অফিসে একযোগে আকস্মিক ভাবে এ অভিযান চালানো হয়। দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম এ অভিযানে অংশ গ্রহণ করেন।

ঢাকা উত্তর, দক্ষিণ, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, রংপুর সিটি কর্পোরেশনে অভিযান একযোগে অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে দুদক। দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের তত্ত্বাবধানে দুদক প্রধান কার্যালয়, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা, রংপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়।

ঢাকার দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে অভিযানের সময় দেখা গেছে, রাজস্ব বিভাগের কর অঞ্চল-১ এর অফিস সহায়ক মোহাম্মদ আলী গ্রাহকের নিকট ট্রেড লাইসেন্স এর নির্ধারিত ফি ৪৫০০ টাকার স্থলে ১৫,০০০ টাকা দাবি করলে দুদক টিম তাকে সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তার নিকট সোপর্দ করে।

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এ গিয়ে দেখা যায়, অফিসের মধ্যে বহিরাগত কিছু লোক চেয়ার টেবিল নিয়ে অফিস করছে যারা ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন এর কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্ট নয়। এ ব্যাপারে রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে ব্যাখ্যা তলব করা হলে তিনি উক্ত ঘটনার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি এবং ব্যাপারটি তার জানা নেই বলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। দুদক টিম তাঁকে এই ঘটনার ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক একটি রিপোর্ট দাখিল করতে বলেছে।

এছাড়া চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, খুলনা ও রংপুর সিটি কর্পোরেশন অভিযানকালে বেশকিছু অসংগতি দুদক এনফোর্সমেন্ট টিমের কাছে ধরা পড়ে।

চট্টগ্রাম ও কুমিল্ল সিটি কর্পোরেশনে অভিযানকালে দেখা যায় ট্রেড লাইসেন্স এর ফি বাবদ গৃহীত অর্থের কোন রেজিস্টার সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা সংগৃহীত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার কোন রেকর্ড টিমকে তাৎক্ষণিকভাবে দেখাতে ব্যর্থ হন। তারা এ সংক্রান্ত রেকর্ডপত্র একত্র করে দুদক অফিসে প্রেরণ করবেন মর্মে অঙ্গীকার করেন।

উক্ত অভিযানকালে আগত সেবা প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় করে জানা যায় যে, ট্রেড লাইসেন্স প্রদানের সাথে বহিরাগত একটি দালাল চক্র সক্রিয় রয়েছে যারা নগর ভবনের পেছনের গেট সংলগ্ন কয়েকটি ফটোকপির দোকানকে কেন্দ্র করে কার্যক্রম পরিচালনা করে। এ সময় দালাল নির্মূলে দুদক টিমের পক্ষ হতে কর্তৃপক্ষকে বেশ কিছু সুপারিশ প্রদান করা হয়।

এর আগে, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) পাঁচটি অফিসে অভিযান চালিয়ে ব্যাপক অনিয়মের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এ সময় ছয়জনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে পাঁচজন দালালকে।

মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) বিআরটিএর পাঁচ দপ্তরসহ সাতটি জায়গায় অভিযান চালিয়েছে দুদক। সংস্থার উপপরিচালক (জনসংযোগ) প্রণব কুমার ভট্টাচার্য গণমাধ্যমকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস সার্টিফিকেট দেওয়া, লাইসেন্স নবায়ন, গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন, ডিজিটাল নাম্বার প্লেট দেওয়াসহ নানা সেবায় ঘুষ-দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগের পেয়ে পাঁচ জেলায় বিআরটিএ কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদক এনফোর্সমেন্ট ইউনিটের তত্ত্বাবধানে দুদক প্রধান কার্যালয়, হবিগঞ্জ, বগুড়া, বরিশাল ও টাঙ্গাইল সমন্বিত জেলা কার্যালয় থেকে একযোগে এসব অভিযান পরিচালনা করা হয়েছিল।