ঢাকা ১১:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

জনপ্রিয় অভিনেতা টেলি সামাদ আর নেই

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:২১:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০১৯
  • ২৮৭ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা টেলি সামাদ। আজ শনিবার, ৬ এপ্রিল দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার কন্যা সোহেলা সামাদ কাকলী।

এদিকে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরেই নানা অসুখে ভুগছিলেন বরেণ্য এই অভিনেতা। গতকাল শুক্রবার শরীর বেশি খারাপ হলে রাত ১টার দিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ তার মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যু আমাদের শোকে স্তব্দ করে দিয়েছে। চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন টেলি সামাদ।’

তার বিদেহি আত্মার জন্য দোয়া কামনা করে জায়েদ খান আরও জানান, অভিনেতা টেলি সামাদ স্কয়ার হাসপাতালে ডাক্তার প্রতীক দেওয়ানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা টেলি সামাদকে এর আগে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাইপাস সার্জারি করা হয়। এ ছাড়া গত বছরের ২০ অক্টোবর তার বাঁ পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতেও জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

সর্বশেষ গেল বছরের ৪ ডিসেম্বর অসুস্থ হয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন টেলি সামাদ। তখন ডাক্তার বলেছিলেন, টেলি সামাদের খাদ্য নালীতে সমস্যা রয়েছে। শুধু তাই নয়, তার বুকে ইনফেকশন ছিল, ডায়াবেটিস ছিল। রক্তের প্লাটিলেটও কমে যাচ্ছিলো বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

সেখানে ১৬ দিন চিকিৎসা নেওয়া পর বাসায় ফিরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন চলচ্চিত্রের এক সময়কার দাপুটে অভিনেতা। সেজন্য তাকে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সে যাত্রাতেও সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন তিনি।

কিন্তু হঠাৎ করেই কয়েকদিন আগে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন টেলি সামাদ। পরে গতকাল অবস্থার অবনতি হলে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে আনা হয়। এখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় জীবনের অবসান হলো তার।

জনপ্রিয় এই অভিনেতার মৃত্যুতে চলচ্চিত্রসহ সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি ঢাকার বিক্রমপুরে তিনি জন্মগ্রহণ টেলি সামাদ। টিভি, চলচ্চিত্রও মঞ্চে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনা এবং গানের জগতেও তাঁর অবাদ বিচরণ। ‘মনা পাগলা’ নামের একটি ছবির সংগীত পরিচালনাও করেছেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার তূখোড় ছাত্র টেলি সামাদের ছিল অভিনয়ের নেশা। সেই নেশার টানেই ১৯৭৩ সালে ‘কার বউ’ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। চার দশকে পাঁচ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

তার অভিনীত সর্বশেষ ছবি ‘জিরো ডিগ্রি’ মুক্তি পায় ২০১৫ সালে। শেষ জীবনে চলচ্চিত্র থেকে দূরে ছিলেন তিনি। সারাদিন বাসাতেই থাকেন। টিভি দেখতেন, ছবি আঁকতেন।

ব্যক্তিজীবনে এক কন্যা কাকলী ও এক পুত্র দিগন্তের বাবা টেলি সামাদ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ভুলে শিশুর ভালো চোখে অস্ত্রোপচার

জনপ্রিয় অভিনেতা টেলি সামাদ আর নেই

আপডেট টাইম : ০৪:২১:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ এপ্রিল ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ঢাকাই সিনেমার কিংবদন্তি অভিনেতা টেলি সামাদ। আজ শনিবার, ৬ এপ্রিল দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার কন্যা সোহেলা সামাদ কাকলী।

এদিকে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরেই নানা অসুখে ভুগছিলেন বরেণ্য এই অভিনেতা। গতকাল শুক্রবার শরীর বেশি খারাপ হলে রাত ১টার দিকে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। এখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ তার মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যু আমাদের শোকে স্তব্দ করে দিয়েছে। চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির এক উজ্জ্বল নক্ষত্র ছিলেন টেলি সামাদ।’

তার বিদেহি আত্মার জন্য দোয়া কামনা করে জায়েদ খান আরও জানান, অভিনেতা টেলি সামাদ স্কয়ার হাসপাতালে ডাক্তার প্রতীক দেওয়ানের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

প্রসঙ্গত, ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা টেলি সামাদকে এর আগে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাইপাস সার্জারি করা হয়। এ ছাড়া গত বছরের ২০ অক্টোবর তার বাঁ পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতেও জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।

সর্বশেষ গেল বছরের ৪ ডিসেম্বর অসুস্থ হয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন টেলি সামাদ। তখন ডাক্তার বলেছিলেন, টেলি সামাদের খাদ্য নালীতে সমস্যা রয়েছে। শুধু তাই নয়, তার বুকে ইনফেকশন ছিল, ডায়াবেটিস ছিল। রক্তের প্লাটিলেটও কমে যাচ্ছিলো বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

সেখানে ১৬ দিন চিকিৎসা নেওয়া পর বাসায় ফিরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন চলচ্চিত্রের এক সময়কার দাপুটে অভিনেতা। সেজন্য তাকে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সে যাত্রাতেও সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন তিনি।

কিন্তু হঠাৎ করেই কয়েকদিন আগে আবারও অসুস্থ হয়ে পড়েন টেলি সামাদ। পরে গতকাল অবস্থার অবনতি হলে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে আনা হয়। এখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় জীবনের অবসান হলো তার।

জনপ্রিয় এই অভিনেতার মৃত্যুতে চলচ্চিত্রসহ সংস্কৃতি অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারি ঢাকার বিক্রমপুরে তিনি জন্মগ্রহণ টেলি সামাদ। টিভি, চলচ্চিত্রও মঞ্চে অভিনয়ের পাশাপাশি প্রযোজনা এবং গানের জগতেও তাঁর অবাদ বিচরণ। ‘মনা পাগলা’ নামের একটি ছবির সংগীত পরিচালনাও করেছেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার তূখোড় ছাত্র টেলি সামাদের ছিল অভিনয়ের নেশা। সেই নেশার টানেই ১৯৭৩ সালে ‘কার বউ’ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রে পা রাখেন। চার দশকে পাঁচ শতাধিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।

তার অভিনীত সর্বশেষ ছবি ‘জিরো ডিগ্রি’ মুক্তি পায় ২০১৫ সালে। শেষ জীবনে চলচ্চিত্র থেকে দূরে ছিলেন তিনি। সারাদিন বাসাতেই থাকেন। টিভি দেখতেন, ছবি আঁকতেন।

ব্যক্তিজীবনে এক কন্যা কাকলী ও এক পুত্র দিগন্তের বাবা টেলি সামাদ।