ঢাকা ০৪:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আজকের মতো সড়ক ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:১৯:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯
  • ২৯০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ট্রাফিক সপ্তাহ চলার মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নর্দ্দা এলাকায় সু-প্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় সহপাঠীর মৃত্যুর প্রতিবাদে সারাদিন বিক্ষোভের পর সন্ধ্যায় সড়ক থেকে সরে গেছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া পর সেখানে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

মাইশা নূর নামে বিইউপির এক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার সকাল ৮টায় আবার সড়কে অবস্থান নেবেন তারা। এ সময় সহপাঠীদের সকালে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেইটে আসার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যুর প্রতিবাদে সারা দেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। এখানে রাজনৈতিক উপস্থিতির কোনো প্রতিফলন আমরা দেখতে চাই না। এর আগে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে নর্দ্দা এলাকায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী (২০) নিহত হন। দুর্ঘটনার পর থেকেই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। অবরোধের ফলে বিমানবন্দর থেকে বাড্ডা হয়ে রামপুরা-গুলিস্তান রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে যান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় বিইউপির শিক্ষার্থীরা মেয়রের সঙ্গে কথা বলেন ও লিখিতভাবে তাদের ৮ দফা দাবি পেশ করেন। তাদের দাবিগুলো হলো-

১. পরিবহন সেক্টরকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে এবং প্রতি মাসে বাসচালকের লাইসেন্সসহ সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করতে হবে।

২. আটক চালক ও সম্পৃক্ত সকলকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

৩. আজ থেকে ফিটনেস বিহীন বাস ও লাইসেন্স বিহীন চালককে দ্রুত সময়ে অপসারণ করতে হবে।

৪. ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সকল স্থানে আন্ডারপাস, স্পিড ব্রেকার এবং ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।

৫. চলমান আইনের পরিবর্তন করে সড়ক হত্যার সাথে জড়িত সকলকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

৬. দায়িত্ব অবহেলাকারী প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশকে স্থায়ী অপসারণ করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৭. প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি চলাচল বন্ধ করে নির্দিষ্ট স্থানে বাসস্টপ এবং যাত্রীছাউনি করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং

৮. ছাত্রদের হাফ পাস (অর্ধেক ভাড়া) অথবা আলাদা বাস সার্ভিস চালু করতে হবে।

পরে মেয়র আতিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে তাদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। তবে তার অনুরোধে সারা না দিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।

এর মধ্যে বিকাল পৌনে ৫টার দিকে সেখানে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নূর। এ সময় ‘শান্তিপূর্ণ’ আন্দোলনে আঘাত করা হলে ‘দাতভাঙা’ জবাব দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আজকের মতো সড়ক ছাড়লেন শিক্ষার্থীরা

আপডেট টাইম : ১০:১৯:০৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ট্রাফিক সপ্তাহ চলার মধ্যেই মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নর্দ্দা এলাকায় সু-প্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় সহপাঠীর মৃত্যুর প্রতিবাদে সারাদিন বিক্ষোভের পর সন্ধ্যায় সড়ক থেকে সরে গেছেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে শিক্ষার্থীরা সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেওয়া পর সেখানে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

মাইশা নূর নামে বিইউপির এক শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, বুধবার সকাল ৮টায় আবার সড়কে অবস্থান নেবেন তারা। এ সময় সহপাঠীদের সকালে বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার গেইটে আসার আহ্বান জানান তিনি। এছাড়া বাসচাপায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যুর প্রতিবাদে সারা দেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের আহ্বান জানান তিনি।

তিনি বলেন, এটা কোনো রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। এখানে রাজনৈতিক উপস্থিতির কোনো প্রতিফলন আমরা দেখতে চাই না। এর আগে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে নর্দ্দা এলাকায় যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাসের চাপায় বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহমেদ চৌধুরী (২০) নিহত হন। দুর্ঘটনার পর থেকেই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। অবরোধের ফলে বিমানবন্দর থেকে বাড্ডা হয়ে রামপুরা-গুলিস্তান রুটে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে যান ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। এ সময় বিইউপির শিক্ষার্থীরা মেয়রের সঙ্গে কথা বলেন ও লিখিতভাবে তাদের ৮ দফা দাবি পেশ করেন। তাদের দাবিগুলো হলো-

১. পরিবহন সেক্টরকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করতে হবে এবং প্রতি মাসে বাসচালকের লাইসেন্সসহ সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেক করতে হবে।

২. আটক চালক ও সম্পৃক্ত সকলকে দ্রুত সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

৩. আজ থেকে ফিটনেস বিহীন বাস ও লাইসেন্স বিহীন চালককে দ্রুত সময়ে অপসারণ করতে হবে।

৪. ঝুঁকিপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় সকল স্থানে আন্ডারপাস, স্পিড ব্রেকার এবং ফুট ওভারব্রিজ নির্মাণ করতে হবে।

৫. চলমান আইনের পরিবর্তন করে সড়ক হত্যার সাথে জড়িত সকলকে সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

৬. দায়িত্ব অবহেলাকারী প্রশাসন ও ট্রাফিক পুলিশকে স্থায়ী অপসারণ করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

৭. প্রতিযোগিতামূলক গাড়ি চলাচল বন্ধ করে নির্দিষ্ট স্থানে বাসস্টপ এবং যাত্রীছাউনি করার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং

৮. ছাত্রদের হাফ পাস (অর্ধেক ভাড়া) অথবা আলাদা বাস সার্ভিস চালু করতে হবে।

পরে মেয়র আতিকুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দিয়ে তাদের সড়ক ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানান। তবে তার অনুরোধে সারা না দিয়ে বিক্ষোভ চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা।

এর মধ্যে বিকাল পৌনে ৫টার দিকে সেখানে গিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ-ডাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নূর। এ সময় ‘শান্তিপূর্ণ’ আন্দোলনে আঘাত করা হলে ‘দাতভাঙা’ জবাব দেওয়া হবে বলে সতর্ক করেন তিনি।