ঢাকা ০৩:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নির্মাণের প্রায় ১৫ দিন যেতে না-যেতেই ভেঙে গেছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৩:০৪:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯
  • ৩৬৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নেত্রকোনার কলমাকান্দা থেকে সাউদপাড়া সড়কের রমজান মিয়ার বাড়ির পাশে একটি ইউড্রেন (ছোট বক্স কালভার্ট) নির্মাণের প্রায় ১৫ দিন যেতে না-যেতেই ভেঙে গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ হওয়ার কারণে এমন হয়েছে। ওই কালভার্ট পুনরায় নতুন করে নির্মাণ করার দাবি জানিয়ে স্থানীয় লোকজন গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

কলমাকান্দা সদর ইউনিয়ন পরিষদ ও কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় সরকারের সহায়তা প্রকল্পের (এলজিএসপি) আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কলমাকান্দা থেকে সাউদপাড়া সড়কে ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৬ ফুট দীর্ঘ ও সাড়ে ৩ ফুট প্রস্থ একটি কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই প্রকল্প কমিটির সভাপতি ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মর্জিনা আক্তার।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কালভার্টটির নকশা ও প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করে দেয়। নকশায় ৩ ফুট উচ্চতার ওই কালভার্টের নিচে রড ও সুরকির ঢালাই দিয়ে দুই পাশে দুটি স্তরে ইটের দেয়াল আর দেয়ালের ওপর পাকা ঢালাই দিয়ে নির্মাণকাজটি সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাজটি শেষ হয়। কিন্তু নির্মাণের ১৫ দিন না পেরোতেই মাঝখানে তা ভেঙে যায়।

সাউদপাড়া গ্রামের মো. ময়না মিয়া বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। আশপাশের সাতটি গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করে। এ ছাড়া রবিশস্য ও বোরো ধানের মৌসুমে হাওর থেকে বিভিন্ন এলাকার লোকজন এই রাস্তা দিয়ে ফসল নিয়ে যান। কাজ শেষ হওয়ার ১০-১৫ দিন পরেই তা ভেঙে গেছে। কাজটি খুবই নিম্নমানের হয়েছে।’

সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ গোলাম মৌলা বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে সদস্য মর্জিনা তাঁর মনগড়াভাবে কাজটি করিয়েছেন। এখনো বিল দেওয়া হয়নি। ড্রেনটি শিডিউল মোতাবেক পুনরায় নির্মাণ করে বিল নিতে হবে।’ মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘ওই কালভার্টের নির্মাণকাজ শেষ করার পরপরই একটি মালবাহী লরি যাওয়ার কারণে তা ভেঙে যায়। তবে এটি মেরামত করে দেওয়া হবে। এখানে কোনো নিম্নমানের কাজ করা হয়নি।’

উপজেলা এলজিইডির কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী ইমরান হোসেন বলেন, ‘কাজটি আমাদের তদারক করার কথা ছিল। কিন্তু এর নির্মাণকাজ শুরু ও শেষ হওয়ার বিষয়ে সদস্য মর্জিনা আমাদের কিছুই জানাননি। আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করব। কাজে কোনো প্রকার ত্রুটি পাওয়া গেলে কাজের বিল দেওয়া হবে না।’ এ ব্যাপারে ইউএনও মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘কালভার্ট নির্মাণে অনিয়মসংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

নির্মাণের প্রায় ১৫ দিন যেতে না-যেতেই ভেঙে গেছে

আপডেট টাইম : ০৩:০৪:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০১৯

হাওর বার্তা ডেস্কঃ নেত্রকোনার কলমাকান্দা থেকে সাউদপাড়া সড়কের রমজান মিয়ার বাড়ির পাশে একটি ইউড্রেন (ছোট বক্স কালভার্ট) নির্মাণের প্রায় ১৫ দিন যেতে না-যেতেই ভেঙে গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ হওয়ার কারণে এমন হয়েছে। ওই কালভার্ট পুনরায় নতুন করে নির্মাণ করার দাবি জানিয়ে স্থানীয় লোকজন গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

কলমাকান্দা সদর ইউনিয়ন পরিষদ ও কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্থানীয় সরকারের সহায়তা প্রকল্পের (এলজিএসপি) আওতায় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কলমাকান্দা থেকে সাউদপাড়া সড়কে ৭৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৬ ফুট দীর্ঘ ও সাড়ে ৩ ফুট প্রস্থ একটি কালভার্ট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই প্রকল্প কমিটির সভাপতি ইউনিয়ন পরিষদের ৭, ৮, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য মর্জিনা আক্তার।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) কালভার্টটির নকশা ও প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ করে দেয়। নকশায় ৩ ফুট উচ্চতার ওই কালভার্টের নিচে রড ও সুরকির ঢালাই দিয়ে দুই পাশে দুটি স্তরে ইটের দেয়াল আর দেয়ালের ওপর পাকা ঢালাই দিয়ে নির্মাণকাজটি সম্পন্ন হওয়ার কথা রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে কাজটি শেষ হয়। কিন্তু নির্মাণের ১৫ দিন না পেরোতেই মাঝখানে তা ভেঙে যায়।

সাউদপাড়া গ্রামের মো. ময়না মিয়া বলেন, ‘এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা। আশপাশের সাতটি গ্রামের সহস্রাধিক মানুষ প্রতিদিন এই সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করে। এ ছাড়া রবিশস্য ও বোরো ধানের মৌসুমে হাওর থেকে বিভিন্ন এলাকার লোকজন এই রাস্তা দিয়ে ফসল নিয়ে যান। কাজ শেষ হওয়ার ১০-১৫ দিন পরেই তা ভেঙে গেছে। কাজটি খুবই নিম্নমানের হয়েছে।’

সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ গোলাম মৌলা বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ না করে সদস্য মর্জিনা তাঁর মনগড়াভাবে কাজটি করিয়েছেন। এখনো বিল দেওয়া হয়নি। ড্রেনটি শিডিউল মোতাবেক পুনরায় নির্মাণ করে বিল নিতে হবে।’ মর্জিনা আক্তার বলেন, ‘ওই কালভার্টের নির্মাণকাজ শেষ করার পরপরই একটি মালবাহী লরি যাওয়ার কারণে তা ভেঙে যায়। তবে এটি মেরামত করে দেওয়া হবে। এখানে কোনো নিম্নমানের কাজ করা হয়নি।’

উপজেলা এলজিইডির কার্যালয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী ইমরান হোসেন বলেন, ‘কাজটি আমাদের তদারক করার কথা ছিল। কিন্তু এর নির্মাণকাজ শুরু ও শেষ হওয়ার বিষয়ে সদস্য মর্জিনা আমাদের কিছুই জানাননি। আমরা সরেজমিনে পরিদর্শন করব। কাজে কোনো প্রকার ত্রুটি পাওয়া গেলে কাজের বিল দেওয়া হবে না।’ এ ব্যাপারে ইউএনও মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘কালভার্ট নির্মাণে অনিয়মসংক্রান্ত একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’