হাওর বার্তা ডেস্কঃ সিলেটের গোলাপগঞ্জ, ফেঞ্চুগঞ্জসহ মৌলভীবাজারের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে হাকালুকি হাওর। এই হাওরে নির্ভরশীল স্থানীয় কয়েক হাজার মৎস্যজীবি পরিবার। এবার সেই হাকালুকিতে মাছ উৎপাদনের রেকর্ড ছাড়ানোর সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।
কয়েক বছর হাকালুকিতে মাছের গড় উৎপাদন ছিল ১৪ হাজার মেট্রিক টন। গত বছর তা ২০ শতাংশ বেড়ে রের্কড গড়ে ১৭ হাজার মেট্রিক টনে। এবছর এখনো মাছ ধার শেষ না হলেও পরিমাণের ওপর ভিত্তিকরে ১৭ হাজার মেট্রিক টন ছাড়াবে বলে আশাবাদী মৎস্য বিভাগ। মৎস্য বিভাগের সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের বৃহৎ হাওর হাকালুকিতে ২০১৭ সালে প্রায় ২৮ লাখ টাকার পোনা মাছ অবমুক্ত করা হয়। এর পরই মাছ উৎপাদনের রেকর্ড সৃষ্টি করে। ২০১৮ সালে প্রাকৃতিক ভাবেই মাছ উৎপাদনের রেকর্ড বাড়ে।
কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, হাওয়াবর্নী, ফুট বিল, নাগুয়া বিল চকিয়া বিলসহ বেশ কয়েকটি বিলে এখনো মাছ ধরা বাকি। তবে আশা করছি এবারো মাছের উৎপাদন ২ বছর আগের যে গড় উৎপাদন ছিল তার থেকে বেশি হবে। এবার মিলছে প্রায় বিপন্ন অনেক প্রজাতির মাছ। সংকটাপন্ন ১৩ প্রজাতির মাছ এবং চরম বিপন্ন ৮ প্রজাতির মাছও পাওয়া যাচ্ছে।
এখন হাকালুকিতে মাছ ধরার উৎসব চলছে। বিভিন্ন সাইজের মাছের পাশাপাশি ২০ থেকে ৩০ কেজি ওজনের মাছও ধরা পড়ছে। স্থানীয় জেলেরা জানায়, এ বছর বড় বড় রুই, বোয়াল, আইড়, কমন কার্প, মৃগেল মাছের আধিক্য বেশি। সঙ্গে দেশি মাছ চাপিলা, টেংরা, মলা ও চিংড়িসহ বিভিন্ন জাতের প্রচুর ছোট মাছ ধরা পড়ছে। রয়েছে বিলুপ্ত প্রজাতির মাছও।
প্রায় বিপন্ন প্রজাতির মাছ-পাবদা, ফলি, চিতল, আইড়, কালিবাউশ ও গুলশা মাছ এবার বেশি দেখা যাচ্ছে। এছাড়া রানি মাছ, কাকিলা, ছোট চিংড়ি, কাজলি, মলা, পুঁটি, টেংরা, পটকা, ভেদা, গনিয়া, কানি পাবদা ইত্যাদি গত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর অনেক বেশি দেখা মিলছে হাকালুকিতে। এছাড়া বিপন্ন প্রজাতির মাছ টিলা, খোকশা, অ্যালং ও কাশখাইরা রয়েছে। চরম বিপন্ন প্রজাতির মধ্যে আছে ভাঙন, বাটা, নান্দিনা, ঘোড়া মুইখ্যা ও সরপুঁটি।
পাশাপাশি সংকটাপন্ন মাছের মধ্যে ফলি, বামোশ, টাটকিনি, তিতপুঁটি মাছের দেখা মিলছে হাকালুকিতে। যা জেলা ও উপজেলার কার্যালয়ের সঠিক উদ্যোগের ফসল বলে মনে করছেন জেলা মৎস্য কর্মকর্তারা। কুলাউড়া উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুলতান মাহমুদ জানান, এবারে হাকালুকিতে এতসব মাছ দেখে আমরা খুশি।