ঢাকা ০৭:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

২২ বছরে ১৯৮ বার আদালতে হাজিরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৩১:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৫
  • ২৭৫ বার

বিনাবিচারে ২২ বছর কারাগারে আটক এক ব্যক্তিকে বাংলাদেশের এক আদালত জামিনে মুক্তি দিয়েছে। ১৯৯৩ সালের জুলাই মাসে সিলেটের আদালত প্রাঙ্গণ থেকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরার অভিযোগে ফজলু মিয়াকে পুলিশ আটক করে। পরে তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন দাবি করে তাকে বাংলাদেশের এক আইনে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। বহু আইনি লড়াইয়ের পর ২০০৩ সালে আদালত তাকে মুক্তির আদেশ দিলেও মুক্তি মেলেনি ফজলু মিয়ার। একটি মানবাধিকার সংস্থার সহায়তায় অবশেষে তিনি আজ সিলেটের জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। ২২ বছর আগে ১৯৯৩ সালের ১১ জুলাই সিলেটের আদালত এলাকায় ঘোরাফেরা করার সময় ফজলু মিয়াকে পুলিশ আটক করেছিল। প্রথমে ৫৪ ধারায় সন্দেহবশত আটক করা হলেও পরে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে সে সম্পর্কিত বিধিতে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে রাখা হয়েছিল। একপর্যায়ে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ফজলু মিয়াকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছিল। গত ২২ বছরে ফজলু মিয়াকে ১৯৮ বার আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সিলেটে কারাগারের সুপার আইনি সহায়তাদানকারী বেসরকারি সংস্থা ব্লাস্ট-এর সহায়তা নিয়ে ফজলু মিয়াকে মুক্ত করেন। সিলেট থেকে ব্লাস্টের আইনজীবী জ্যোৎস্না ইসলাম জানিয়েছেন, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য কামাল উদ্দিন রাসেল দায়িত্ব নেয়ায় ফজলু মিয়া মুক্তি পেলেন। কিন্তু ১৩ বছর আগে ২০০২ সালে আদালত তাকে তার আত্নীয়-স্বজনের জিম্মায় মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল। ফজলু মিয়ার কোনো আত্মীয়-স্বজন খুঁজে না পাওয়ায় তাকে মুক্তি দেয়া হয়নি। জ্যোৎস্না ইসলাম উল্লেখ করেছেন, তার মক্কেল ২৭/২৮ বছর বয়সে আটক হয়েছিল। এখন ২২ বছর পর মুক্তি পেয়ে ফজলু মিয়া আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। তবে তিনি বেশ অসুস্থ। বিনা বিচারে ফজলু মিয়ার জীবনের একটা বড় সময় যে নষ্ট হয়ে গেল, তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন কিনা, এসব প্রশ্ন তুলছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সুলতানা কামাল বলছিলেন, ফজলু মিয়ার জীবনের সেই সময়গুলো কেউ ফেরত দিতে পারবে না। তারপরও কোনোভাবে তাকে যদি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়া যেত।কিন্তু এ ধরনের কোনো উদাহরণই তৈরি হয়নি। মানবাধিকার সংগঠনগুলো আরও বলেছে, ফজলু মিয়ার আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়ার প্রশ্নে আইনগত বিষয় তারা খতিয়ে দেখবে। সূত্র : বিবিসি

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

২২ বছরে ১৯৮ বার আদালতে হাজিরা

আপডেট টাইম : ১১:৩১:৪৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৫

বিনাবিচারে ২২ বছর কারাগারে আটক এক ব্যক্তিকে বাংলাদেশের এক আদালত জামিনে মুক্তি দিয়েছে। ১৯৯৩ সালের জুলাই মাসে সিলেটের আদালত প্রাঙ্গণ থেকে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরার অভিযোগে ফজলু মিয়াকে পুলিশ আটক করে। পরে তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন দাবি করে তাকে বাংলাদেশের এক আইনে জেলহাজতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। বহু আইনি লড়াইয়ের পর ২০০৩ সালে আদালত তাকে মুক্তির আদেশ দিলেও মুক্তি মেলেনি ফজলু মিয়ার। একটি মানবাধিকার সংস্থার সহায়তায় অবশেষে তিনি আজ সিলেটের জেল থেকে ছাড়া পেয়েছেন। ২২ বছর আগে ১৯৯৩ সালের ১১ জুলাই সিলেটের আদালত এলাকায় ঘোরাফেরা করার সময় ফজলু মিয়াকে পুলিশ আটক করেছিল। প্রথমে ৫৪ ধারায় সন্দেহবশত আটক করা হলেও পরে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে সে সম্পর্কিত বিধিতে তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলহাজতে রাখা হয়েছিল। একপর্যায়ে মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের নির্দেশে ফজলু মিয়াকে পাবনা মানসিক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছিল। গত ২২ বছরে ফজলু মিয়াকে ১৯৮ বার আদালতে হাজিরা দিতে হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সিলেটে কারাগারের সুপার আইনি সহায়তাদানকারী বেসরকারি সংস্থা ব্লাস্ট-এর সহায়তা নিয়ে ফজলু মিয়াকে মুক্ত করেন। সিলেট থেকে ব্লাস্টের আইনজীবী জ্যোৎস্না ইসলাম জানিয়েছেন, সিলেটের দক্ষিণ সুরমার তেতলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য কামাল উদ্দিন রাসেল দায়িত্ব নেয়ায় ফজলু মিয়া মুক্তি পেলেন। কিন্তু ১৩ বছর আগে ২০০২ সালে আদালত তাকে তার আত্নীয়-স্বজনের জিম্মায় মুক্তির নির্দেশ দিয়েছিল। ফজলু মিয়ার কোনো আত্মীয়-স্বজন খুঁজে না পাওয়ায় তাকে মুক্তি দেয়া হয়নি। জ্যোৎস্না ইসলাম উল্লেখ করেছেন, তার মক্কেল ২৭/২৮ বছর বয়সে আটক হয়েছিল। এখন ২২ বছর পর মুক্তি পেয়ে ফজলু মিয়া আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন। তবে তিনি বেশ অসুস্থ। বিনা বিচারে ফজলু মিয়ার জীবনের একটা বড় সময় যে নষ্ট হয়ে গেল, তিনি ক্ষতিপূরণ পাবেন কিনা, এসব প্রশ্ন তুলছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের সুলতানা কামাল বলছিলেন, ফজলু মিয়ার জীবনের সেই সময়গুলো কেউ ফেরত দিতে পারবে না। তারপরও কোনোভাবে তাকে যদি আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়া যেত।কিন্তু এ ধরনের কোনো উদাহরণই তৈরি হয়নি। মানবাধিকার সংগঠনগুলো আরও বলেছে, ফজলু মিয়ার আর্থিক ক্ষতিপূরণ পাওয়ার প্রশ্নে আইনগত বিষয় তারা খতিয়ে দেখবে। সূত্র : বিবিসি