বছরজুড়ে কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বছরব্যাপী সাংগঠনিক কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ। উন্নয়নের ধারাবাহিকতা এবং দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকারবিরোধী জোটের প্রতি কঠোর নজরদারি রাখবে সরকার। নতুন সরকার ও সরকারি দল আগামী দিনগুলোতে কিভাবে চলবে, দলের নেতাকর্মীদের কি ধরনের সাংগঠনিক কর্মসূচি দিয়ে আগামী পাঁচ বছর চলবে তার পরিকল্পনাও চূড়ান্ত করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড আগামী ১৯ জানুয়ারী রাজধানীতে এক সমাবেশে তা ঘোষণা করতে পারেন।

দিতে পারে গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনাও। দল ও সরকার পরিচালনার বিষয় নিয়ে নতুন সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও দলের একাধিক নীতিনির্ধারকের সঙ্গে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে। তারা মনে করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দক্ষতার সাথেই টানা দশ বছর রাষ্ট্রপরিচালনা করে দেশের উন্নয়ন করছেন। আগামী পাঁচ বছরও উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে যা যা করণীয় তা তিনি করবেন। তিনি বিগত বছরগুলোতে সাংগঠনিকভাবে দলকেউ সু-সংগঠিত করেছেন। নেতারা মনে করেন উন্নয়নের রোডম্যাপ বাস্তবায়নে দল সরকারকে সহযোগীতা করবে। সরকার ও দল পৃথক সত্ত্বা নিয়েই এগিয়ে যাবে। সরকার বিরোধীজোটের রাজনৈতিক কর্মসূচি রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করবে আওযামী লীগ।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে তা রাজনৈতিকভাবেই মোকাবেলা করা হবে। তারা নাশকতা ও সহিংসতার কোনো পথ বেছে নিলে সমুচিত জবাব দেয়া হবে। যদিও বিএনপি ও তার মিত্ররা কিছু করতে পারবে বলে মনে করেন না সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

মন্ত্রী বলেন, যারা আন্দোলনে পরাজিত, তারা নির্বাচনেও পরাজিত। তাদের নতুন কিছু করার আছে বলে কেউ বিশ্বাস করে না। এমনকি বাংলাদেশের জনগণও করে না, আমরাও করি না। দশ বছরে দশ মিনিটের জন্য আন্দোলন করতে পারেনি, তারা এখন কী করবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, মন্ত্রিসভা ও সরকারের আগামী দিনের কর্মসূচি কী হবে এটিই তাদের কাছে বড় বিষয়। বিএনপি জোটের আন্দোলন নিয়ে তারা কিছু ভাবছেন না। দল ও সরকারের পৃথক সত্ত্বা বজায় রাখতে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নতুন মন্ত্রিসভায় রাখা হয়নি। আমাদের সরকারের মধ্যে দলটা হারিয়ে যাক, আমরা তা চাই না। সেখানে সরকার আর দলের যে আলাদা সত্ত্বা আছে, সেটা রাখতে হলে রেসপন্সিবল লিডারদের একটা অংশকে দলের দায়িত্বে রাখতে হবে।

এদিকে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক সূত্র জানায়, দলের সাংগঠনিক তৎপরতা যাতে ঝিমিয়ে না পরে সেজন্য বছরব্যাপী নানা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে দলের কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের সাংগঠনিক তৎপরতা আগামীতে আরও জোরদার করা হচ্ছে। শুধু সরকারের কর্মসূচি সফল করতে নয়, দলের সাংগঠনিক কর্মসূচি নিয়েও দেশব্যাপী বিচরণ করতে চান কেন্দ্রীয় নেতারা।

আওয়ামী লীগের একাধিক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকরা জানান, চলতি বছরের অক্টোবরে দলের জাতীয় কাউন্সিল করার কথা বলেছেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। কাজেই চলতি বছরের শেষ দিন পর্যন্ত দলীয় কর্মসূচি যেমন থাকবে, তেমনই দলের সাংগঠনিক কর্মতৎপরতাও বাড়বে। রাজনীতির মাঠ আওয়ামী লীগের দখলেই থাকছে। সরকার বিরোধীদের জন্য মাঠ দখলের চেষ্টা করা সহজ হবে না। বিরোধীদের ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সরকার ও দল সব সময়ই প্রস্তুত।

তারা দাবি করেন, আওয়ামী লীগ এমনই একটি দল, যারা একটি জাতীয় নির্বাচন শেষ হলেই পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়। এছাড়া স্থানীয় সরকার নির্বাচনও ঘনিয়ে এসেছে। কাজেই সাংগঠনিক তৎপরতা নিয়েই এগিয়ে যাবে আওযামী লীগের নেতাকর্মীরা।

প্রশাসনের একাধিক সূত্র জানায়, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সারাদেশ যেভাবে নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছিলো, আগামীতে স্থানীয় নির্বাচনের তা অব্যাহত থাকবে।

নতুন সরকার গঠনের পর থেকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে ইতোমধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশানা দেয়া হয়েছে। নতুন সরকার গঠনের দিন থেকেই সরকার বিরোধী জোটকে কঠোর নজরদারীতে রাখা হয়েছে।

অন্য একটি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন নতুন মন্ত্রী সভার সদস্যরা নজরদারিতে থাকবেন। বিষয়টি শুধুই যে মন্ত্রিসভার সদস্যদের উদ্দেশ্যেই বলেছেন, তা বলা যাচ্ছে না। সরকারের মন্ত্রিসভা থেকে বাদ পরা থেকে শুরু করে সরকার বিরোধীজোটের সার্বিক কর্মকাণ্ডও এ নজরদারির আওতায় পড়বে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর