হাওর বার্তা ডেস্কঃ সরাইলের অরুয়াইলের চেত্রা নদী পার হতে হচ্ছে ৭শ‘ ফুট লম্বা বাঁশের সেতু দিয়ে। বিষয়টি অভাবনীয়। অকল্পনীয়। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার অরুয়াইল ইউনিয়নের বিচ্ছিন্ন গ্রামগুলোর পাশ দিয়ে গেছে মেঘনা নদী। আর মেঘনার একটি শাখা চেত্রা নাম ধারণ করে অরুয়াইল বাজারের পাশ দিয়ে হয়ে বয়ে চলেছে। এখানে বর্ষা মৌসুমে সর্বত্রই যোগাযোগের মাধ্যম হলো নৌকা।
কিন্তু শুষ্ক মৌসুমেই যাতায়াতে নেমে আসে দুর্ভোগ। পায়ে হেঁটে অথবা কাদাপানি ভেঙে চলতে হয়। তাদের এ দুর্ভোগ কয়েকশ’ বছরের। চেত্রা নদীতে ছিল গোদারা নৌকা। কখনো রশি টেনে কখনো বৈঠায় পার করতে লোকজন। তখন মাঝি ছিল গুরুচরণ, অমিত ও শ্যামা ৩ ভাই। তারা ধান আলুসহ নানা ফসল হেঁটে হেঁটে উত্তোলন করতো। গত ২০০০ সাল থেকে স্থানীয় কিছু লোকের উদ্যোগে চেত্রা নদীর উপর বাঁশের ব্রিজ নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়।
প্রতি বছর আশ্বিন মাসেই এখানে ৭শ’ ফুট লম্বা বাঁশের ব্রিজ তৈরি করতে হয়। আর ব্রিজ দিয়ে ২ ইউনিয়নের ২০ গ্রামের হাজার হাজার লোক সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যাতায়াত করে। আর পারাপারে জন প্রতি ২-৫ টাকা ভাড়া নিয়ে থাকেন। অনেকের মতে বাংলাদেশের কোথাও এক লম্বা বাঁশের ব্রিজ আর দ্বিতীয়টি নেই। বৈশাখ মাসে ঝড় বৃষ্টিতে ব্রিজটি ভেঙে গেলে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে গুরুতর অসুস্থ রোগী ও বয়স্ক লোকজন।
গত ১৫-১৬ বছর ওই এলাকার বাসিন্দারা চেত্রা নদীর ওপর একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণের দাবি আসছে। আশ্বাস আর মাপামাপিতেই চলে যাচ্ছে সময়। ব্রিজ আর নির্মাণ হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়েই তারা প্রতি বছর চেত্রা নদীর ওপর দীর্ঘ বাঁশের সেতু তৈরি করছেন। প্রযুক্তির উন্নয়নের এ সময়ে তারা আর এ বাঁশের সাঁকো চান না। তাদের প্রত্যাশা সরকার তাদের একটি পাকা ব্রিজ নির্মাণের ব্যবস্থা করে শত শত বছরের কষ্ট লাঘব করবেন।