হাওর বার্তা ডেস্কঃ হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) কাজ শুরুই যার কারণে এখনও সেই সুনামগঞ্জে শুরু হয়নি বাঁধের কাজ। এবার হাওরে যথাসময়ে পানি নিষ্কাশন হলেও পিআইসি গঠন না হওয়ায় কাজ পিছিয়ে পড়েছে। ফলে শঙ্কিত হাওর এলাকার কৃষকরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বরের মধ্যে পিআইসি গঠন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ সময়ে নির্বাচনী তোড়জোড় শুরু হওয়ায় গুরুত্বপূর্ণ এ কাজটি নিচে চলে যায়। যে কারণে যথাসময়ে পিআইসি গঠনের কাজ শুরু করা সম্ভব হয়নি।
তবে এখন নির্বাচনী ব্যস্ততা শেষ হওয়ায় পিআইসি গঠনের কাজ শুরু হয়েছে। কাবিটা নীতিমালা অনুসারে ১৫ ডিসেম্বর হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শুরু করে ফেব্রুয়ারির ২৮ শেষ করার কথা। কিন্তু এবারও অতীতের মতো এই সময়ে কাজ শুরু করা যায়নি। বিলম্ব হওয়ায় কাজ যথাসময়ে কাজ শেষ করা যাবে না বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সংশ্লিষ্টরা জামালগঞ্জ ও ধর্মপাশায় পিআইসি গঠনের কথা জানালেও গতকাল ৩ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পিআইসির অনুমোদিত কপি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সুনামগঞ্জ কার্যালয়ে এসে পৌঁছেনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবারও ছোট-বড় মিলিয়ে ৩৭টি হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের কাজ করবে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এবার হাওরে ২ লাখ ১৫ হাজার ৬১৫ হেক্টর জমিতে আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। বাম্পার ফলনের প্রত্যাশায় এবারও লক্ষ্যমাত্রা বাড়ানো হয়েছে। কৃষকরাও বীজতলা তৈরি, জমি তৈরিসহ যাবতীয় কাজ শুরু করেছেন। হাওরে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। তবে যথাসময়ে কাজ শুরু করে শেষ করা গেলেই কৃষকরা স্বস্তিতে থাকেন বলে জানান তারা।
পাউবো সূত্রে জানা গেছে, এবার হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণে ৫৫৩টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রায় ৯৩ কোটি টাকা বরাদ্দের আবেদন করা হয়েছে। ইতোমধ্যে প্রায় ২৩ কোটি টাকা প্রদানের ব্যবস্থা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। তবে এবারও প্রয়োজনীয় প্রকল্পে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ দিয়ে প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ শেষ করার আহ্বান জানিয়েছেন হাওর আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা।
হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, এখন কাজ শুরু হলে আমি মনে করি কাজ শেষ করা যাবে। কিন্তু কাজে যদি আরো সময় নেয়া হয় দিন যতই কমতে থাকবে কাজের পরিধি ততই বাড়তে থাকবে।
দেখার হাওরের কৃষক লতিফ মিয়া বলেন, পানি নিষ্কাশন করা হলেও এখানো বাঁধের কাজ শুরু হয়নি। ২০১৭ সালের মতো যদি বন্যা হয় তাহলে আমাদের রাস্তায় নামতে হবে। আমাদের একটাই দাবি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাজ শুরু করা হোক।
তার মতোই কৃষক রহিম তালুকদার বলেন, বাঁধের কাজ শুরু হয়নি। এতে কৃষকরা খুবই ভীতির মধ্যে আছি। সঠিক সময়ে কাজ শুরু না হলে পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে সব ফসল তলিয়ে যাবে। তখন আমাদের পথে বসতে হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু বকর ছিদ্দিক ভূইয়া বলেন, নির্বাচনী ব্যস্ততা ছিল বলেই পিআইসি গঠন করা যায়নি। এখন এই ব্যস্ততা কমে যাওয়ায় কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি শিগগিরই পিআইসি অনুমোদন করে কাজ শুরু করা যাবে।