ঢাকা ০১:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে রুহুল আমিন নতুন নিবন্ধন বন্ধ, ঘুষে চালু নবায়ন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৫
  • ২৫৯ বার

ঘুষের অভিযোগে প্রধান আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিসিআইই) নিয়ন্ত্রক মো. শহিদুল হককে সরিয়ে দেওয়ার চার দিন পর নতুন নিয়ন্ত্রক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টেক্সটাইল সেলের উপ প্রধান রুহুল আমিনকে বসানো হচ্ছে ওই পদে। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে শহিদুলকে সরানোর পর পদটি চার দিন ধরে ফাঁকা পড়ে থাকায় বন্ধ রয়েছে সিসিআইই থেকে ব্যবসায়ীদের নতুন আমদানি অথবা রফতানির নিবন্ধন সনদ দেওয়া। আমদানি-রফতানির নিবন্ধন সনদ নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।

ধারনা করা হচ্ছে নব নিযুক্ত নিয়ন্ত্রক কাজ শুরু করলেই নতুন নিবন্ধন দেওয়া হতে পারে।

তবে নতুন নিবন্ধন দেওয়া বন্ধ থাকলেও কারর‌্যলয়টি থেকে ব্যবসায়ীরা আগের নেওয়া নিবন্ধন নবায়ন করতে পারছেন।

অবশ্য এ ক্ষেত্রেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। ঘুষ খাওয়ার অপরাধে নিয়ন্ত্রকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও কারর‌্যলটিতে ঘুষের লেনদেন বন্ধ হয়েছে এমনটা নিশ্চিত করা যায়নি। বৃহস্পতিবার আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে নবায়নকারী ব্যবসায়ীদের মুখেই সে কথা জানা গেলো।

কাজ দ্রুত করতে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। আর ঘুষ ছাড়া ৪ থেকে ৫ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সিসিআইই কারর‌্যলয় ঘুরে দেখা যায়, অপসারিত নিয়ন্ত্রক মো. শহিদুল হককের কারর‌্যলয়টি খোলা রয়েছে। তবে রুমে কেউ নেই। সংলগ্ন আরেকটি রুমে তিনজন কর্মকর্তাকে খোশ গল্প করতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে নাম পরিচয় না জানিয়ে ওই তিনজন বলেন, নিয়ন্ত্রক নেই, তাই আমাদের কাজ নেই। এ জন্য বসে আছি।

তারাই জানালেন, যে দিন নিয়ন্ত্রক আসবে সেদিন থেকেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।

গত ১১ অক্টোবর শহিদুল হককে পদ থেকে সরিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এর আগে গত ৯ অক্টোবর একটি সংবাদমাধ্যমে শহিদুল হকের ঘুষ নেওয়ার ওপর ভিডিওসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত আদেশ জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এদিকে নিয়ন্ত্রক না থাকলেও কারর‌্যলয়টির অন্যান্য কক্ষে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি দেখা গেছে এবং নিবন্ধন নবায়ন সংক্রান্ত কাজ করতেও দেখা গেছে কর্মকর্তাদের।

বিদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানি করতে গেলে সিসিআইই থেকে আমদানি নিবন্ধন সনদ (আইআরসি) এবং বিদেশে কোনো কিছু রপ্তানি করতে হলে একই দপ্তর থেকে রপ্তানি নিবন্ধন সনদ (ইআরসি) নিতে হয়।

এ বিষয়ে সিসিআইই’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ লাখ টাকা পর‌্যন্ত আমদানির ক্ষেত্রে নতুন নিবন্ধন সনদের ফিস ৬ হাজার টাকা। এর সঙ্গে ১৫ শতাংশ হারে মূসক হিসেবে দিতে ৯’শ টাকা। আর এই সনদ নবায়নের ফিস ৩ হাজার টাকা, সঙ্গে মূসক ৪৫০ টাকা।

২৫ লাখ টাকা পর‌্যন্ত আমদানির নিবন্ধন সনদের ফিস ১১ হাজার টাকা, সঙ্গে মূসক ১ হাজার ৬৫০ টাকা। ৯’শ টাকা মূসকসহ এ সনদের নবায়ন ফিস ৬ হাজার ৯’শ টাকা।

৫০ লাখ টাকা পর‌্যন্ত আমাদানির নিবন্ধন ফিস ১৯ হাজার টাকা এবং মূসক ২ হাজার ৮৫০ টাকা। এ ক্ষেত্রে ১ হাজার ৫’শ টাকা মূসকসহ নবয়ন ফিস ১১ হাজার ৫’শ টাকা।

১ কোটি টাকা পর‌্যন্ত আমাদনি নিবন্ধন ফিস ৩১ হাজার টাকা। এর সঙ্গে মূসক হিসেবে দিতে হবে ৪ হাজার ৬৫০ টাকা। আর এ নিবন্ধন নবায়ন ফিস ১৫ হাজার টাকার সঙ্গে মূসক ২ হাজার ২৫০ টাকা।

৫ কোটি টাকা পর‌্যন্ত আমাদিন নিবন্ধন ফিস ৪৬ হাজার টাকা এবং মূসক ৬ হাজার ৯’শ টাকা। এ নিবন্ধন নবায়ন ফিস ২২ হাজার টাকা। এর সঙ্গে মূসক হিসেবে দিতে হবে আর ৩ হাজার ৩’শ টাকা।

আর ৫ কোটি টাকার উর্ধ্বে আমাদিন নিবন্ধন ফিস ৬১ হাজার টাকা এবং মূসক ৯ হাজার ১৫০ টাকা। এ নিবন্ধন নবায়ন ফিস ৩০ হাজার টাকার সঙ্গে মূসক দিতে হবে আরও ৪ হাজার ৫’শ টাকা।

এছাড়া ইন্ডেন্টর নিবন্ধন ফিস ৪১ হাজার টাকা এবং মূসক ৬ হাজার ১৫০ টাকা। এর নবায়ন ফিস ৩ হাজার টাকা মূসকসহ ২৩ হাজার টাকা।

আর নতুন রফতানি নিবন্ধন ফিস ৮ হাজার টাকা এবং মূসক ১ হাজার ২’শ টাকা। রফতানি নিবন্ধন নবায়ন ফিস ৫ হাজার টাকা এবং মূসক ৭৫০ টাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের দায়িত্বে রুহুল আমিন নতুন নিবন্ধন বন্ধ, ঘুষে চালু নবায়ন

আপডেট টাইম : ০১:০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ অক্টোবর ২০১৫

ঘুষের অভিযোগে প্রধান আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের (সিসিআইই) নিয়ন্ত্রক মো. শহিদুল হককে সরিয়ে দেওয়ার চার দিন পর নতুন নিয়ন্ত্রক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের টেক্সটাইল সেলের উপ প্রধান রুহুল আমিনকে বসানো হচ্ছে ওই পদে। মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হেদায়েতুল্লাহ আল মামুন বাংলানিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে শহিদুলকে সরানোর পর পদটি চার দিন ধরে ফাঁকা পড়ে থাকায় বন্ধ রয়েছে সিসিআইই থেকে ব্যবসায়ীদের নতুন আমদানি অথবা রফতানির নিবন্ধন সনদ দেওয়া। আমদানি-রফতানির নিবন্ধন সনদ নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা।

ধারনা করা হচ্ছে নব নিযুক্ত নিয়ন্ত্রক কাজ শুরু করলেই নতুন নিবন্ধন দেওয়া হতে পারে।

তবে নতুন নিবন্ধন দেওয়া বন্ধ থাকলেও কারর‌্যলয়টি থেকে ব্যবসায়ীরা আগের নেওয়া নিবন্ধন নবায়ন করতে পারছেন।

অবশ্য এ ক্ষেত্রেও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে তাদের। ঘুষ খাওয়ার অপরাধে নিয়ন্ত্রকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও কারর‌্যলটিতে ঘুষের লেনদেন বন্ধ হয়েছে এমনটা নিশ্চিত করা যায়নি। বৃহস্পতিবার আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়ে নবায়নকারী ব্যবসায়ীদের মুখেই সে কথা জানা গেলো।

কাজ দ্রুত করতে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। আর ঘুষ ছাড়া ৪ থেকে ৫ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সিসিআইই কারর‌্যলয় ঘুরে দেখা যায়, অপসারিত নিয়ন্ত্রক মো. শহিদুল হককের কারর‌্যলয়টি খোলা রয়েছে। তবে রুমে কেউ নেই। সংলগ্ন আরেকটি রুমে তিনজন কর্মকর্তাকে খোশ গল্প করতে দেখা যায়।

এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে নাম পরিচয় না জানিয়ে ওই তিনজন বলেন, নিয়ন্ত্রক নেই, তাই আমাদের কাজ নেই। এ জন্য বসে আছি।

তারাই জানালেন, যে দিন নিয়ন্ত্রক আসবে সেদিন থেকেই কাজ শুরু হয়ে যাবে।

গত ১১ অক্টোবর শহিদুল হককে পদ থেকে সরিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। এর আগে গত ৯ অক্টোবর একটি সংবাদমাধ্যমে শহিদুল হকের ঘুষ নেওয়ার ওপর ভিডিওসহ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া সংক্রান্ত আদেশ জারি করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এদিকে নিয়ন্ত্রক না থাকলেও কারর‌্যলয়টির অন্যান্য কক্ষে কর্মকর্তাদের উপস্থিতি দেখা গেছে এবং নিবন্ধন নবায়ন সংক্রান্ত কাজ করতেও দেখা গেছে কর্মকর্তাদের।

বিদেশ থেকে কোনো পণ্য আমদানি করতে গেলে সিসিআইই থেকে আমদানি নিবন্ধন সনদ (আইআরসি) এবং বিদেশে কোনো কিছু রপ্তানি করতে হলে একই দপ্তর থেকে রপ্তানি নিবন্ধন সনদ (ইআরসি) নিতে হয়।

এ বিষয়ে সিসিআইই’র কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫ লাখ টাকা পর‌্যন্ত আমদানির ক্ষেত্রে নতুন নিবন্ধন সনদের ফিস ৬ হাজার টাকা। এর সঙ্গে ১৫ শতাংশ হারে মূসক হিসেবে দিতে ৯’শ টাকা। আর এই সনদ নবায়নের ফিস ৩ হাজার টাকা, সঙ্গে মূসক ৪৫০ টাকা।

২৫ লাখ টাকা পর‌্যন্ত আমদানির নিবন্ধন সনদের ফিস ১১ হাজার টাকা, সঙ্গে মূসক ১ হাজার ৬৫০ টাকা। ৯’শ টাকা মূসকসহ এ সনদের নবায়ন ফিস ৬ হাজার ৯’শ টাকা।

৫০ লাখ টাকা পর‌্যন্ত আমাদানির নিবন্ধন ফিস ১৯ হাজার টাকা এবং মূসক ২ হাজার ৮৫০ টাকা। এ ক্ষেত্রে ১ হাজার ৫’শ টাকা মূসকসহ নবয়ন ফিস ১১ হাজার ৫’শ টাকা।

১ কোটি টাকা পর‌্যন্ত আমাদনি নিবন্ধন ফিস ৩১ হাজার টাকা। এর সঙ্গে মূসক হিসেবে দিতে হবে ৪ হাজার ৬৫০ টাকা। আর এ নিবন্ধন নবায়ন ফিস ১৫ হাজার টাকার সঙ্গে মূসক ২ হাজার ২৫০ টাকা।

৫ কোটি টাকা পর‌্যন্ত আমাদিন নিবন্ধন ফিস ৪৬ হাজার টাকা এবং মূসক ৬ হাজার ৯’শ টাকা। এ নিবন্ধন নবায়ন ফিস ২২ হাজার টাকা। এর সঙ্গে মূসক হিসেবে দিতে হবে আর ৩ হাজার ৩’শ টাকা।

আর ৫ কোটি টাকার উর্ধ্বে আমাদিন নিবন্ধন ফিস ৬১ হাজার টাকা এবং মূসক ৯ হাজার ১৫০ টাকা। এ নিবন্ধন নবায়ন ফিস ৩০ হাজার টাকার সঙ্গে মূসক দিতে হবে আরও ৪ হাজার ৫’শ টাকা।

এছাড়া ইন্ডেন্টর নিবন্ধন ফিস ৪১ হাজার টাকা এবং মূসক ৬ হাজার ১৫০ টাকা। এর নবায়ন ফিস ৩ হাজার টাকা মূসকসহ ২৩ হাজার টাকা।

আর নতুন রফতানি নিবন্ধন ফিস ৮ হাজার টাকা এবং মূসক ১ হাজার ২’শ টাকা। রফতানি নিবন্ধন নবায়ন ফিস ৫ হাজার টাকা এবং মূসক ৭৫০ টাকা।