হাওর বার্তা ডেস্কঃ শিশির সিক্ত মাঠভরা সরিষা ফুলের গন্ধ বাতাসে ভাসছে। দিগন্তজোড়া হলুদের বিস্তার। গ্রামের চারপাশ ভরে উঠেছে হলুদের ঘ্রাণ আর সৌরভে। গাঢ় হলুদ বর্ণের এ ফুলে মৌ-মাছিরা গুন গুন করে মধু আহরণ করছে। দূর থেকে সরিষার ক্ষেতগুলো দেখে মনে হয়, কে যেন হলুদ চাদর বিছিয়ে রেখেছে। ভোরের কাঁচাসোনা রোদে ঝলমল করছে ফসলি জমি।
হলুদ সরিষা ফুলের অবারিত সৌন্দর্য এখন লুটোপুটি খাচ্ছে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার মাঠে মাঠে। শীতের কুয়াশাকে উপেক্ষা করে চাষিরা সরিষা ক্ষেতের যত্ন নিচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে এবং সার বীজ সংকট না থাকায় সরিষা বীজ বুনে ভাল ফলনের আশা করছেন তারা। মাঠের পর মাঠ সরষেক্ষেত প্রকৃতিতে যেন অন্য এক মাত্রা এনে দিয়েছে। হলুদ সরিষা ফুলের মৃদু উত্তাপ ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামের এখানে-সেখানে। খুলনা শহরের সীমা ছাড়িয়ে ডুমুরিয়ার যেকোনো সড়কে প্রবেশ করলেই চোখে পড়বে সোনাঝরা এ ফুলের সীমাহীন বাগান। আঁকাবাঁকা মেঠো পথ, দু’পাশে দিগন্ত হারানো হলুদের সমারোহ। ফসল ক্ষেতের সর্বত্রই এখন হলুদ রঙের গালিচা বিছিয়েছে প্রকৃতি।
ডুমুরিয়া উপজেলার কয়েকজন কৃষক সাংবাদিককে জানান, এবার সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। ফসলের মাঠগুলোতে এখন সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে।
মাঠের পর মাঠজুড়ে বিরাজ করছে থোকা থোকা হলুদ ফুলের দৃষ্টিনন্দন মনোমুগ্ধকর দৃশ্য। সরিষার ফুল আকৃষ্ট করছে মৌমাছিসহ প্রকৃতিপ্রেমীদের। কয়েক দিন পরই সরিষা উঠবে তাদের ঘরে। তারা আরও জানান, সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় আবাদে মনোযোগ দিয়েছে এলাকার কৃষকরা। এছাড়া আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষিরা ভাল ফলন পাওয়ার আশা করছেন।
বুধবার (১২ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার দক্ষিণ কালিকাপুরের সরিষা চাষি অনুপম রায় সাংবাদিককে বলেন, দুই বিঘা জমিতে তিন ধরনের সরিষার আবাদ করেছি। মাঠে বেশ ফুল ফুটেছে। আসা করছি ফলন ভাল হবে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ সরিষা ফুলের সৌন্দর্য দেখতে আসেন।
তিনি জানান, আগাম জাতের সরিষা এক সপ্তাহের মধ্যে ঘরে তোলা হবে।সেনপাড়ার সরিষা চাষি নুরুল ইসলাম শেখ সাংবাদিককে বলেন, মাঠের পর মাঠের সরিষার ফুল আকৃষ্ট করছে মৌমাছিসহ প্রকৃতিপ্রেমীদের। মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত হয়ে উঠেছে সরিষার ক্ষেত। অনেক ক্ষেতে মৌ চাষিরা মৌচাক বসিয়েছেন।
তিনি জানান, আড়াই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। ডুমুরিয়া ছাড়াও জেলার বটিয়াঘাটা, ফুলতলা, পাইকগাছা, রূপসা, দাকোপসহ ৯ উপজেলায় বেশ কিছু জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর খুলনার উপ-পরিচালক আব্দুল লতিফ সাংবাদিককে জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে এই জেলায় সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে সরিষা তুলে ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত সময় পার করবেন চাষিরা।তিনি জানান, এবছর খুলনা জেলায় ২৭০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। খুলনার বিভিন্ন উপজেলার মাঠের পর মাঠজুড়ে এখন সরিষা ক্ষেত।
আব্দুল লতিফ বলেন, উন্নত জাতের বীজ, সারের সরবরাহ এবং সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কৃষি বিভাগ কৃষকদের পাশে ছিলো। যে কারণে বাম্পার ফলন হয়েছে।