ঢাকা ০৯:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত ভুল অস্ত্রোপচার, যা ঘটেছিল প্রিয়াঙ্কা সঙ্গে সচিবালয়ে উপদেষ্টা হাসান আরিফের তৃতীয় জানাজা সম্পন্ন সাবেক সচিব ইসমাইল রিমান্ডে অবশেষে বিল পাস করে ‘শাটডাউন’ এড়াল যুক্তরাষ্ট্র চাঁদাবাজদের ধরতে অভিযান শুরু হচ্ছে: ডিএমপি কমিশনার নির্বাচনের পর নিজের নিয়মিত কাজে ফিরে যাবেন ড. ইউনূস ইয়েমেন থেকে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, আহত ১৬ জুলাই আন্দোলন বিগত বছরগুলোর অনিয়মের সমষ্টি: ফারুকী তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম ‘সড়কে নৈরাজ্যের সঙ্গে রাজনৈতিক প্রভাব জড়িত

রোহিঙ্গাদের কথা শুনেছেন নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮
  • ২৪৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশে নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্টদূত আল রবার্ট মিলারসহ ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে আশ্রিত কোনার পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি বাংলাদেশে নতুন এসেছি, তাই আপনাদের দেখার জন্য এখানে এসেছি। এসেছি আপানাদের সুখ-দুঃখের কথা জানার জন্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের নিরাপদে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য বহির্বিশ্ব ও জাতিসংঘের মাধ্যমে মিয়ানমারকে চাপপ্রয়োগ করেছে। যে কারণে মিয়ানমার আপনাদের ফেরত নেওয়ার কথা বলছে। এ সময় আপনাদের যদি বাড়ি-ঘরসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় তাহলে আপানারা রাখাইনে ফিরে যাবেন কিনা?

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই প্রশ্নের জবাবে এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, আমাদের এখানে আর এক মূহুর্তও থাকতে ইচ্ছে করছে না। আমরা যেকোন সময় স্বদেশে ফিরে যেতে রাজি। তবে মিয়ানমারে অবস্থানরত অন্যান্য জাতিগোষ্ঠির মত আমাদেরও সম্পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সেটি জাতিসংঘের সার্বিক নিরাপত্তার অধীনে। পরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত দুপুর দেড়টার দিকে বালুখালী টিভি টাওয়ার সংলগ্ন ঘুমধুম ইউএনএইচসিআর কর্তৃক নির্মিত ট্রানজিট ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। ক্যাম্পে সদ্য মিয়ানমার থেকে আসা ৯ সদস্যের দুই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে চান, তারা কেন এসেছেন? এ সময় মিয়ানমারের বুচিদং নাইক্ষ্যংপাড়া থেকে আসা আমান উল্লাহ (৫৫) জানান, সেখানে মিয়ানমার সেনারা পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে এনভিসি কার্ড নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।

বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না। এ কারণে তারা বাধ্য হয়ে এপারে চলে এসেছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলার পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত বালুখালী ময়নারঘোনা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের বেশ কয়েকটি থাকার ঘর ঘুরে দেখেন। পরে ময়নারঘোনা ক্যাম্প ও ব্লকের ৫০ মাঝির সঙ্গে কথা বলেন। মার্কিন রাষ্টদূত জানতে চান, তারা কেমন আছেন? জবাবে মাঝিরা জানান, তারা এখানে খুব ভাল আছেন। নিয়মিত ত্রাণসামগ্রী পাচ্ছেন। পাশাপাশি চিকিৎসাসেবা ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় দিন ভালো কাটালেও তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান। রাষ্ট্রদূতকে আবু তাহের মাঝি জানান, কয়েকটি এনজিও সংস্থার কারণে ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হয়নি।

এজন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরাসরি জাতিসংঘের তত্ববধানে নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করে তাদের সহায়-সম্পদ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করলে রোহিঙ্গাদের এখানে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। কারণ স্বদেশের মায়া সবার আছে। এ সময় রাষ্ট্রদূত তাদেরকে সম্মানের সঙ্গে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশ্বস্থ করেন। এর আগে সকাল ১১ টার দিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের দরগাহবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যুক্তরাষ্টের অর্থায়নে নির্মিত সাইক্লোন সেন্টার কাম স্কুল ভবন পরিদর্শন করেন। পরে বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ত্যাগ করেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

দেশ ও জাতি গঠনে “দৈনিক আমার দেশ” পত্রিকার কাছে নেত্রকোণার জনগণের প্রত্যাশা শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত

রোহিঙ্গাদের কথা শুনেছেন নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূত

আপডেট টাইম : ১১:০২:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ ডিসেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশে নবনিযুক্ত মার্কিন রাষ্টদূত আল রবার্ট মিলারসহ ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল গতকাল মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের নো ম্যানস ল্যান্ডে আশ্রিত কোনার পাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি বাংলাদেশে নতুন এসেছি, তাই আপনাদের দেখার জন্য এখানে এসেছি। এসেছি আপানাদের সুখ-দুঃখের কথা জানার জন্য। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার রোহিঙ্গাদের নিরাপদে স্বদেশে ফেরত পাঠানোর জন্য বহির্বিশ্ব ও জাতিসংঘের মাধ্যমে মিয়ানমারকে চাপপ্রয়োগ করেছে। যে কারণে মিয়ানমার আপনাদের ফেরত নেওয়ার কথা বলছে। এ সময় আপনাদের যদি বাড়ি-ঘরসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয় তাহলে আপানারা রাখাইনে ফিরে যাবেন কিনা?

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই প্রশ্নের জবাবে এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন, আমাদের এখানে আর এক মূহুর্তও থাকতে ইচ্ছে করছে না। আমরা যেকোন সময় স্বদেশে ফিরে যেতে রাজি। তবে মিয়ানমারে অবস্থানরত অন্যান্য জাতিগোষ্ঠির মত আমাদেরও সম্পূর্ণ নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সেটি জাতিসংঘের সার্বিক নিরাপত্তার অধীনে। পরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত দুপুর দেড়টার দিকে বালুখালী টিভি টাওয়ার সংলগ্ন ঘুমধুম ইউএনএইচসিআর কর্তৃক নির্মিত ট্রানজিট ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। ক্যাম্পে সদ্য মিয়ানমার থেকে আসা ৯ সদস্যের দুই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে চান, তারা কেন এসেছেন? এ সময় মিয়ানমারের বুচিদং নাইক্ষ্যংপাড়া থেকে আসা আমান উল্লাহ (৫৫) জানান, সেখানে মিয়ানমার সেনারা পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে এনভিসি কার্ড নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছে।

বাড়ি থেকে বের হতে দিচ্ছে না। এ কারণে তারা বাধ্য হয়ে এপারে চলে এসেছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলার পর মার্কিন রাষ্ট্রদূত বালুখালী ময়নারঘোনা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এ সময় রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের বেশ কয়েকটি থাকার ঘর ঘুরে দেখেন। পরে ময়নারঘোনা ক্যাম্প ও ব্লকের ৫০ মাঝির সঙ্গে কথা বলেন। মার্কিন রাষ্টদূত জানতে চান, তারা কেমন আছেন? জবাবে মাঝিরা জানান, তারা এখানে খুব ভাল আছেন। নিয়মিত ত্রাণসামগ্রী পাচ্ছেন। পাশাপাশি চিকিৎসাসেবা ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় দিন ভালো কাটালেও তারা মিয়ানমারে ফিরে যেতে চান। রাষ্ট্রদূতকে আবু তাহের মাঝি জানান, কয়েকটি এনজিও সংস্থার কারণে ১৫ নভেম্বর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন হয়নি।

এজন্য তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, সরাসরি জাতিসংঘের তত্ববধানে নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করে তাদের সহায়-সম্পদ ফেরত দেওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত করলে রোহিঙ্গাদের এখানে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। কারণ স্বদেশের মায়া সবার আছে। এ সময় রাষ্ট্রদূত তাদেরকে সম্মানের সঙ্গে মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকবে বলে আশ্বস্থ করেন। এর আগে সকাল ১১ টার দিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের দরগাহবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যুক্তরাষ্টের অর্থায়নে নির্মিত সাইক্লোন সেন্টার কাম স্কুল ভবন পরিদর্শন করেন। পরে বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গা ক্যাম্প ত্যাগ করেন।