হাওর বার্তা ডেস্কঃ আজ থেকে শুরু হয়েছে বিজয়ের মাস। এ বিজয়ের মাসে দেশে আসছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের সংগ্রহ করা বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সম্বলিত সম্পূর্ণ নতুন বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ ‘হংসবলাকা’।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটলে এভারেট ডেলিভারি সেন্টারে উড়োজাহাজ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং বিমানের কাছে চাবি দিয়ে মালিকানা হস্তান্তর করেছে। গতকাল শুক্রবার দুপুরে বিজি-২১১২ ফ্লাইটটি যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল শহরের পেনফিল্ড এয়ারপোর্ট থেকে যাত্রা শুরু করেছে ঢাকার উদ্দেশ্যে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ দপ্তর সূত্র জানিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার (২৯ নভেম্বর) এ মালিকানা হস্তান্তর করা হয়। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় উড়োজাহাজটি ঢাকার হজরত শাহাজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
মালিকানা হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বোয়িং পরিচালক (ডেলিভারি কন্ট্রাক) জন বর্বার ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (মধ্য প্রাচ্য, সাউথ এশিয়া) এহসেন রাজপুত উপস্থিত ছিলেন। বোয়িং প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মালিকানা বুঝে নেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পরিচালক (ফ্লাইট অপারেশন) ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিল।
বিমানটি বুঝে নিতে বিমান পরিচালনা পর্ষদ, নির্বাহী পরিচালক ও কর্মকর্তাসহ ৩২ জন যুক্তরাষ্ট্রে যান। এরমধ্যে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, সংসদ সচিবালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ ও অর্থায়নকারী ব্যাংকের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রে স্থানীয় সময় ৩০ নভেম্বর সকালে ফিতা কেটে ড্রিমলাইনার হংসবলাকার যাত্রা শুরু হবে। এরমধ্যে দিয়ে বিমানবহরে উড়োজাহাজের সংখ্যা দাঁড়াবে ১৫টি।
বিরতিহীনভাবে ১৫ ঘণ্টা বিমানটি চালিয়ে নিয়ে আসছেন বিমানের চারজন পাইলট। তারা হলেন-ক্যাপ্টেন স্মলস্কি, ক্যাপ্টেন মো. আমিনুল, ক্যাপ্টেন শোয়েব চৌধুরী ও ফার্স্ট অফিসার আনিতা রহমান। ফ্লাইট পার্সার শবনম কাদিরসহ পাঁচজন কেবিন ক্রু দায়িত্ব পালন করবেন।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০০৮ সালে মার্কিন বিমান নির্মাতা প্রতিষ্ঠান বোয়িং কোম্পানির সঙ্গে ১০টি নতুন বিমান ক্রয়ের জন্য ২ দশমিক ১ বিলিয়ন ইউএস ডলারের চুক্তি করে। ইতোমধ্যে বহরে যুক্ত হয়েছে ছয়টি বিমান। বাকি চারটি বিমান হলো বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার। এর প্রথমটি ১৯ আগস্ট দেশে আসে। চারটি ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজের নাম পছন্দ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ৪টি বিমানের নাম রাখা হয়েছে আকাশবীণা, হংসবলাকা, গাঙচিল ও রাজহংস।
ড্রিমলাইনারে আসন সংখ্যা ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাস ২৪টি আর ২৪৭টি ইকোনমি ক্লাস। বিজনেস ক্লাসে ২৪টি আসন ১৮০ ডিগ্রি পর্যন্ত সম্পূর্ণ ফ্ল্যাটবেড হওয়ায় যাত্রীরা আরমদায়কভাবে বিশ্রাম নিতে পারবেন। ড্রিমলাইনারে ৪৩ হাজার ফিট উচ্চতায় যাত্রীরা ওয়াই-ফাই সুবিধা পাবেন।
বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও এএম মোসাদ্দিক আহমেদ বলেন, ‘নতুন এ উড়োজাহাজ যুক্ত হলে বিমানের ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সির সংখ্যা বাড়বে’।
তিনি বলেন, ‘ড্রিমলাইনার যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বিমান নতুন মাইলফলক স্পর্শ করেছে। দ্বিতীয় ড্রিমলাইনার যুক্ত হওয়ার পর লন্ডন, দাম্মাম ও ব্যাংকক রুটে এ উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। আগামী ১০ ডিসেম্বর থেকে ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ দিয়ে ঢাকা-লন্ডন রুটে সপ্তাহে ৬টি, ঢাকা-দাম্মাম রুটে সপ্তাহে ৪টি এবং ঢাকা-ব্যাংকক রুটে সপ্তাহে ৩টি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে।