হাওর বার্তা ডেস্কঃ বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরপ্রতীক তারামন বিবি আর নেই। শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কুড়িগ্রামে নিজ বাড়িতে ইন্তেকাল করেন তিনি।
বীরপ্রতীক তারামন বিবি দীর্ঘদিন থেকে ফুসফুস ও শ্বাস-প্রশ্বাস রোগের ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬২ বছর। তিনি স্বামী, এক ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, বীর প্রতীক তারামন বিবিকে আজ দুপুর ২টায় জানাজা নামাজ শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
এর আগে গত নভেম্বরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে, তাকা ঢাকা সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। অবশ্য কদিন পরেই তিনি ফিরে যান নিজ বাড়িতে।
তারামন বিবির জন্ম ১৯৫৭ সালে কুড়িগ্রামের চর রাজিবপুর উপজেলার শংকর মাধবপুর গ্রামে। মোছাম্মৎ তারামন বেগম যিনি তারামন বিবি নামে অধিক পরিচিত, বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে। বাবার নাম আবদুস সোহবান এবং মাম কুলসুম বিবি। তার স্বামীর নাম আবদুল মজিদ। তাদের এক ছেলে এক মেয়ে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১নং সেক্টরের হয়ে তারামন বিবি জীবন বাজি রেখে মুক্তিযুদ্ধ করেন। সম্মুখ যুদ্ধে পাকবাহিনীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করায় তার অবদান চির স্মরণীয়।
যুদ্ধ শেষে ১৯৭৩ সালে তৎকালীন সরকার মুক্তিযুদ্ধে তারামন বিবিকে তার সাহসিকতা ও বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ‘বীরপ্রতীক’ উপাধিতে ভূষিত করেন। কিন্তু ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তাকে খুঁজে বের করা সম্ভব হয়নি।
পরে ১৯৯৫ সালে ময়মনসিংহের একজন গবেষক প্রথম তাকে খুঁজে বের করেন। নারী সংগঠনগুলো তাকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। সেই সময় তাকে নিয়ে পত্রিকায় প্রচুর লেখালেখি হয়। অবশেষে ১৯৯৫ সালের ১৯ ডিসেম্বর তৎকালীন সরকার এক অনাড়ম্বর পরিবেশে আনুষ্ঠানিকভাবে তারামন বিবিকে বীরত্বের পুরস্কার প্রদান করা হয়।