ঢাকা ১১:২৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এবার মুক্তিযুদ্ধ অধিদপ্তর হচ্ছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১২:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৫
  • ৫২৮ বার

মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা-সংশ্লিষ্ট সব সংগঠন নিয়ন্ত্রণ এবং মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে এবার পৃথক অধিদপ্তর করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এরই মধ্যে ‘মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অধিদপ্তর আইন, ২০১৫’ নামে আইনের একটি খসড়াও চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি শিগগির বিল আকারে জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সর্বশেষ (৩১তম) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ‘মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অধিদপ্তর’ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা করা সম্ভব হলে উপজেলা পর্যায়েও অধিদপ্তরের অধীনে নিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে মুক্তিযোদ্ধারা সরাসরি উপকৃত হবেন। অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বিতরণ, উপজেলা পর্যায়ে কমপ্লেক্স নির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-সংক্রান্ত স্থাপনা সংরক্ষণসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আসবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, উপজেলা পর্যায়ে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনায় প্রায়ই অসুবিধার সম্মুুখীন হতে হয়। এসব বিবেচনায় নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোর স্বার্থে বর্তমান সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।খসড়া আইনে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা-সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের নিবন্ধীকরণ ও প্রয়োজনে বাতিল করা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্য রক্ষায় গৃহীত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন এবং নতুন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সমুন্নত রাখা ও অকার্যকর করার লক্ষ্যে গঠিত অঙ্গসংগঠনের নিয়ন্ত্রণ ওতত্ত্বাবধানে এই অধিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণসহ সার্বিক পুনর্বাসনে কাজ করবে এই অধিদপ্তর। প্রধানমন্ত্রী হবেন অধিদপ্তরের প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা আইন অনুসারে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে নয় সদস্যের জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (এটি বর্তমানে জামুকা নামে বিদ্যমান) গঠন করবেন। অধিদপ্তরের কর্মকাণ্ড পরিচালনায় প্রধান হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন সরকার নিযুক্ত অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন মহাপরিচালক। অধিদপ্তরের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে কাউন্সিল প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারের অনুমোদনক্রমে নিয়োগ দিতে পারবে। মহাপরিচালক বা কাউন্সিলের অনুরোধক্রমে প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বে নিযুক্ত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও সরকার অধিদপ্তরে প্রেষণে নিয়োগ দিতে পারবে। অধিদপ্তরের তহবিল, বাজেট ও হিসাবরক্ষণ-সংক্রান্ত বিষয়গুলো নতুন আইন অনুসারে পরিচালিত হবে।

খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা-সংশ্লিষ্ট সব সংগঠন নতুন আইন অনুসারে ৯০ দিনের মধ্যে নিবন্ধিত না হলে নিবন্ধক (কাউন্সিল) তার সব কার্যক্রম স্থগিত করতে পারবে। এ ছাড়া অধিদপ্তর মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়সহ জেলা, থানা ও গ্রাম পর্যায়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করবে এবং গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়নেও যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

এবার মুক্তিযুদ্ধ অধিদপ্তর হচ্ছে

আপডেট টাইম : ১১:১২:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১০ অক্টোবর ২০১৫

মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা-সংশ্লিষ্ট সব সংগঠন নিয়ন্ত্রণ এবং মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত করতে এবার পৃথক অধিদপ্তর করার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে এরই মধ্যে ‘মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অধিদপ্তর আইন, ২০১৫’ নামে আইনের একটি খসড়াও চূড়ান্ত করা হয়েছে। এটি শিগগির বিল আকারে জাতীয় সংসদে উপস্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সর্বশেষ (৩১তম) বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ‘মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক অধিদপ্তর’ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এটা করা সম্ভব হলে উপজেলা পর্যায়েও অধিদপ্তরের অধীনে নিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে মুক্তিযোদ্ধারা সরাসরি উপকৃত হবেন। অর্থাৎ মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা বিতরণ, উপজেলা পর্যায়ে কমপ্লেক্স নির্মাণ, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি-সংক্রান্ত স্থাপনা সংরক্ষণসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা আসবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, উপজেলা পর্যায়ে মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালনায় প্রায়ই অসুবিধার সম্মুুখীন হতে হয়। এসব বিবেচনায় নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোর স্বার্থে বর্তমান সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।খসড়া আইনে বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা-সংশ্লিষ্ট সব সংগঠনের নিবন্ধীকরণ ও প্রয়োজনে বাতিল করা, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস-ঐতিহ্য রক্ষায় গৃহীত প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন এবং নতুন প্রকল্প প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন, মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ সমুন্নত রাখা ও অকার্যকর করার লক্ষ্যে গঠিত অঙ্গসংগঠনের নিয়ন্ত্রণ ওতত্ত্বাবধানে এই অধিদপ্তরের কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার জন্য প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণসহ সার্বিক পুনর্বাসনে কাজ করবে এই অধিদপ্তর। প্রধানমন্ত্রী হবেন অধিদপ্তরের প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা আইন অনুসারে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীকে চেয়ারম্যান করে নয় সদস্যের জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (এটি বর্তমানে জামুকা নামে বিদ্যমান) গঠন করবেন। অধিদপ্তরের কর্মকাণ্ড পরিচালনায় প্রধান হিসেবে দায়িত্বে থাকবেন সরকার নিযুক্ত অতিরিক্ত সচিব পদমর্যাদার একজন মহাপরিচালক। অধিদপ্তরের দায়িত্ব সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে কাউন্সিল প্রয়োজনীয়সংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী সরকারের অনুমোদনক্রমে নিয়োগ দিতে পারবে। মহাপরিচালক বা কাউন্সিলের অনুরোধক্রমে প্রজাতন্ত্রের দায়িত্বে নিযুক্ত কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীকেও সরকার অধিদপ্তরে প্রেষণে নিয়োগ দিতে পারবে। অধিদপ্তরের তহবিল, বাজেট ও হিসাবরক্ষণ-সংক্রান্ত বিষয়গুলো নতুন আইন অনুসারে পরিচালিত হবে।

খসড়ায় আরও বলা হয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা-সংশ্লিষ্ট সব সংগঠন নতুন আইন অনুসারে ৯০ দিনের মধ্যে নিবন্ধিত না হলে নিবন্ধক (কাউন্সিল) তার সব কার্যক্রম স্থগিত করতে পারবে। এ ছাড়া অধিদপ্তর মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়সহ জেলা, থানা ও গ্রাম পর্যায়ে সামাজিক ও অর্থনৈতিক কর্মসূচি গ্রহণ করবে এবং গৃহীত কর্মসূচি বাস্তবায়নেও যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।