ঢাকা ১০:২৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্ট্রোক ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে গাজর

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:১০:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৮
  • ৩৪৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাজরের একটি সালাদের সব্জি হিসেবেই বেশি পরিচিত। এছাড়াও এটি রান্নায় ব্যবহার করলে খাদ্যের রঙ এবং স্বাদ উভয়ই বদলে যায়। আমাদের এই উপমহাদেশে গাজরের বহুবিধ ব্যাবহার রয়েছে।

এছাড়াও গাজরে আছে এমন কিছু খাদ্যগুণ যাক স্বাস্থের জন্য চমৎকার উপকারী। আপনি জনেন কি ? প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে আছে ক্যারোটিন ১০,৫২০ মাইক্রোগ্রাম, শর্করা ১২.৭ গ্রাম, আমিষ ১.২ গ্রাম, জলীয় অংশ ৮৫.০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭.০ মি. গ্রা., আয়রণ ২.২ মি. গ্রা., ভিটামিন বি১ ০০.০৪ মি. গ্রা., ভিটামিন বি২ ০.০৫ মি. গ্রা., চর্বি ০.২ গ্রাম, ভিটামিন সি ১৫ মি. গ্রা., আঁশ ১.২ গ্রাম, অন্যান্য খনিজ ০.৯ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৫৭ ক্যালরি।

দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়:

গাজরেরবিটা ক্যারোটিন লিভারে গিয়ে ভিটামিন এ তে বদলে যায়। পরে সেটি চোখের রেটিনায় গিয়ে চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, সেই সাথে রাতের বেলায় অন্ধকারেও চোখে ভাল দেখার জন্য দরকারি এমন এক ধরনের বেগুনি পিগমেন্টের সংখ্যা বাড়িয়ে দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গাজরে উপস্থিত ফ্যালকেরিনল এবং ফ্যালকেরিনডায়ল যা আমাদের শরীরে অ্যান্টিক্যান্সার উপাদানগুলোকে পূর্ণ করে। নিয়মিত গাজর খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলোন ক্যান্সার ও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।

বার্ধক্য কমিয়ে দেয়:

গাজরে বিদ্যমান বিটা ক্যারোটিন ত্বকের ক্ষতি পূরণ করতে সাহায্য করে। বিটা ক্যারোটিন খুব ভালো একটি অ্যান্টি এইজিং এর উপাদান যা মুখের বয়সজনিত দাগ ও রিঙ্কেল দূর করে। গাজর খেলে মুখে বয়সের ছাপ ধীরগতিতে আসে। গবেষকরা বলেন সপ্তাহে ৬টি গাজর চেহারার বয়সের ছাপ দূর করে।

স্বাস্থ্যকর ত্বক তৈরি করে

সুন্দর ত্বকের জন্যও গাজর খেতে পারেন। এটি আপনার ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করবে। এর ভিটামিন এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করবে।

সেই সাথে ভিটামিন এ ত্বকের অযাচিত ভাঁজ পড়া, কালো দাগ, ব্রন, ত্বকের রঙের অসামঞ্জস্যতা ইত্যাদি দূর করে আপনাকে সুন্দর হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে:

গাজর ভেষজ উপকরণ হিসেবে দেহের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। গাজরকে কেটে সেদ্ধ করে খেলে ও ভর্তা করে খেলে সংক্রামণ প্রতিরোধ হয়।

হৃদরোগ প্রতিরোধ করে :

হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখে এটি খুব ভাল কাজ করে। এর ক্যারোটিনয়েডগুলো হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখের ওষুধ হিসেবে কাজ করে।

ক্ষয় রোধ করে:

গাজর শুধু শরীরের জন্য ভাল তাই নয় এটি আমাদের জন্য অ্যান্টি এজিং উপাদান হিসেবেও কাজ করে। এতে যে বিটা ক্যারোটিন আছে তা আমাদের শরীরের ভেতরে গিয়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে আমাদের শরীরের ক্ষয়প্রাপ্ত কোষগুলোকে ঠিকঠাক করে।

দাঁতের সুরক্ষায় করে:

দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় গাজরের গুরুত্ব অনেক বেশি। গাজর খেলে দাঁত পরিষ্কার হয়। দাঁতে জমে থাকা প্লাক দূর হয়। ডাক্তাররা বলেন গাজর খাওয়ার সময় আমাদের মুখে ‘সিলভা’ নামক একটি যৌগের নিঃসরণ ঘটে।

সিলভা মুখে অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখে যা দাঁতের ক্ষয়ের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। প্রতিদিন একটি করে গাজর খেলে মাড়ি ও দাঁতের সমস্যা দূর করে।

স্ট্রোক প্রতিরোধ করে:

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা পরিচালিত সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে ছয়টির বেশি গাজর খান বা খাচ্ছেন তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি যারা এর থেকে কম পরিমানে কম বা একটি গাজর খাচ্ছেন তাদের তুলনায় অনেক কম হয়।

তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে হলে এখনি নিজের খাবারের তালিকায় যুক্ত করুন গাজর। সালাদ হিসেবেও খেতে পারেন বা তরকারিতেও দিতে পারেন।

যদি আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় গাজর যোগ করে আরো একটু ভাল ও সুস্থ থাকতে পারি তাহলে তা নয় কেন? তাই নিয়মিত গাজর খান সুস্থ থাকুন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

স্ট্রোক ও হৃদরোগ প্রতিরোধ করে গাজর

আপডেট টাইম : ১১:১০:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ অক্টোবর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গাজরের একটি সালাদের সব্জি হিসেবেই বেশি পরিচিত। এছাড়াও এটি রান্নায় ব্যবহার করলে খাদ্যের রঙ এবং স্বাদ উভয়ই বদলে যায়। আমাদের এই উপমহাদেশে গাজরের বহুবিধ ব্যাবহার রয়েছে।

এছাড়াও গাজরে আছে এমন কিছু খাদ্যগুণ যাক স্বাস্থের জন্য চমৎকার উপকারী। আপনি জনেন কি ? প্রতি ১০০ গ্রাম গাজরে আছে ক্যারোটিন ১০,৫২০ মাইক্রোগ্রাম, শর্করা ১২.৭ গ্রাম, আমিষ ১.২ গ্রাম, জলীয় অংশ ৮৫.০ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ২৭.০ মি. গ্রা., আয়রণ ২.২ মি. গ্রা., ভিটামিন বি১ ০০.০৪ মি. গ্রা., ভিটামিন বি২ ০.০৫ মি. গ্রা., চর্বি ০.২ গ্রাম, ভিটামিন সি ১৫ মি. গ্রা., আঁশ ১.২ গ্রাম, অন্যান্য খনিজ ০.৯ গ্রাম, খাদ্যশক্তি ৫৭ ক্যালরি।

দৃষ্টি শক্তি বাড়ায়:

গাজরেরবিটা ক্যারোটিন লিভারে গিয়ে ভিটামিন এ তে বদলে যায়। পরে সেটি চোখের রেটিনায় গিয়ে চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে, সেই সাথে রাতের বেলায় অন্ধকারেও চোখে ভাল দেখার জন্য দরকারি এমন এক ধরনের বেগুনি পিগমেন্টের সংখ্যা বাড়িয়ে দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে।

ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে

বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গাজরে উপস্থিত ফ্যালকেরিনল এবং ফ্যালকেরিনডায়ল যা আমাদের শরীরে অ্যান্টিক্যান্সার উপাদানগুলোকে পূর্ণ করে। নিয়মিত গাজর খেলে ব্রেস্ট ক্যান্সার, কোলোন ক্যান্সার ও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে।

বার্ধক্য কমিয়ে দেয়:

গাজরে বিদ্যমান বিটা ক্যারোটিন ত্বকের ক্ষতি পূরণ করতে সাহায্য করে। বিটা ক্যারোটিন খুব ভালো একটি অ্যান্টি এইজিং এর উপাদান যা মুখের বয়সজনিত দাগ ও রিঙ্কেল দূর করে। গাজর খেলে মুখে বয়সের ছাপ ধীরগতিতে আসে। গবেষকরা বলেন সপ্তাহে ৬টি গাজর চেহারার বয়সের ছাপ দূর করে।

স্বাস্থ্যকর ত্বক তৈরি করে

সুন্দর ত্বকের জন্যও গাজর খেতে পারেন। এটি আপনার ত্বককে ভেতর থেকে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করবে। এর ভিটামিন এ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আপনার ত্বকের রোদে পোড়া ভাব দূর করবে।

সেই সাথে ভিটামিন এ ত্বকের অযাচিত ভাঁজ পড়া, কালো দাগ, ব্রন, ত্বকের রঙের অসামঞ্জস্যতা ইত্যাদি দূর করে আপনাকে সুন্দর হয়ে উঠতে সাহায্য করবে।

সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে:

গাজর ভেষজ উপকরণ হিসেবে দেহের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। গাজরকে কেটে সেদ্ধ করে খেলে ও ভর্তা করে খেলে সংক্রামণ প্রতিরোধ হয়।

হৃদরোগ প্রতিরোধ করে :

হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখে এটি খুব ভাল কাজ করে। এর ক্যারোটিনয়েডগুলো হৃৎপিণ্ডের নানা অসুখের ওষুধ হিসেবে কাজ করে।

ক্ষয় রোধ করে:

গাজর শুধু শরীরের জন্য ভাল তাই নয় এটি আমাদের জন্য অ্যান্টি এজিং উপাদান হিসেবেও কাজ করে। এতে যে বিটা ক্যারোটিন আছে তা আমাদের শরীরের ভেতরে গিয়ে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে আমাদের শরীরের ক্ষয়প্রাপ্ত কোষগুলোকে ঠিকঠাক করে।

দাঁতের সুরক্ষায় করে:

দাঁতের স্বাস্থ্য রক্ষায় গাজরের গুরুত্ব অনেক বেশি। গাজর খেলে দাঁত পরিষ্কার হয়। দাঁতে জমে থাকা প্লাক দূর হয়। ডাক্তাররা বলেন গাজর খাওয়ার সময় আমাদের মুখে ‘সিলভা’ নামক একটি যৌগের নিঃসরণ ঘটে।

সিলভা মুখে অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখে যা দাঁতের ক্ষয়ের জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। প্রতিদিন একটি করে গাজর খেলে মাড়ি ও দাঁতের সমস্যা দূর করে।

স্ট্রোক প্রতিরোধ করে:

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় দ্বারা পরিচালিত সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, যারা সপ্তাহে ছয়টির বেশি গাজর খান বা খাচ্ছেন তাদের স্ট্রোকের ঝুঁকি যারা এর থেকে কম পরিমানে কম বা একটি গাজর খাচ্ছেন তাদের তুলনায় অনেক কম হয়।

তাই স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে হলে এখনি নিজের খাবারের তালিকায় যুক্ত করুন গাজর। সালাদ হিসেবেও খেতে পারেন বা তরকারিতেও দিতে পারেন।

যদি আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় গাজর যোগ করে আরো একটু ভাল ও সুস্থ থাকতে পারি তাহলে তা নয় কেন? তাই নিয়মিত গাজর খান সুস্থ থাকুন।