হাওর বার্তা ডেস্কঃ পৃথিবী গ্রহ নিয়ে ‘ভয়াবহ’ সাবধান বাণী দিয়েছেন জাতিসংঘের একদল বিজ্ঞানী। বিশ্বনেতাদের সতর্ক করে তারা বলেছেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে পৃথিবীর উত্তাপ এক ডিগ্রিও কমানো সম্ভব হবে কিনা তার ওপর এই গ্রহের বাঁচা-মরা নির্ভর করছে।
উষ্ণতা বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখার আহ্বান জানিয়ে বিজ্ঞানীরা বলেন, ‘উষ্ণায়ন সম্পর্কে এটাই শেষ সাবধান বাণী। এরপর আর চাইলেও তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের কোনো উপায় থাকবে না। পৃথিবী এখনই সম্পূর্ণ লাগামহীন হয়ে তাপমাত্রা প্রায় ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস বৃদ্ধির দিকে এগিয়ে চলেছে।’
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হলে, সমাজের সব ক্ষেত্রে দ্রুত, সুদূরপ্রসারী ও নজিরবিহীন কিছু পরিবর্তন আনতে হবে।
তিন বছর ধরে গবেষণার পর বিভিন্ন দেশের সরকারের সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ায় আরো এক সপ্তাহ দর কষাকষি করে আইপিসিসি। এরপরই বিশেষ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো বলে খবর দিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
সম্মেলনে প্রতিবেদনের ৩৩ পৃষ্ঠার একটি সারসংক্ষেপ পেশ করা হয়, বিভিন্ন দেশের সরকারের প্রতিনিধিদের জন্য। এতে জলবায়ু গবেষকদের গবেষণার ফলাফল এবং অর্থনীতি ও জীবনযাপনের মান নিয়ে চিন্তিত রাজনীতিকদের মতের পার্থক্য স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
এই সম্মেলনে পর্যবেক্ষক কাইসা কোসোনেন বলেন, বিজ্ঞানীরা বড় বড় হরফে ‘এখনই পদক্ষেপ নাও আহাম্মক’ লিখতে চাইলেও তাদের সেটা করতে হবে তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে এবং তারা সেটিই করেছেন।
বিবিসি জানায়, বিজ্ঞানীরা এসব তথ্য-উপাত্ত ও প্রকৃত উদাহরণ ব্যবহার করে বিপজ্জনক জ্বরে আক্রান্ত এক পৃথিবীর চিত্র তুলে ধরেছেন। আমাদের ধারণা ছিল, এই শতাব্দীতে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে আটকে রাখা গেলে জলবায়ুর পরিবর্তন সামাল দেয়া যাবে।
আমরা চাইলে এই সীমার মধ্যে তাপমাত্রা ধরে রাখতে পারি। কিন্তু, তা করতে সরকার, এমনকি সাধারণ মানুষেরও আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন দরকার হবে। সেই সঙ্গে খরচ হবে বিপুল পরিমাণ অর্থ। আগামী দুই দশকে এতে প্রয়োজন হবে বিশ্বের মোট জিডিপির ২.৫ শতাংশ।
এরপরও আমাদের এমন সব যন্ত্র, গাছ ও কারখানা দরকার হবে, যা দিয়ে বাতাসের কার্বন ধরে মাটির নিচে পুঁতে রাখা যাবে, চিরকালের জন্য!