হাওর বার্তা ডেস্কঃ আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, বাতাসে কাশফুলের ঘ্রাণ শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে এলেও, প্রকৃতিতে তার ছোঁয়া নেই বিন্দুমাত্র। গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বাতাসের অতিরিক্ত আর্দ্রতা। আশ্বিনেও বৈশাখের ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসী। তবে এই গরম ঠিক কবে নাগাদ কমবে, তা বলতে পারছে না খোদ আবহাওয়া অফিস।
এদিকে গতকাল বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৩৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায় ৩৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বনিম্ন শ্রীমঙ্গলে ২২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর ঢাকায় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৮৫ শতাংশ, যা স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি।
কয়েকদিনের গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। অফিস-বাড়িতে ফ্যান চললেও তা শরীরের ঘাম শুকাতে ব্যর্থ। দিন শেষে সূর্যের বিদায়ের পর রাতেও কমছে না গরমের মাত্রা। ছোট শিশু থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধ সবারই প্রাণ ওষ্ঠাগত। আর তাই সবার মুখেই এখন ঘুরেফিরে এক প্রশ্ন—‘কবে মুক্তি মিলবে এই গরম থেকে?’
নাতিশীতোষ্ণ ঋতুর শরতে এই তীব্র গরমের কারণ কী? এমন প্রশ্নের জবাবে আবহাওয়াবিদ নিঝুম রোকেয়া বলেন, ‘এ বছর বর্ষাকালে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কম হওয়ায় গরম পড়ছে বেশি। এ ছাড়া বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণও তুলনামূলক বেশি।’
এই গুমোট থাকার কারণ জানতে চাইলে আবহাওয়াবিদ আবদুল মান্নান বলেন, চট্টগ্রাম অঞ্চল ছাড়া ২৮ সেপ্টেম্বরের পর দেশে বৃষ্টি নেই বললেই চলে। আকাশও মেঘমুক্ত। সূর্য কিরণ দিচ্ছে। কিন্তু বর্ষাকাল বিদায় নেয়নি, বর্ষায় বৃষ্টির পানি দেশের খাল, বিল, ডোবা, নদী, নালায় জমে আছে। সূর্য তেজি কিরণ দেওয়ায় এই পানি থেকে জলীয় বাষ্প বের হচ্ছে। এই জলীয় বাষ্প বাতাসের সঙ্গে থাকায় শরীর থেকে ঘাম ঝরছে। ঘাম ঝরায় মানুষের মধ্যে অস্বস্তি বোধ হচ্ছে। আবার সূর্যতাপে তাপমাত্রাও ৩৪ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠে যাচ্ছে। কিন্তু দিনের ব্যাপ্তি কমতে থাকায় রাতের বেলা আবার তাপমাত্রা কমে যাচ্ছে।
আবদুল মান্নান বলেন, ‘মৌসুমির উৎপত্তি বঙ্গোপসাগরে। এটা বাংলাদেশ হয়ে পাকিস্তানে চলে যায়। বায়ুর বিস্তার পাকিস্তান ও এর আশপাশের অঞ্চলে। সেখান থেকে এটি আমাদের দেশে আসে। পরে আবার বঙ্গোপসাগরে গিয়েই শেষ হয়। মৌসুমি বায়ুর বিদায় নেওয়ার পালা শুরু। এখন এটি ভারতের উত্তর প্রদেশ পর্যন্ত চলে এসেছে। আর কয়েক দিন পর বাংলাদেশ থেকে বিদায় নেবে। তখন তাপমাত্রা কমে আসবে। তবে আপাতত দু-এক দিন এমন অবস্থাই থাকবে। তবে গরম এর চেয়ে আর বাড়বে না।’
আবহাওয়া অধিদফতরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অক্টোবর মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টি হবে। বঙ্গোপসাগরে ১-২টি নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে। এর একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। অক্টোবরের প্রথমার্ধে মৌসুমি বিদায় নিতে পারে।