ঢাকা ০২:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ছে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৭:২৮:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • ৪১৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত এক সপ্তাহে ঝালকাঠির সুগন্ধ্যা-বিষখালীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। জালে ধরা পড়া ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশের ঝিলিক দেখে জেলেদের চোখে-মুখে ফুটে উঠছে আনন্দের হাসি।

ঝালকাঠি জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, বরিশালের কীর্তন খোলার শেষ সীমা নলছিটির দপদপিয়া থেকে শুরু সুগন্ধা নদীর পথচলা। এরপর ঝালকাঠির গাবখান মোহনা থেকে শুরু বিষখালী নদীর। ঝালকাঠির ১৭ কিলোমিটার প্রবহমান সুগন্ধা আর বিষখালীর ৩০ কিলোমিটার মিঠা পানিতে প্রতি বছর প্রায় ৮০০ টন সুস্বাদু ইলিশ ধরা পড়ে। প্রায় সারা বছরই এই দুই নদীতে জেলেরা রুপালি ইলিশ শিকার করে। তবে আগস্ট থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ে সুগন্ধ্যা বিষখালী নদীতে।

সুগন্ধা-বিষখালীর ইলিশ স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়, তাই এখানকার ইলিশ দেশের বিখ্যাত বলে দাবি করেন জেলেরা। ভরা মৌসুমে নদীতে জাল ফেললেই জেলেরা ছোট-বড় ইলিশ পেয়ে থাকেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নদীর বিভিন্ন স্থানে জাল ফেলার উৎসব চলে মৌসুম জুড়ে। সারা বছর ইলিশ ধরা পড়লেও আগস্ট মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ইলিশের ভরা মৌসুম। তবে ডিসেম্বরেও প্রচুর ইলিশ জালে আটকা পড়ে।

মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সুগন্ধা-বিষখালীর ইলিশ পাইকারদের মাধ্যমে যাচ্ছে দেশের বিভিন্নস্থানে। দেশ ছাড়িয়ে ভারতেও রফতানি হয় ঝালকাঠির সুস্বাদু রুপালি ইলিশ।

জেলেরা মাছ শিকার করে বাড়ি ফেরার পথে পথেই বিক্রি হয়ে যায় অর্ধেকেরও বেশি ইলিশ। বাকি ইলিশগুলো শহর ও গ্রামের হাট-বাজারগুলোতে বিক্রি করা হয়। ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। আর একটু বড় ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দাম দেড় থেকে দুই হাজার টাকা।

ঝালকাঠি শহরের বড় বাজার, চাঁদকাঠি চৌমাথা বাজার, নলছিটি লঞ্চঘাট বাজার, পুরাতন বাজার, কুমারখালী বাজার, রাজাপুরের বড়ইয়া বাজার, বাদুরতলা বাজার ও মীরের হাটে বছরের সব সময়ই পাওয়া যায় ইলিশের দেখা। মৌসুমের সময় দাম কম থাকে এসব বাজারে। বাকি সময় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা কেজি দরেও বিক্রি হয় ইলিশ।

নলছিটি জেলে পাড়ার বাসিন্দা প্রবীন জেলে জুধিষ্টি দাস বলেন, আমাদের নদীতে সারা বছরই ইলিশ পাওয়া যায়। সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময়টুকু বাদ দিয়ে আমরা দিনরাত নদীতে জাল ফেলে ইলিশ ধরি। মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ে জালে। তাজা ইলিশ নদীর তীরে বসেই অনেকে কিনে নিয়ে যান। প্রতি নৌকায় কমপক্ষে ১০ কেজি ইলিশ পাওয়া যায়। বরিশাল থেকে মাছের আড়তদাররা এসে এখান থেকে ইলিশ কিনে নেয়। সেই ইলিশ পাঠানো হয় দেশের বিভিন্নস্থানে। অনেক সময় ভারতেও পাঠানো হয় সুগন্ধার সুস্বাদু ইলিশ।

ঝালকাঠি জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা বলেন, সরকার ইলিশের প্রজনন মৌসুম হিসেব করে অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে টানা ২২ দিন নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশ ধরা পড়ছে

আপডেট টাইম : ০৭:২৮:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ গত এক সপ্তাহে ঝালকাঠির সুগন্ধ্যা-বিষখালীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। জালে ধরা পড়া ঝাঁকে ঝাঁকে রুপালি ইলিশের ঝিলিক দেখে জেলেদের চোখে-মুখে ফুটে উঠছে আনন্দের হাসি।

ঝালকাঠি জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, বরিশালের কীর্তন খোলার শেষ সীমা নলছিটির দপদপিয়া থেকে শুরু সুগন্ধা নদীর পথচলা। এরপর ঝালকাঠির গাবখান মোহনা থেকে শুরু বিষখালী নদীর। ঝালকাঠির ১৭ কিলোমিটার প্রবহমান সুগন্ধা আর বিষখালীর ৩০ কিলোমিটার মিঠা পানিতে প্রতি বছর প্রায় ৮০০ টন সুস্বাদু ইলিশ ধরা পড়ে। প্রায় সারা বছরই এই দুই নদীতে জেলেরা রুপালি ইলিশ শিকার করে। তবে আগস্ট থেকে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ে সুগন্ধ্যা বিষখালী নদীতে।

সুগন্ধা-বিষখালীর ইলিশ স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়, তাই এখানকার ইলিশ দেশের বিখ্যাত বলে দাবি করেন জেলেরা। ভরা মৌসুমে নদীতে জাল ফেললেই জেলেরা ছোট-বড় ইলিশ পেয়ে থাকেন। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নদীর বিভিন্ন স্থানে জাল ফেলার উৎসব চলে মৌসুম জুড়ে। সারা বছর ইলিশ ধরা পড়লেও আগস্ট মাস থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত ইলিশের ভরা মৌসুম। তবে ডিসেম্বরেও প্রচুর ইলিশ জালে আটকা পড়ে।

মৎস্য ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, সুগন্ধা-বিষখালীর ইলিশ পাইকারদের মাধ্যমে যাচ্ছে দেশের বিভিন্নস্থানে। দেশ ছাড়িয়ে ভারতেও রফতানি হয় ঝালকাঠির সুস্বাদু রুপালি ইলিশ।

জেলেরা মাছ শিকার করে বাড়ি ফেরার পথে পথেই বিক্রি হয়ে যায় অর্ধেকেরও বেশি ইলিশ। বাকি ইলিশগুলো শহর ও গ্রামের হাট-বাজারগুলোতে বিক্রি করা হয়। ছোট ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। আর একটু বড় ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ১২০০ টাকা কেজি দরে। এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশের দাম দেড় থেকে দুই হাজার টাকা।

ঝালকাঠি শহরের বড় বাজার, চাঁদকাঠি চৌমাথা বাজার, নলছিটি লঞ্চঘাট বাজার, পুরাতন বাজার, কুমারখালী বাজার, রাজাপুরের বড়ইয়া বাজার, বাদুরতলা বাজার ও মীরের হাটে বছরের সব সময়ই পাওয়া যায় ইলিশের দেখা। মৌসুমের সময় দাম কম থাকে এসব বাজারে। বাকি সময় দেড় হাজার থেকে দুই হাজার টাকা কেজি দরেও বিক্রি হয় ইলিশ।

নলছিটি জেলে পাড়ার বাসিন্দা প্রবীন জেলে জুধিষ্টি দাস বলেন, আমাদের নদীতে সারা বছরই ইলিশ পাওয়া যায়। সরকারি নিষেধাজ্ঞার সময়টুকু বাদ দিয়ে আমরা দিনরাত নদীতে জাল ফেলে ইলিশ ধরি। মৌসুমে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়ে জালে। তাজা ইলিশ নদীর তীরে বসেই অনেকে কিনে নিয়ে যান। প্রতি নৌকায় কমপক্ষে ১০ কেজি ইলিশ পাওয়া যায়। বরিশাল থেকে মাছের আড়তদাররা এসে এখান থেকে ইলিশ কিনে নেয়। সেই ইলিশ পাঠানো হয় দেশের বিভিন্নস্থানে। অনেক সময় ভারতেও পাঠানো হয় সুগন্ধার সুস্বাদু ইলিশ।

ঝালকাঠি জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বাবুল কৃষ্ণ ওঝা বলেন, সরকার ইলিশের প্রজনন মৌসুম হিসেব করে অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসে টানা ২২ দিন নদীতে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।