হাওর বার্তা ডেস্কঃ এটুআইয়ের আয়োজনে কক্সবাজারের হোয়াইট অর্কিড হোটেলে ২২ সেপ্টেম্বর জাতীয় অ্যাপ্রেনটিসশিপ সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের প্রথম অধিবেশনে ‘দক্ষতা বাতায়ন (শরষষং.মড়া.নফ)’-এর উদ্বোধন করা হয়। সম্মেলনে আইসিটি বিভাগ, ইউএনডিপি এবং ইউএসএআইডি’র সহায়তায় এটুআইয়ের স্কিলস পোর্টাল দক্ষতা বাতায়ন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিদর্শক মো. সামছুজ্জামান ভূঁইয়া, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মো. সেলিম রেজা, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের (বিটাক) মহাপরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান, সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালক (কার্যক্রম) আবু মোহাম্মদ ইউসুফ (অতিরিক্ত সচিব), কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পিআইইউ) মো. অহিদুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (ঝউএ) অর্জনে এটুআইয়ের বিভিন্ন সেক্টরে দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম উল্লেখযোগ্য। ‘স্কিলস পোর্টাল’ দক্ষতা বাতায়ন (শরষষং.মড়া.নফ) হচ্ছে একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে এটুআই প্রোগ্রামের বিভিন্ন দক্ষতা উন্নয়নমূলক উদ্যোগ নিয়মিত মনিটরিং ও মেন্টরিং, শিল্প প্রতিষ্ঠানের দক্ষ জনশক্তির চাহিদা সংগ্রহ এবং দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন শিল্প-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করা যায়। এ পোর্টালের ৩টি স্টেকহোল্ডার রয়েছে শিল্প প্রতিষ্ঠান, দক্ষতা উন্নয়নাকারী প্রতিষ্ঠান এবং বেকার নারী-পুরুষ। শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো এ পোর্টালের মাধ্যমে তাদের দক্ষতার চাহিদার কথা জানায়, দক্ষতা উন্নয়কারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রশিক্ষণের জন্য নিবন্ধন করে এবং বেকার নারী-পুরুষ পোর্টালের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা উন্নয়নের সব তথ্য পান। স্কিলস পোর্টালে অ্যাপ্রেনটিসের নিয়োগ প্রক্রিয়া, প্রচলিত কারিগরি ট্রেডগুলো ও অ্যাপ্রেনটিসদের নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা তালিকাভুক্ত আছে।
পাশাপাশি অ্যাপ্রেনটিস নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম এবং তাদের কর্মসংস্থানের পদসংখ্যা, যোগ্যতা ও দক্ষতা উন্নয়ন লগ বই, বিভিন্ন কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ চাহিদা, প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত তথ্য, প্রশিক্ষণের আবেদন ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ শেষে কর্মসংস্থানের পদ্ধতি এ পোর্টালে উল্লিখিত আছে। এ পোর্টালের মাধ্যমে এরই মধ্যে ৩২ হাজার বেকার নারী-পুরুষকে সম্পৃক্ত করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ইউনিয়ন পর্যায় থেকে শুরু করে দেশে ডিজিটাল রূপান্তরের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমি এটুআইয়ের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। বাংলাদেশ ক্রমেই কৃষিপ্রধান দেশ থেকে শিল্পপ্রধান দেশের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এর ফলে দক্ষতার চাহিদায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন যে দক্ষতার চাহিদা তৈরি হচ্ছে তা পূরণে আগে বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাব ছিল। স্কিলস পোর্টালের মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন প্রোগ্রামের সব কার্যক্রম একই অনলাইন প্ল্যাটফর্মের আওতায় চলে আসায় সমন্বয়হীনতা দূর হয়েছে। আমি আশা করি, স্কিলস পোর্টালকে আরও উন্নত ও সুসংহত করতে দক্ষতা উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত সব শিল্প প্রতিষ্ঠান ও সহযোগী সংস্থা তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।’
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় অধিবেশনে এটুআইয়ের প্রকল্প পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে ‘অ্যাপ্রেনটিসশিপ প্রোগ্রামের সম্প্রসারণে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার ভূমিকা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির, ইউএনডিপি ডেমোক্র্যাটিক গভর্ন্যান্সের পোর্টফোলিও ম্যানেজার (ওআইসি) মিস মাহমুদা আফরোজ, অক্সফামের প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মো. বদি আখতার, গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সিনিয়র ডেভেলপমেন্ট এডভাইজর রিফুল জান্নাত, সুদক্ষের ডিরেক্টর স্কিলস অ্যান্ড এমপ্লয়মেন্ট সুরেশ মাহতো এবং আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বি-সেপ প্রকল্পের প্রোগ্রাম অফিসার তানজেল আহসান প্যানেলিস্ট হিসেবে আলোচনা করেন। এছাড়া সম্মেলনে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড, সমাজসেবা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।