ঢাকা ০৪:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হালুয়াঘাটে একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে স্কুল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:২৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • ৪৪৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের ৮৬নং বটগাছিয়াকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮৭ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান থেকে শুরু করে আনুষ্ঠানিক সকল দায়-দায়িত্ব পালন করছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিল আফরোজ। একই সঙ্গে ঘুরে ঘুরে সব ক্লাসে শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনতেই বেশিরভাগ সময় চলে যায় প্রধান শিক্ষকের। ৩ মাসের অধিক ধরে এ অবস্থা চলছে বিদ্যালয়টিতে।

শিক্ষক সংকটের ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষা ও মেধা গ্রহণ থেকে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও সঠিক পরিদর্শন না থাকার ফলে বিদ্যালয়টির এমন অবস্থা বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও অভিভাবকগণ। ২২ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় স্কুলের এ করুণ চিত্র।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পাঁচটি পদ থাকলেও চলছে একজন দিয়ে। অথচ বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাজিরা বই অনুসারে প্রতিদিনের গড় উপস্থিতি প্রায় ৮৭%। বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হওয়ার পর থেকে কর্মরত শিক্ষকগণ বদলি সুবিধা নেওয়ায় বর্তমানে শিক্ষক সংকট।

বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, অনেকটা পায়ে হেঁটে স্কুলে আসতে হয়। নিয়মিত ক্লাশ না হওয়ায় স্কুলে কোচিং করি আর আমরা বাড়িত গিয়া নিজে নিজে পড়ি। যদি অন্য স্যারের একটু সহযোগিতা পাইতাম তাহলে আর ভালো হইত।

বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা রজব আলী জানান, এই গ্রামে একটাই স্কুল। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষক নাই। এখনও অনেক শিক্ষার্থী পাঠ্য বইয়ের অধ্যায় শেষ করতে পারেনি। বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন বছর স্কুলে ভর্তি হয়েছে কিন্তু পুরোপুরিভাবে বাংলা বর্ণমালাগুলোও শিখতে পারেনি। ক’দিন পরেই শুরু হবে বার্ষিক পরীক্ষা।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিল আফরোজ বলেন, আমি আর একলা কী করব। তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস নিতে। শিক্ষক সংকটের বিষয়টি বার বার উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও কোন কাজে আসছে না।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, শিক্ষক সংকটের কথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক পদায়ন করা হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ ফারুক বলেন, তিনি এ বিষয়ে অবগত আছেন। বর্তমানে নতুন করে একজন কে স্কুলে পদায়ন দেওয়া হয়েছে। তবে আগামী কিছুদিনের মধ্যে শিক্ষক দিয়ে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

হালুয়াঘাটে একজন শিক্ষক দিয়ে চলছে স্কুল

আপডেট টাইম : ০২:২৯:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের ৮৬নং বটগাছিয়াকান্দা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৮৭ জন শিক্ষার্থীর পাঠদান থেকে শুরু করে আনুষ্ঠানিক সকল দায়-দায়িত্ব পালন করছেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিল আফরোজ। একই সঙ্গে ঘুরে ঘুরে সব ক্লাসে শিক্ষার্থীদের শৃঙ্খলার মধ্যে আনতেই বেশিরভাগ সময় চলে যায় প্রধান শিক্ষকের। ৩ মাসের অধিক ধরে এ অবস্থা চলছে বিদ্যালয়টিতে।

শিক্ষক সংকটের ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে মানসম্মত শিক্ষা ও মেধা গ্রহণ থেকে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও সঠিক পরিদর্শন না থাকার ফলে বিদ্যালয়টির এমন অবস্থা বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও অভিভাবকগণ। ২২ সেপ্টেম্বর সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় স্কুলের এ করুণ চিত্র।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পাঁচটি পদ থাকলেও চলছে একজন দিয়ে। অথচ বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের হাজিরা বই অনুসারে প্রতিদিনের গড় উপস্থিতি প্রায় ৮৭%। বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ হওয়ার পর থেকে কর্মরত শিক্ষকগণ বদলি সুবিধা নেওয়ায় বর্তমানে শিক্ষক সংকট।

বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থী জানায়, অনেকটা পায়ে হেঁটে স্কুলে আসতে হয়। নিয়মিত ক্লাশ না হওয়ায় স্কুলে কোচিং করি আর আমরা বাড়িত গিয়া নিজে নিজে পড়ি। যদি অন্য স্যারের একটু সহযোগিতা পাইতাম তাহলে আর ভালো হইত।

বিদ্যালয় সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা রজব আলী জানান, এই গ্রামে একটাই স্কুল। কিন্তু প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষক নাই। এখনও অনেক শিক্ষার্থী পাঠ্য বইয়ের অধ্যায় শেষ করতে পারেনি। বিদ্যালয়ের শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন বছর স্কুলে ভর্তি হয়েছে কিন্তু পুরোপুরিভাবে বাংলা বর্ণমালাগুলোও শিখতে পারেনি। ক’দিন পরেই শুরু হবে বার্ষিক পরীক্ষা।

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিল আফরোজ বলেন, আমি আর একলা কী করব। তারপরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি শিক্ষার্থীদের নিয়মিত ক্লাস নিতে। শিক্ষক সংকটের বিষয়টি বার বার উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করলেও কোন কাজে আসছে না।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান, শিক্ষক সংকটের কথা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে একাধিকবার লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু শিক্ষক পদায়ন করা হয়নি। এভাবে চলতে থাকলে বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসাইন মোহাম্মদ ফারুক বলেন, তিনি এ বিষয়ে অবগত আছেন। বর্তমানে নতুন করে একজন কে স্কুলে পদায়ন দেওয়া হয়েছে। তবে আগামী কিছুদিনের মধ্যে শিক্ষক দিয়ে ওই বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট সমাধানের চেষ্টা করা হবে।