হাওর বার্তা ডেস্কঃ সাফা-মারওয়া, আরাফাতের দিন সূর্য হেলে পড়া থেকে অস্তমিত হওয়া পর্যন্ত এবং মুজদালিফা মাশআরে হারামে বেশি বেশি দোয়া করতেন। কংকর নিক্ষেপের পর কেবলামুখী হয়ে লম্বা দোয়া করতেন।
হজ যেহেতু অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি ইবাদত, তাই যথার্থভাবে পালন করতে প্রত্যেককে এর বিধান সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ জ্ঞান রাখতে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘আমার থেকে তোমাদের হজের বিধানগুলো শিখে নাও।’ (মুসলিম)। তাই হজে নবীজি (সা.) কী আমল করতেন, কী দোয়া করতেন, হজের দিনগুলো কীভাবে পালন করেছেন, তা আমাদের জানা উচিত।
হজের সময় তিনি মহান স্রষ্টা আল্লাহর প্রতি অত্যন্ত একনিষ্ঠ ও মনোযোগী ছিলেন। বিনয় ও একাগ্রতার পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছেন। ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ তাঁর পবিত্র জবান থেকে নিঃসৃত হতো। তিনি এ দোয়া করতেন, ‘হে আল্লাহ! এমন হজ কবুল করুন যাতে কোনো রিয়া, লৌকিকতা নেই।’ (ইবনে মাজাহ)। এভাবে তিনি সাফা-মারওয়াতে এ দোয়া করতেন, ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু, ওয়াহদাহু লা শারিকালাহু, লাহুল মুলকু ওয়া লাহুল হামদু, ইউহয়ি ওয়া য়ুমিতু ওয়াহুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু, আনজাজা ওয়াদাহু, ওয়া নাসারা আবদাহু ও হাজামাল আহজাবা ওয়াহদাহু।’
অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। তিনি এক, তার কেনো অংশীদার নেই। কর্তৃত্ব তারই। সব প্রশংসা তারই। তিনিই জীবন দেন, তিনিই মৃত্যু দেন। তিনি সব কিছুর ওপর ক্ষমতাবান। আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নাই, তিনি এক। তিনি স্বীয় অঙ্গীকার রক্ষা করেছেন। তার বান্দাকে সাহায্য করেছেন। তিনি একাই সব শত্রুবাহিনীকে পরাজিত করেছেন। (আবু দাউদ : ১৯০৫)।
এছাড়াও মানাসিকে হজের সব স্থানে বেশি বেশি দোয়া করতেন। তাওয়াফের সময় ‘রাব্বানা আতিনা ফিদ দুনিয়া হাসানাতাও ওয়া ফিল আখিরাতে হাসানাতাও ওয়াকিনা আজাবান নার’ (সূরা বাকারা : ২০১) পড়তেন। এছাড়াও সাফা-মারওয়া, আরাফাতের দিন সূর্য হেলে পড়া থেকে অস্তমিত হওয়া পর্যন্ত এবং মুজদালিফা মাশআরে হারামে বেশি বেশি দোয়া করতেন। কংকর নিক্ষেপের পর কেবলামুখী হয়ে লম্বা দোয়া করতেন। হজের প্রত্যেকটি আমল এমনকি মুস্তাহাবও যেন না ছুটে যায়, সে জন্য অত্যন্ত মনোযোগী থাকতেন।
হজের শায়ায়েরগুলোর প্রতি তিনি অত্যন্ত সম্মান করতেন। ইহরাম ও মক্কায় প্রবেশের জন্য গোসল করে প্রস্তুতি নিতেন। সর্বদা খুশুখুজু দেখাতেন। আল্লাহর সামনে বিনয় ও একাগ্রতার জীবন্ত নমুনা ছিলেন। আরাফার ময়দানে বিদায় হজের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ দেন। এতে মুশরিকদের প্রতিটি কর্মের বিরুদ্ধাচরণ করেন। হজে তিনি উম্মতের প্রতি কল্যাণকামী ও অতি দয়ালু ছিলেন।
তাদের আদর্শ শিক্ষক হিসেবে হজের মানাসিক মৌখিক ও নিজে আমল করে শিক্ষা দিয়েছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের উৎসাহ প্রদান করেছেন। সম্মানিত উম্মাহাতুল মোমিনিন তাঁর সঙ্গে হজের সফরে ছিলেন। তাদের প্রতি তিনি অত্যন্ত সদাচারী, অমায়িক ও কোমল ছিলেন। কখনও দুর্ব্যবহার বা কথাবার্তায় রূঢ়তা দেখাননি।