হাওর বার্তা ডেস্কঃ জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ মাঝ পর্যায়ে এসে হঠাৎ করেই কি কারণে উন্নতমানের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) বা স্মার্টকার্ড উৎপাদন বন্ধ রেখেছে, তা জানেন না নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ।
সচিব বলেন, কি কারণে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে তা আমি জানি না। এটি উৎপাদন করছে আমাদের জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগ। এই বিভাগের একজন মহাপরিচালক আছেন। তিনিই বলতে পারবেন কি কারণে বন্ধ রয়েছে।
এনআইডি মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলামকে এ বিষয়ে বেশ কয়েকবার ফোন করে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। আর এনআইডি বিভাগের পরিচালক (অপারেশন্স) আব্দুল বাতেনকে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
ব্রিগেডিয়ার সাইদুল ইসলাম এর আগে গণমাধ্যমে বলেছিলেন, ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই ৯ কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেওয়া হবে। আর সব কার্ড উৎপাদন শেষ করা হবে ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে। কিন্তু সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না বলেই মনে করছেন ইসি কর্মকর্তারা।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভাণ্ডারে স্থাপিত নয়টি মেশিনে স্মার্টকার্ড উৎপাদন করা হচ্ছে। অর্থাৎ, ফাঁকা কার্ডে নাগরিকের তথ্য ভরে (পারসোনালাইজেশন) বিতরণের উপযোগী করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ৪ কোটি স্মার্টকার্ড পারসোনালাইজেশন করা হয়েছে। অবশিষ্ট রয়েছে ৫ কোটির মতো কার্ড।
ইসির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানান, পারসোনালাইজেশন সেন্টারের নয়টি মেশিনের মধ্যে চারটি মেশিন নষ্ট রয়েছে। আর পাঁচটি সম্পূর্ণ মেশিন উৎপাদন ধারাবাহিক রাখার অবস্থায় আছে। কিন্তু সেই পাঁচটি মেশিনেও উৎপাদন করা হচ্ছে না। প্রতিমাসে একটি মেশিনে ৫ লাখ স্মার্টকার্ড বিতরণের জন্য প্রস্তুত করা সম্ভব।
কর্মকর্তারা জানান, ২০ দিন ধরে কার্ড উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে ২০১৯ সালের মধ্যে নয় কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড পৌঁছবে না।
পাঁচটি মেশিন কেন বন্ধ রাখা হয়েছে, এ প্রশ্নের উত্তরেও ইসি সচিব বলেন, এটার সঠিক কারণ আমি জানি না। আপনি বরং এনআইডি ডিজিকে জিজ্ঞেস করুন। তিনি সঠিক তথ্য দিতে পারবেন।
২০১১ সালে দেশের নাগরিকদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় স্মার্টকার্ড তথা আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহেন্সিং একসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্পটি হাতে নেয়।
এরপর ফ্রান্সের একটি কোম্পানিকে দিয়ে স্মার্টকার্ড তৈরি করে নেয় ইসি। সেই ফাঁকা কার্ডেই নাগরিকের তথ্য ভরে বিতরণ করা হয়। আইডিইএ প্রকল্পটি যখন হাতে নেওয়া হয়, তখন দেশের ভোটার ছিল নয় কোটির মতো। তাই সেই নয় কোটিকেই স্মার্টকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
বর্তমানে দেশে ভোটার রয়েছে সাড়ে দশ কোটির মতো। এই দেড় কোটি নাগরিকের স্মার্টকার্ড দেওয়ার জন্য সরকারি তহবিল থেকে আরেকটি প্রকল্প নিয়ে থেকে অর্থ সংগ্রহ করা হচ্ছে।