ঢাকা ১২:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুমিল্লার হত্যা মামলায় জামিন মেলেনি খালেদা জিয়ার

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:০৩:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুলাই ২০১৮
  • ৩০৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুমিল্লার হত্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত রাখলো অাপিল বিভাগও। এর অাগে রাষ্ট্রপক্ষের অাবেদনে হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করেছিল চেম্বার অাদালত। আজ সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন অাপিল বেঞ্চ ওই জামিন স্থগিত করে ৪ সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টকে রুল নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে গত ২৪ জুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ অাদেশের জন্য অাজকের এ দিন ধার্য করেন। ওইদিন শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম কুমিল্লায় পেট্রোল বোমায় বাস পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মামলার অভিযোগপত্র, ঘটনার কিছু স্থিরচিত্র এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন। দলের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে খালেদা জিয়ার কথোপকথনও মাহবুবে আলম শুনানিতে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, হরতাল ও অবরোধ এক বিষয় না। হরতাল ও অবরোধের মাঝে পার্থক্য হচ্ছে, হরতালে সীমিতভাবে গাড়ি চলে, দোকানপাটও খোলা থাকে। আর অবরোধে গাড়ি চলতে দেওয়া হয় না। সবকিছু অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। তখন লাগাতার অবরোধ চলছিল। তাছাড়া অবরোধ সফল করার ক্ষেত্রে খালেদা জিয়াই তখন প্রধান ব্যক্তি। টেলি কথপোকথনেই প্রমাণ হয়, খালেদা জিয়ার নির্দেশেই ওই ঘটনা ঘটেছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এতবড় নৃসংশ ঘটনায় করা মামলার প্রধান ব্যক্তি হওয়ার পরও যদি তাকে জামিন দেওয়া হয়, তবে এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারগুলোর কছে কী বার্তা যাবে? তাই হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বাতিল করা হোক।

অপরদিকে খন্দকার মাহবুব হোসেন শুনানিতে বলেন, খালেদা জিয়ার সম্মানহানী করতেই পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। বিরোধীদলের ওপর দোষ চাপিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে সরকারের এজেন্টরা পেট্রোল বোমা মেরে নাশকতা করেছে। তার দায়-দায়িত্ব বেগম খালেদা জিয়ার না। এ মামলার এফআইআরএ ৫৬ জনের নাম ছিল, সেখানে খালেদা জিয়ার নাম ছিল না। পরে দ্বিতীয়বার অভিযোগপত্রে তার নাম ঢুকানো হয়েছে।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অভিযোগপত্র, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন, ছবি দেখালেন। আমরা কি মামলা বাতিল চাইতে এসেছি? এসেছি জামিনের জন্য। ৭০ বছর বয়সী অসুস্থ একজন নারী। যিনি জীবন ঝুঁকিতে রয়েছেন। ফলে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখার জন্য প্রর্থনা করছি।

তার আগে এ মামলায় গত ২৮ মে খাদেলা জিয়াকে ছয় মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন দেন হাইকোর্ট। তবে পরের দিন জামিন স্থগিত করে আদেশ দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত। একইসঙ্গে, জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনের শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।

২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে পেট্রোলবোমা ছোড়া হয়। এ ঘটনায় ৭ জন যাত্রী মারা যান এবং আরও ২৫-২৬ জন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় পরদিন চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক নুরুজ্জামান বাদী হয়ে ৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। যাতে আসামি করা হয় খালেদা জিয়াকে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

কুমিল্লার হত্যা মামলায় জামিন মেলেনি খালেদা জিয়ার

আপডেট টাইম : ০১:০৩:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২ জুলাই ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ কুমিল্লার হত্যা মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত রাখলো অাপিল বিভাগও। এর অাগে রাষ্ট্রপক্ষের অাবেদনে হাইকোর্টের জামিন স্থগিত করেছিল চেম্বার অাদালত। আজ সোমবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন অাপিল বেঞ্চ ওই জামিন স্থগিত করে ৪ সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টকে রুল নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন।

এর আগে উভয় পক্ষের শুনানি শেষে গত ২৪ জুন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ অাদেশের জন্য অাজকের এ দিন ধার্য করেন। ওইদিন শুনানিতে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম কুমিল্লায় পেট্রোল বোমায় বাস পুড়িয়ে মানুষ হত্যার মামলার অভিযোগপত্র, ঘটনার কিছু স্থিরচিত্র এবং ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন তুলে ধরেন। দলের নেতাদের সঙ্গে টেলিফোনে খালেদা জিয়ার কথোপকথনও মাহবুবে আলম শুনানিতে উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, হরতাল ও অবরোধ এক বিষয় না। হরতাল ও অবরোধের মাঝে পার্থক্য হচ্ছে, হরতালে সীমিতভাবে গাড়ি চলে, দোকানপাটও খোলা থাকে। আর অবরোধে গাড়ি চলতে দেওয়া হয় না। সবকিছু অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। তখন লাগাতার অবরোধ চলছিল। তাছাড়া অবরোধ সফল করার ক্ষেত্রে খালেদা জিয়াই তখন প্রধান ব্যক্তি। টেলি কথপোকথনেই প্রমাণ হয়, খালেদা জিয়ার নির্দেশেই ওই ঘটনা ঘটেছে।

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, এতবড় নৃসংশ ঘটনায় করা মামলার প্রধান ব্যক্তি হওয়ার পরও যদি তাকে জামিন দেওয়া হয়, তবে এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তি ও তাদের পরিবারগুলোর কছে কী বার্তা যাবে? তাই হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বাতিল করা হোক।

অপরদিকে খন্দকার মাহবুব হোসেন শুনানিতে বলেন, খালেদা জিয়ার সম্মানহানী করতেই পেট্রোল বোমা মেরে মানুষ হত্যা করা হয়েছে। বিরোধীদলের ওপর দোষ চাপিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে সরকারের এজেন্টরা পেট্রোল বোমা মেরে নাশকতা করেছে। তার দায়-দায়িত্ব বেগম খালেদা জিয়ার না। এ মামলার এফআইআরএ ৫৬ জনের নাম ছিল, সেখানে খালেদা জিয়ার নাম ছিল না। পরে দ্বিতীয়বার অভিযোগপত্রে তার নাম ঢুকানো হয়েছে।

খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, অ্যাটর্নি জেনারেল অভিযোগপত্র, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন, ছবি দেখালেন। আমরা কি মামলা বাতিল চাইতে এসেছি? এসেছি জামিনের জন্য। ৭০ বছর বয়সী অসুস্থ একজন নারী। যিনি জীবন ঝুঁকিতে রয়েছেন। ফলে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন বহাল রাখার জন্য প্রর্থনা করছি।

তার আগে এ মামলায় গত ২৮ মে খাদেলা জিয়াকে ছয় মাসের অন্তবর্তীকালীন জামিন দেন হাইকোর্ট। তবে পরের দিন জামিন স্থগিত করে আদেশ দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত। একইসঙ্গে, জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল আবেদনের শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন।

২০১৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে একটি বাসে পেট্রোলবোমা ছোড়া হয়। এ ঘটনায় ৭ জন যাত্রী মারা যান এবং আরও ২৫-২৬ জন গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় পরদিন চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক নুরুজ্জামান বাদী হয়ে ৫৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। যাতে আসামি করা হয় খালেদা জিয়াকে।