ঢাকা ০৯:৩৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সাফল্য আছে, কোন উন্নয়ন নেই

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৯:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ মে ২০১৮
  • ৩১২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার এল কে এইচ উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো ভবন নেই। শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ সংকট। জরাজীর্ণ টিনের ঘর, ভাঙাচুরা বেড়ার কারণে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে সামান্য ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি এলেই ঝুঁকি এড়াতে পাঠদান বন্ধ থাকে। ছাত্রছাত্রীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়। তবে মেঘনা উপকূলীয় উন্নয়নবঞ্চিত এ প্রতিষ্ঠানে ফলাফলে সাফল্য রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বিদ্যালয়টির ১০৫ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ৯৩ শিক্ষার্থীই কৃতকার্য হয়েছে। এ ছাড়া গত কয়েক বছরে বেশ কিছু শিক্ষার্থী জিপিএ-৫সহ ভালো ফলাফল করেছে। চরাঞ্চলের বিদ্যালয়ে মেধা বিকাশের সম্ভাবনা থাকা শর্তেও নানা সমস্যা ও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। Lakshmipurজানা যায়, ১ একর ২০ শতাংশ জমিতে এল কে এইচ উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৩ সালে। তখন ৬ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে অধ্যয়নরত ৬১৩ জন। বিদ্যালয়ে ১২ জন শিক্ষকের স্থলে ৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন। এতে পাঠদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষকদের। ৮টির মধ্যে ৫টি শ্রেণিকক্ষই ব্যবহারের অনুপযোগী। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের বাহিরে ক্লাস নিতে হয়।

সম্প্রতি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়েরর মাঠে জোয়ারের পানি থৈ-থৈ করছে। প্রতিষ্ঠানের উত্তর ও পশ্চিম পাশে দুইটি টিনের ঘর ও সাইক্লোন সেন্টার রয়েছে। সেখানেই চলে শিক্ষা কার্যক্রম। এর মধ্যে একটি ঘর খুব জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। চারপাশের টিনের বেড়াগুলো ভেঙে চৌচির। সিমেন্টের ঘাঁটিগুলো ভেঙে রডের উপরে দাঁড়িয়ে আছে। এক কক্ষে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন শিক্ষক। বাইরে থেকে ভেতরের অংশ সম্পূন্ন দেখা যাচ্ছে। আরেক পাশে টিনের ঘরের চাল থাকলেও বেড়া নেই। এতে পাঠদানের সময় শিক্ষার্থীরা অমনোযোগী হয়ে পড়ে। নিজস্ব কোনো ভবন না থাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ২য় তলায় একটিতে শিক্ষকদের অফিস, একটিতে কম্পিউটার ল্যাব এবং ৩য় তলায় দুইটি কক্ষ ক্লাসরুম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। তবে শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে নবম ও দশম শ্রেণির ক্লাস আশ্রয়ণ কেন্দ্রটির বারান্দায় নেয়া হয়।

Lakshmipurশিক্ষার্থী রায়হান ও কামরুল জানায়, কক্ষ সংকটের কারণে খোলা বারান্দায় তাদের ক্লাস করতে হচ্ছে। বৃষ্টি এলেই বই-খাতা ভিজে যায়। ছাত্রীদের জন্য আলাদা কোনো কমন রুমের ব্যবস্থা নেই।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি দরিদ্র এলাকা, তারপরও শহরের বিদ্যালয়গুলোর তুলনায় আমাদের ফলাফল ভালো। প্রশাসনিক বিভিন্ন কার্যালয়ে সমস্যার কথা জানিয়েও আশানুরূপ কোনো সুফল পায়নি।

Lakshmipurলক্ষ্মীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সরিৎ কুমার চাকমা বলেন, জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। বরাদ্দ না থাকায় এ সব নিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। নতুন বরাদ্দ এলে সংস্কারের কাজ করা হবে। দুই বছর নিয়োগ না থাকায় শিক্ষক সংকট রয়েছেন। শিগগিরই এ সংকট নিরসন করা হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

সাফল্য আছে, কোন উন্নয়ন নেই

আপডেট টাইম : ১২:১৯:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার এল কে এইচ উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয়ের নিজস্ব কোনো ভবন নেই। শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ সংকট। জরাজীর্ণ টিনের ঘর, ভাঙাচুরা বেড়ার কারণে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে সামান্য ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টি এলেই ঝুঁকি এড়াতে পাঠদান বন্ধ থাকে। ছাত্রছাত্রীদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়। তবে মেঘনা উপকূলীয় উন্নয়নবঞ্চিত এ প্রতিষ্ঠানে ফলাফলে সাফল্য রয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা জানায়, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় বিদ্যালয়টির ১০৫ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে ৯৩ শিক্ষার্থীই কৃতকার্য হয়েছে। এ ছাড়া গত কয়েক বছরে বেশ কিছু শিক্ষার্থী জিপিএ-৫সহ ভালো ফলাফল করেছে। চরাঞ্চলের বিদ্যালয়ে মেধা বিকাশের সম্ভাবনা থাকা শর্তেও নানা সমস্যা ও সরকারের পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। Lakshmipurজানা যায়, ১ একর ২০ শতাংশ জমিতে এল কে এইচ উপকূলীয় উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৯৩ সালে। তখন ৬ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বর্তমানে অধ্যয়নরত ৬১৩ জন। বিদ্যালয়ে ১২ জন শিক্ষকের স্থলে ৬ জন দায়িত্ব পালন করছেন। এতে পাঠদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষকদের। ৮টির মধ্যে ৫টি শ্রেণিকক্ষই ব্যবহারের অনুপযোগী। শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে শিক্ষার্থীদের বাহিরে ক্লাস নিতে হয়।

সম্প্রতি বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়েরর মাঠে জোয়ারের পানি থৈ-থৈ করছে। প্রতিষ্ঠানের উত্তর ও পশ্চিম পাশে দুইটি টিনের ঘর ও সাইক্লোন সেন্টার রয়েছে। সেখানেই চলে শিক্ষা কার্যক্রম। এর মধ্যে একটি ঘর খুব জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। চারপাশের টিনের বেড়াগুলো ভেঙে চৌচির। সিমেন্টের ঘাঁটিগুলো ভেঙে রডের উপরে দাঁড়িয়ে আছে। এক কক্ষে ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন শিক্ষক। বাইরে থেকে ভেতরের অংশ সম্পূন্ন দেখা যাচ্ছে। আরেক পাশে টিনের ঘরের চাল থাকলেও বেড়া নেই। এতে পাঠদানের সময় শিক্ষার্থীরা অমনোযোগী হয়ে পড়ে। নিজস্ব কোনো ভবন না থাকায় ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়ণ কেন্দ্রের ২য় তলায় একটিতে শিক্ষকদের অফিস, একটিতে কম্পিউটার ল্যাব এবং ৩য় তলায় দুইটি কক্ষ ক্লাসরুম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। তবে শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে নবম ও দশম শ্রেণির ক্লাস আশ্রয়ণ কেন্দ্রটির বারান্দায় নেয়া হয়।

Lakshmipurশিক্ষার্থী রায়হান ও কামরুল জানায়, কক্ষ সংকটের কারণে খোলা বারান্দায় তাদের ক্লাস করতে হচ্ছে। বৃষ্টি এলেই বই-খাতা ভিজে যায়। ছাত্রীদের জন্য আলাদা কোনো কমন রুমের ব্যবস্থা নেই।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান বলেন, বিভিন্ন প্রতিকূলতার মধ্যেও মানসম্মত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটি দরিদ্র এলাকা, তারপরও শহরের বিদ্যালয়গুলোর তুলনায় আমাদের ফলাফল ভালো। প্রশাসনিক বিভিন্ন কার্যালয়ে সমস্যার কথা জানিয়েও আশানুরূপ কোনো সুফল পায়নি।

Lakshmipurলক্ষ্মীপুর জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সরিৎ কুমার চাকমা বলেন, জরাজীর্ণ বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করা হচ্ছে। বরাদ্দ না থাকায় এ সব নিয়ে কাজ করা যাচ্ছে না। নতুন বরাদ্দ এলে সংস্কারের কাজ করা হবে। দুই বছর নিয়োগ না থাকায় শিক্ষক সংকট রয়েছেন। শিগগিরই এ সংকট নিরসন করা হবে।