ঢাকা ০২:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আমাদের দেশে দুর্লভ পরিযায়ী পাখি কালো ভ্রু টিকরা

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১০:৫৬:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ মে ২০১৮
  • ৪২৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একে তো পাখিটি আমাদের দেশে দুর্লভ পরিযায়ী পাখি, তার ওপরে চালাক, আত্মগোপনে খুবই পারদর্শী, ভিতু ও লাজুক স্বভাবের কারণে চোখে দেখতে পাওয়া দুরূহ ব্যাপার। অবশ্য থেমে থেমে মিষ্টি-সুরেলা কণ্ঠে ‘ছির্ ছির্ ছিরর্, চিক চুক, চাক চাক’ শব্দে ডেকেই চলে। আর যেহেতু এদের চারণ‌ক্ষেত্র ঝোপঝাড়, আখে‌র খেত-নলখাগড়া, বঁইচি ফলের ঝোপসহ খড়বন, সেহেতু ছবি তোলা খুবই কষ্টকর। চঞ্চল তো বটেই, স্বভাবজাত কারণে এরা নিজেদের আড়ালে-আবডালে রাখতে চায়। লম্ফেঝম্ফেও ওস্তাদ এই পুঁচকে পাখি ঘাস-নল বা আখ বেয়ে উঠতে যেমন পারে, তেমনি পারে বেয়ে বেয়ে নামতে। ওপর থেকে নিচের শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তেও পারে। এ সময় এদের লেজের চমৎকার বিন্যাসের পালকগুলো অনেকটাই হাতপাখার মতো মেলে থাকে। ওই পাখা সারাক্ষণ ওপর-নিচে মোহনীয় ভঙ্গিতে নাচাতেই থাকে।

পাখিটির নাম কালো ভ্রু টিকরা। সুন্দরবন-সংলগ্ন গ্রামগুলোতে এদের নাম চোরাটুনি। ইংরেজি নাম ব্ল্যাক-ব্রোয়েড রিড ওয়্যার্বলার। বৈজ্ঞানিক নাম Acrocephalus bistrigiceps। দৈর্ঘ্য ১৩ সেন্টিমিটার। পরিযায়ী এই পাখিটিকে দেখা যায় সুন্দরবন অঞ্চলসহ দ‌ক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশে ও বৃহত্তর চট্টগ্রাম-সিলেটের ঝোপঝাড়-ঘাসবন এলাকায়।

মাথার তালু-ঘাড়-পিঠ লালচে বা জলপাই-বাদামি, ডানার প্রান্ত কালচে, গলা-বুক-পেট ও লেজের তলা সাদাটে। অবশ্য বুক ও পেটের দুপাশে বাফরঙা আভা আছে, চোখের ওপর দিয়ে সাদাটে একটা টান। তার ওপর দিয়ে যে ভ্রুরেখা বয়ে গেছে, সেটা যেন কাজল দিয়ে টানা। অর্থাৎ কালো। ঠোঁট ধূসর, পা কালচে। লেজের ওপরের অগ্রভাগ কালচে। এদের মূল খাদ্য নানা রকম পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

আমাদের দেশে দুর্লভ পরিযায়ী পাখি কালো ভ্রু টিকরা

আপডেট টাইম : ১০:৫৬:১৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ একে তো পাখিটি আমাদের দেশে দুর্লভ পরিযায়ী পাখি, তার ওপরে চালাক, আত্মগোপনে খুবই পারদর্শী, ভিতু ও লাজুক স্বভাবের কারণে চোখে দেখতে পাওয়া দুরূহ ব্যাপার। অবশ্য থেমে থেমে মিষ্টি-সুরেলা কণ্ঠে ‘ছির্ ছির্ ছিরর্, চিক চুক, চাক চাক’ শব্দে ডেকেই চলে। আর যেহেতু এদের চারণ‌ক্ষেত্র ঝোপঝাড়, আখে‌র খেত-নলখাগড়া, বঁইচি ফলের ঝোপসহ খড়বন, সেহেতু ছবি তোলা খুবই কষ্টকর। চঞ্চল তো বটেই, স্বভাবজাত কারণে এরা নিজেদের আড়ালে-আবডালে রাখতে চায়। লম্ফেঝম্ফেও ওস্তাদ এই পুঁচকে পাখি ঘাস-নল বা আখ বেয়ে উঠতে যেমন পারে, তেমনি পারে বেয়ে বেয়ে নামতে। ওপর থেকে নিচের শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তেও পারে। এ সময় এদের লেজের চমৎকার বিন্যাসের পালকগুলো অনেকটাই হাতপাখার মতো মেলে থাকে। ওই পাখা সারাক্ষণ ওপর-নিচে মোহনীয় ভঙ্গিতে নাচাতেই থাকে।

পাখিটির নাম কালো ভ্রু টিকরা। সুন্দরবন-সংলগ্ন গ্রামগুলোতে এদের নাম চোরাটুনি। ইংরেজি নাম ব্ল্যাক-ব্রোয়েড রিড ওয়্যার্বলার। বৈজ্ঞানিক নাম Acrocephalus bistrigiceps। দৈর্ঘ্য ১৩ সেন্টিমিটার। পরিযায়ী এই পাখিটিকে দেখা যায় সুন্দরবন অঞ্চলসহ দ‌ক্ষিণ-পশ্চিম বাংলাদেশে ও বৃহত্তর চট্টগ্রাম-সিলেটের ঝোপঝাড়-ঘাসবন এলাকায়।

মাথার তালু-ঘাড়-পিঠ লালচে বা জলপাই-বাদামি, ডানার প্রান্ত কালচে, গলা-বুক-পেট ও লেজের তলা সাদাটে। অবশ্য বুক ও পেটের দুপাশে বাফরঙা আভা আছে, চোখের ওপর দিয়ে সাদাটে একটা টান। তার ওপর দিয়ে যে ভ্রুরেখা বয়ে গেছে, সেটা যেন কাজল দিয়ে টানা। অর্থাৎ কালো। ঠোঁট ধূসর, পা কালচে। লেজের ওপরের অগ্রভাগ কালচে। এদের মূল খাদ্য নানা রকম পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ।