ঢাকা ০৬:৫৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তুলে নেওয়া হচ্ছে পাবলিক পরীক্ষার এমসিকিউ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৪:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ মে ২০১৮
  • ৩১৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রশ্নফাঁস রোধে নতুন পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাবলিক পরীক্ষায় এমসিকিউ (নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন) তুলে দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। এর পরিবর্তে ছোট প্রশ্ন প্রবর্তন করা হবে।

এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে আসন্ন জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায়ই এমসিকিউ বাদ দিয়ে ছোট প্রশ্ন প্রবর্তন করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বৃহস্পতিবার (৩ মে) বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পাবলিক পরীক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় আইনশৃঙ্খলা ও মনিটরিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সদস্যরা প্রশ্নফাঁস রোধে পাবলিক পরীক্ষা থেকে এমসিকিউ তুলে দেয়ার সুপারিশ করেন। এছাড়া নির্বিচারে পরীক্ষা কেন্দ্র অনুমোদন না দেয়া এবং ভেন্যু কেন্দ্র বাতিলের পরামর্শ দেন। সদস্যদের পরামর্শের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সভায় বলেন, প্রশ্নফাঁসের কেন্দ্র হিসেবে এমসিকিউয়ের বিষয়টি চলে এসেছে।

ছেলেমেয়েদের জন্য বিষয়টি বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাব। তিনি আরও বলেন, জেএসসি- জেডিসির ক্ষেত্রে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। খুব শিগগির এটা নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করব।

সভার শুরুতে এবারের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ১৭ বিষয়ের মধ্যে ১২ বিষয়ের এমসিকিউ প্রশ্ন ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ক্লোজ গ্রুপের মধ্যে ফাঁস হয়েছে।

এই ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটে পরীক্ষার ২০ মিনিট আগে। এতে শিক্ষার্থীরা তেমন লাভবান হয়নি। তাছাড়া ২০ লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ হাজার এই সুবিধা পেয়ে থাকতে পারে।

যেটা মোট পরীক্ষার্থীর তুলনায় একটি ক্ষুদ্র অংশ। তাই এই পরীক্ষা বাতিল করা হবে না। যারা প্রশ্নফাঁসের সুবিধা পেয়েছে তাদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ফাঁসের সুবিধাভোগীদের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের ফল বাতিল করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনেকে বিচার বিশ্লেষণ না করেই ঢালাওভাবে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অপরাধী বানিয়েছেন। এটি আমাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেফতার করে দেখেছেন আসলে সেটি আসল প্রশ্নপত্র ছিল না। তিনি বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন তৈরি প্রচার করার আহ্বান জানান।

এদিকে তদন্ত কমিটি চার পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দিলেও ওই সভায় সরবরাহ করা হয় দুই পৃষ্ঠা। চারটি সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদনের ওই সার-সংক্ষেপে বলা হয়েছে, সম্প্রতি শেষ হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় ০.২৫ শতাংশ প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। শুধু ‘খ’ সেট বা নৈর্ব্যক্তিক ৩০ নম্বরের অংশ ফাঁস হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মাদরাসা বোর্ডের কোনো প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত করে সুবিধাভোগী সব পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে ফলাফল বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, প্রশ্নফাঁস অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা, বিকাশ, রকেটসহ বিভিন্ন ব্যাংকিং মাধ্যমে লেনদেনকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে সন্দেহজনক মোবাইল নম্বরগুলো চিহ্নিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, অতিরিক্ত সচিব রওনক মাহমুদসহ পুলিশ, র‌্যাব, এনএসআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। এছাড়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হকসহ বিভিন্ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

তুলে নেওয়া হচ্ছে পাবলিক পরীক্ষার এমসিকিউ

আপডেট টাইম : ০৪:৪৭:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ মে ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ প্রশ্নফাঁস রোধে নতুন পদক্ষেপ নিতে চাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পাবলিক পরীক্ষায় এমসিকিউ (নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন) তুলে দেয়ার চিন্তাভাবনা চলছে। এর পরিবর্তে ছোট প্রশ্ন প্রবর্তন করা হবে।

এ সংক্রান্ত প্রস্তুতি সম্পন্ন হলে আসন্ন জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায়ই এমসিকিউ বাদ দিয়ে ছোট প্রশ্ন প্রবর্তন করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বৃহস্পতিবার (৩ মে) বিকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পাবলিক পরীক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় আইনশৃঙ্খলা ও মনিটরিং কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সদস্যরা প্রশ্নফাঁস রোধে পাবলিক পরীক্ষা থেকে এমসিকিউ তুলে দেয়ার সুপারিশ করেন। এছাড়া নির্বিচারে পরীক্ষা কেন্দ্র অনুমোদন না দেয়া এবং ভেন্যু কেন্দ্র বাতিলের পরামর্শ দেন। সদস্যদের পরামর্শের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সভায় বলেন, প্রশ্নফাঁসের কেন্দ্র হিসেবে এমসিকিউয়ের বিষয়টি চলে এসেছে।

ছেলেমেয়েদের জন্য বিষয়টি বিপজ্জনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমরা আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্ত জানাব। তিনি আরও বলেন, জেএসসি- জেডিসির ক্ষেত্রে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। খুব শিগগির এটা নিয়ে নতুন পরিকল্পনা করব।

সভার শুরুতে এবারের এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এ সময় শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, এবারের এসএসসি পরীক্ষায় ১৭ বিষয়ের মধ্যে ১২ বিষয়ের এমসিকিউ প্রশ্ন ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ক্লোজ গ্রুপের মধ্যে ফাঁস হয়েছে।

এই ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটে পরীক্ষার ২০ মিনিট আগে। এতে শিক্ষার্থীরা তেমন লাভবান হয়নি। তাছাড়া ২০ লাখ পরীক্ষার্থীর মধ্যে সর্বোচ্চ ৫ হাজার এই সুবিধা পেয়ে থাকতে পারে।

যেটা মোট পরীক্ষার্থীর তুলনায় একটি ক্ষুদ্র অংশ। তাই এই পরীক্ষা বাতিল করা হবে না। যারা প্রশ্নফাঁসের সুবিধা পেয়েছে তাদের শনাক্ত করার কাজ চলছে। তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ফাঁসের সুবিধাভোগীদের ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর তাদের ফল বাতিল করা হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, অনেকে বিচার বিশ্লেষণ না করেই ঢালাওভাবে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে অপরাধী বানিয়েছেন। এটি আমাদের প্রতি অবিচার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের গ্রেফতার করে দেখেছেন আসলে সেটি আসল প্রশ্নপত্র ছিল না। তিনি বিষয়গুলো যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন তৈরি প্রচার করার আহ্বান জানান।

এদিকে তদন্ত কমিটি চার পৃষ্ঠার প্রতিবেদন দিলেও ওই সভায় সরবরাহ করা হয় দুই পৃষ্ঠা। চারটি সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদনের ওই সার-সংক্ষেপে বলা হয়েছে, সম্প্রতি শেষ হওয়া এসএসসি পরীক্ষায় ০.২৫ শতাংশ প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। শুধু ‘খ’ সেট বা নৈর্ব্যক্তিক ৩০ নম্বরের অংশ ফাঁস হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গেছে। মাদরাসা বোর্ডের কোনো প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং তদন্ত করে সুবিধাভোগী সব পরীক্ষার্থীকে চিহ্নিত করে ফলাফল বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা, প্রশ্নফাঁস অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা, বিকাশ, রকেটসহ বিভিন্ন ব্যাংকিং মাধ্যমে লেনদেনকারীদের তথ্য সংগ্রহ করে সন্দেহজনক মোবাইল নম্বরগুলো চিহ্নিত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলী, কারিগরি ও মাদরাসা বিভাগের সচিব মো. আলমগীর, অতিরিক্ত সচিব রওনক মাহমুদসহ পুলিশ, র‌্যাব, এনএসআইসহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। এছাড়া ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হকসহ বিভিন্ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।