‘রিং’ রূপ দিয়েই পাখিটিকে আলাদা করে যায় চেনা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বৃত্তাকার সৌন্দর্য রয়েছে চোখে। সবুজ পাতার ফাঁকে কিংবা ধুসর গাছের ডালে তার বসে থাকা শোভা ওই বৃত্তাকার শুভ্রতায় ফুটে উঠে বারবার। শ্বেত-শুভ্রতার টুকরো তার চোখজুড়ে। চোখের এমন ‘রিং’ রূপ দিয়েই পাখিটিকে আলাদা করে যায় চেনা। এ পাখিটির নাম ‘উদয়ী ধলাচোখ’ বা ‘শ্বেতাক্ষি’। কেউ কেউ ‘বাবুনাই’ বলেও উল্লেখ করে থাকে। এর ইংরেজি নাম Oriental White-eye এবং বৈজ্ঞানিক নাম Zosterops palpebrosus। হলুদ-সবুজ দেহের এই পাখিটি ‘প্রি-উ, প্রি-উ’ স্বরে ডেকে বেড়ায়।

প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক সাংবাদিককে বলেন, উদয়ী ধলাচোখ ক্ষুদ্রাকৃতির বৃক্ষচারী পাখি। এরা আমাদের দেশের সুলভ আবাসিক পাখি হিসেবে পরিচিত। সব বিভাগের বন ও প্রায় গ্রামাঞ্চলেই এর দেখা পাওয়া যায়।

এর আকার-আকৃতি সম্পর্কে তিনি বলেন, এর উচ্চতা প্রায় ১০ সেন্টিমিটার এবং ওজন ৯ গ্রাম। পিঠ হালকা সবুজ; ডানা ও লেজ কালচে। গলা ও বুকের উপরের অংশ উজ্জ্বল হলুদ। এই পাখিটির চোখের চারপাশে সাদা চামড়ার স্পষ্ট বলয় আছে। চোখের নিচে রয়েছে ছোট্ট কালচে পট্টি। এর চোখ হলদে বাদামি।

এই পাখিটির স্বভাব-চরিত্র সম্পর্কে তিনি বলেন, উদয়ী ধলাচোখ সাধারণত বন, কুঞ্জবন, ঘেরা ফলের বাগান, গ্রাম ও প্যারাবনে বিচরণ করে। পত্রগুচ্ছ বা গাছের পুষ্পমুকুলে উড়ে ও লাফিয়ে এরা খাবার শিকার করে। বিভিন্ন ছোট পোকা, রসালো ফল, কুঁড়ি, মধু, বীজ প্রভৃতি এর খাদ্যতালিকায় রয়েছে।

এদের প্রজননকাল এপ্রিল-সেপ্টেম্বর। তখন সরু ডালে খুব আলতোভাবে গাছের পাতাঢাকা  প্রান্তদেশে ঘাস, ক্ষুদ্র শিকড়, লাইলন, মাকড়সার জাল ও শাক-সবজির গোলা চুল বিছিয়ে ছোট্ট বাটির মতো বাসা বানিয়ে ডিম পাড়ে বলে জানান পাখি বিশেষজ্ঞ ইনাম আল হক।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর