কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার আদমপুরে কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তরা এখনো ধরা পরেনি। দুইদিন অভিযান চালিয়ে পুলিশ এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চলছে ব্যাপক ক্ষোভ ও প্রতিবাদ ও নিন্দার ঝড়।
ঘটনার চারদিন অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত কেন ধর্ষকরা ধরা পড়ছে না জানতে চাইলে অষ্টগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মোল্ল্যা ভাটির রানিকে বলেন, “ধর্ষকদের ধরতে আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বরাগীরকান্দি গ্রামের মানুষকে আমরা অনুরোধ করেছি যেন পলাতক ধর্ষকদের পুলিশের হাতে তুলে দেয়। মনে হচ্ছে আসামিরা এলাকার বাইরে চলে গেছে।”
ওসি কামরুল ইসলাম জানান, আসামিদের কললিস্ট ধরে ট্রাকিং করার জন্য ডিএমপির সহায়তা নেয়া হবে। “যেখানেই থাকুকনা কেন তাদেরকে ধরা পড়তেই হবে। এ ব্যাপারে আমরা কাউকেই কোন ধরণের ছাড় দেব না,” যোগ করেন ওসি।
ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে ফুসেঁ ওঠেছে গোটা অষ্টগ্রামবাসী। ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন নারী নির্যাতন প্রতিরোধে অগ্রগামী সমাজকর্মী কলেজ শিক্ষক সৈয়দা নাসিমা আক্তার। তিনি বলেন, “মহামান্যের এলাকা, এই অজুহাতে সব অপরাধ যেমন-চাল চুরি, সার চুরি আর ধর্ষণের মতো নিত্য নৈমিত্তিক ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হয় বলে আমার মনে হয়। যার পরিনাম যে কী হবে তা কেউ জানে না। তবে আমি এ বিষয়ে ওসি কামরুল ইসলামকে ধন্যবাদ জানাই। ধর্ষণের বিষয়ে তিনি কোন ধরণের ছাড় দেননা। এ ঘটনায়ও এর ব্যত্যয় ঘটবে না আশা করি।”
অষ্টগ্রাম উপজেলা প্রশাসক মো: সালাহ উদ্দিন সোমবার ভাটির রানিকে জানান, আদমপুরে গণধর্ষণ একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা। এতে প্রশাসন জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।
আদমপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বাদলের আপোষ করার বিষয়ে কিছু শুনেননি বলেও জানালেন তিনি। প্রাপ্ত সূত্রমতে, ঘটনার পরদিন চেয়ারম্যান রেজাউল করিম বাদল ভিকটিমের মাকে ধর্ষকদের সাথে আপোষ করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা চেয়ারম্যান শহীদুল ইসলাম জেমস ভাটির রানিকে বলেন, “ঘটনা শুনার সাথে সাথে আমি ওসি সাহেবকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে বলেছি। ধর্ষকদের বিচার নিশ্চিত করতে উপজেলা পরিষদ সকল ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।”
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আদমপুর ইউনিয়নের বরাগীরকান্দি গ্রামের ১৪ বছরের এক কিশোরীকে মুখে গামছা বেধেঁ গণধর্ষণ করে একদল যুবক। আহত অবস্থায় কিশোরীকে প্রথমে অষ্টগ্রাম হাসপাতাল ও পরে কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল রোববার ধর্ষিতার স্বাস্থ্য পরীক্ষা শেষে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।
ঘটনার পর থেকে ধর্ষকরা পলাতক রয়েছে। এ বিষয়ে অষ্টগ্রাম থানায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন বলে জানিয়েছেন ওসি কামরুল ইসলাম।