ঢাকা ০২:০৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হাওরের দুর্লভ প্রজাতির পাখি ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:০০:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মার্চ ২০১৮
  • ৪১০ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সবই কালো! কালো মাথা, কালো গলা আর ঠোঁটটাও কালো। তবে শরীরজুড়ে সাদা রঙের স্বচ্ছতা। হাওরের ধূসর জলজপ্রকৃতির মধ্যে এ দু’টি রঙের সংমিশ্রণ দৃষ্টি কাড়ে। তাকাতে মন চায় বারবার। বাইক্কা বিলের শীত মৌসুমেও অন্য জলচর পাখিদের মতো এ পাখিটিকে সচরাচর দেখা যায় না। বাংলাদেশে এ পাখিটি ‘দুলর্ভ পাখি’ হিসেবে তালিকাভুক্ত। এটি বক জাতীয় পাখি।

বাইক্কাবিল পাখি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের তত্ত্বাবধায়ক প্রয়াত মিরাস মিয়া কয়েক বছর আগে দূরবীক্ষণযন্ত্রের সাহায্যে এই পাখিটিকে দেখে আনন্দে আপ্লুত হয়েছিলেন। ‘বহু বছর পর দেখলাম’ বলে প্রাপ্তির হাসি হাসলেন। সেই থেকে পাখিটির সঙ্গে পরিচয়।

Related image

সেদিন দূরবীক্ষণ যন্ত্রে চোখ রাখতেই দেখা যায় কাদায় মুখগুজে খাবার অনুসন্ধানে ব্যস্ত। পাশের পাখিটি সকৌতুকে ধেয়ে এসে তাড়া করছে একে অপরকে। পরিযায়ী পাখিদের ভিড়ে এই পাখিটিকে দেখে হৃদয় জুড়ায়।

প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক বলেন, ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’ পাখিটি জলাভূমি, নদী, প্লাবিত তৃণভূমি, ধানক্ষেত, জোয়ারভাটার খাঁড়ি ও উপকূলে বিচরণ করে। উড়ার সময় এরা বকের মতো গলা ভাঁজ করে না। শীতের আবাসে সম্পূর্ণ নীরব থাকে, কিন্তু গ্রীষ্মে বাসায় বসে শুকরের মতো নাকিসূরে ‘খোঁত’ ‘খোঁত’ শব্দে ডাকতে থাকে।

প্রজনন মৌসুমে এরা পানির ধারে আংশিক জলমগ্ন বৃক্ষে কিংবা গ্রামীণ কুঞ্জবনে ছোট ডালপালা দিয়ে মাচার মতো বাসা বানিয়ে ডিম পড়ে বলে জানান ইনাম আল হক।

বন্যপ্রাণী বিষয়ক আলোকচিত্রী সাঈদ বিন জামাল হাওর বার্তাকে বলেন, পরিযায়ী ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’ বর্তমানে বাংলাদেশের বিরলপ্রায় প্রজাতি। একে ‘কাঁচিচোরা’ও বলে। ইংরেজি নাম Black-headed Ibis এবং বৈজ্ঞানিক নাম Threskiornis melanocephalus সাধারণত ছোট থেকে মাঝারি ঝাঁকে বাস করে। এখন আমাদের দেশে বড় ঝাঁকে দেখা যায় না। এই ছবিগুলো বাইক্কা বিল থেকে সম্প্রতি তোলা হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

হাওরের দুর্লভ প্রজাতির পাখি ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’

আপডেট টাইম : ১১:০০:৫৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ মার্চ ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সবই কালো! কালো মাথা, কালো গলা আর ঠোঁটটাও কালো। তবে শরীরজুড়ে সাদা রঙের স্বচ্ছতা। হাওরের ধূসর জলজপ্রকৃতির মধ্যে এ দু’টি রঙের সংমিশ্রণ দৃষ্টি কাড়ে। তাকাতে মন চায় বারবার। বাইক্কা বিলের শীত মৌসুমেও অন্য জলচর পাখিদের মতো এ পাখিটিকে সচরাচর দেখা যায় না। বাংলাদেশে এ পাখিটি ‘দুলর্ভ পাখি’ হিসেবে তালিকাভুক্ত। এটি বক জাতীয় পাখি।

বাইক্কাবিল পাখি পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের তত্ত্বাবধায়ক প্রয়াত মিরাস মিয়া কয়েক বছর আগে দূরবীক্ষণযন্ত্রের সাহায্যে এই পাখিটিকে দেখে আনন্দে আপ্লুত হয়েছিলেন। ‘বহু বছর পর দেখলাম’ বলে প্রাপ্তির হাসি হাসলেন। সেই থেকে পাখিটির সঙ্গে পরিচয়।

Related image

সেদিন দূরবীক্ষণ যন্ত্রে চোখ রাখতেই দেখা যায় কাদায় মুখগুজে খাবার অনুসন্ধানে ব্যস্ত। পাশের পাখিটি সকৌতুকে ধেয়ে এসে তাড়া করছে একে অপরকে। পরিযায়ী পাখিদের ভিড়ে এই পাখিটিকে দেখে হৃদয় জুড়ায়।

প্রখ্যাত পাখি বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক বলেন, ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’ পাখিটি জলাভূমি, নদী, প্লাবিত তৃণভূমি, ধানক্ষেত, জোয়ারভাটার খাঁড়ি ও উপকূলে বিচরণ করে। উড়ার সময় এরা বকের মতো গলা ভাঁজ করে না। শীতের আবাসে সম্পূর্ণ নীরব থাকে, কিন্তু গ্রীষ্মে বাসায় বসে শুকরের মতো নাকিসূরে ‘খোঁত’ ‘খোঁত’ শব্দে ডাকতে থাকে।

প্রজনন মৌসুমে এরা পানির ধারে আংশিক জলমগ্ন বৃক্ষে কিংবা গ্রামীণ কুঞ্জবনে ছোট ডালপালা দিয়ে মাচার মতো বাসা বানিয়ে ডিম পড়ে বলে জানান ইনাম আল হক।

বন্যপ্রাণী বিষয়ক আলোকচিত্রী সাঈদ বিন জামাল হাওর বার্তাকে বলেন, পরিযায়ী ‘কালোমাথা কাস্তেচরা’ বর্তমানে বাংলাদেশের বিরলপ্রায় প্রজাতি। একে ‘কাঁচিচোরা’ও বলে। ইংরেজি নাম Black-headed Ibis এবং বৈজ্ঞানিক নাম Threskiornis melanocephalus সাধারণত ছোট থেকে মাঝারি ঝাঁকে বাস করে। এখন আমাদের দেশে বড় ঝাঁকে দেখা যায় না। এই ছবিগুলো বাইক্কা বিল থেকে সম্প্রতি তোলা হয়েছে।