ঢাকা ০১:৪৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ পাট খাতের ওপর নির্ভরশীল

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০২:৫৫:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মার্চ ২০১৮
  • ৪৮২ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সোনালি আঁশের সোনার দেশ, পাট পণ্যের বাংলাদেশ’ স্রোগান সামনে নিয়ে ৬ মার্চ পালিত হবে জাতীয় পাট দিবস। দেশে দ্বিতীয়বারের মতো এ আয়োজন করা হচ্ছে। দেশের ভেতর ও বাইরে পাটজাতীয় পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই এ আয়োজন করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে নেওয়া হয়েছে নানামুখী উদ্যোগ। এর মধ্যে আরও একটি স্রোগান থাকছে ‘বাংলাদেশে পাটে বিশ্বমাত’। সূত্র জানায়, দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ প্রত্য ও পরোভাবে পাট খাতের ওপর নির্ভরশীল।

দেশে কাঁচা পাটের উৎপাদন বাড়লেও কমছে রপ্তানির পরিমাণ। উৎপাদিত পাটের বড় অংশই দেশে নানা কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে পাটের ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করায় এবং পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ায় দেশে এর ব্যবহার বেড়ে গেছে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে ৬৬ কোটি ডলার আয় হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১০ শতাংশ বেশি।

ওই সময়ে এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬০ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে এ খাতে ১০৬ কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বছর শেষে এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরাণা করা হচ্ছে। গত অর্থবছরে এ খাতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৯৬ কোটি ডলার। এর মধ্যে দেশ থেকে কাঁচা পাট, পাটের সুতা, পাটের তৈরি জুতা ও ব্যাগ এবং পাটজাত অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কাঁচা পাট রপ্তানি কমলেও বেড়েছে পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়।

দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭৫ লাখ ১ হাজার বেল কাঁচা পাট উৎপন্ন হয়েছিল। পরের বছর তা বেড়ে ৭৫ লাখ ৫৬ হাজার টনে দাঁড়ায়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উৎপন্ন হয়েছিল ৮৮ লাখ ৮৯ হাজার লাখ বেল। উৎপাদন বাড়লেও কাঁচা পাট রপ্তানি কমেই যাচ্ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কাঁচা পাট রপ্তানি হয়েছিল ১০ লাখ ১ হাজার বেল। পরের বছরে রপ্তানি কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ লাখ ৩৭ হাজার বেল।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে এর পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৭ লাখ ৫৫ হাজার বেল। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা পাটের চাহিদা কমায় রপ্তানি কমেছে। তবে আশার কথা, এখন আবার কাঁচা পাটের চাহিদা বিশ্ববাজারে বাড়তে শুরু করেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ৭৩ কোটি ডলার। পরের বছর এ আয় কমে ৫৮ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। গত অর্থবছরে এ আয় বেড়ে ৫৭ কোটি ডলার হয়েছে। এর বাইরে ক্ষুদ্র ও হস্তশিল্পের বিভিন্ন পাটজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।

দেশেও পাটজাত পণ্যের বাজার বাড়ছে। বেশ কিছু পণ্যের মোড়কে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। শিল্প ও কৃষিপণ্যের ১৭টি খাতে এটি ব্যবহারে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে পাটের ব্যাগের উৎপাদন বেড়েছে। পাটপণ্যে মূল্যসংযোজনের হার বাড়াতে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারা নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে সেগুলো দিয়ে পণ্য উৎপাদন করছে।

সম্প্রতি পাট অধিদপ্তর থেকে পাটের পলিব্যাগ ও পাট সুতা থেকে ডেনিম জিন্স তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এগুলো বাজারে এলে পাটের চাহিদা আরও বাড়বে। একই সঙ্গে বাড়বে মূল্যসংযোজনের হারও। এক বছর আগেও বহুমুখী পাটপণ্যের সংখ্যা ছিল ১৩৫টি। গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন পণ্য উদ্ভাবনের ফলে এখন তা বেড়ে ২৩৫টি হয়েছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ পাট খাতের ওপর নির্ভরশীল

আপডেট টাইম : ০২:৫৫:৩৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মার্চ ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ সোনালি আঁশের সোনার দেশ, পাট পণ্যের বাংলাদেশ’ স্রোগান সামনে নিয়ে ৬ মার্চ পালিত হবে জাতীয় পাট দিবস। দেশে দ্বিতীয়বারের মতো এ আয়োজন করা হচ্ছে। দেশের ভেতর ও বাইরে পাটজাতীয় পণ্যের ব্যবহার বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়েই এ আয়োজন করা হয়েছে। একই সঙ্গে পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বাড়াতে নেওয়া হয়েছে নানামুখী উদ্যোগ। এর মধ্যে আরও একটি স্রোগান থাকছে ‘বাংলাদেশে পাটে বিশ্বমাত’। সূত্র জানায়, দেশের প্রায় চার কোটি মানুষ প্রত্য ও পরোভাবে পাট খাতের ওপর নির্ভরশীল।

দেশে কাঁচা পাটের উৎপাদন বাড়লেও কমছে রপ্তানির পরিমাণ। উৎপাদিত পাটের বড় অংশই দেশে নানা কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে পাটের ব্যাগ ব্যবহার বাধ্যতামূলক করায় এবং পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ায় দেশে এর ব্যবহার বেড়ে গেছে। চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের জুলাই-জানুয়ারি সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে ৬৬ কোটি ডলার আয় হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ১৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ বেশি। একই সঙ্গে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১০ শতাংশ বেশি।

ওই সময়ে এ খাতে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬০ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরে এ খাতে ১০৬ কোটি ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বছর শেষে এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধরাণা করা হচ্ছে। গত অর্থবছরে এ খাতে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৯৬ কোটি ডলার। এর মধ্যে দেশ থেকে কাঁচা পাট, পাটের সুতা, পাটের তৈরি জুতা ও ব্যাগ এবং পাটজাত অন্যান্য পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। এর মধ্যে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কাঁচা পাট রপ্তানি কমলেও বেড়েছে পাটজাত পণ্যের রপ্তানি আয়।

দেশে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৭৫ লাখ ১ হাজার বেল কাঁচা পাট উৎপন্ন হয়েছিল। পরের বছর তা বেড়ে ৭৫ লাখ ৫৬ হাজার টনে দাঁড়ায়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে উৎপন্ন হয়েছিল ৮৮ লাখ ৮৯ হাজার লাখ বেল। উৎপাদন বাড়লেও কাঁচা পাট রপ্তানি কমেই যাচ্ছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে কাঁচা পাট রপ্তানি হয়েছিল ১০ লাখ ১ হাজার বেল। পরের বছরে রপ্তানি কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ১১ লাখ ৩৭ হাজার বেল।

২০১৬-১৭ অর্থবছরে এর পরিমাণ কমে দাঁড়ায় ৭ লাখ ৫৫ হাজার বেল। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা পাটের চাহিদা কমায় রপ্তানি কমেছে। তবে আশার কথা, এখন আবার কাঁচা পাটের চাহিদা বিশ্ববাজারে বাড়তে শুরু করেছে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে আয় হয়েছিল ৭৩ কোটি ডলার। পরের বছর এ আয় কমে ৫৮ কোটি ডলারে দাঁড়ায়। গত অর্থবছরে এ আয় বেড়ে ৫৭ কোটি ডলার হয়েছে। এর বাইরে ক্ষুদ্র ও হস্তশিল্পের বিভিন্ন পাটজাত পণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।

দেশেও পাটজাত পণ্যের বাজার বাড়ছে। বেশ কিছু পণ্যের মোড়কে পাটের ব্যাগ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। শিল্প ও কৃষিপণ্যের ১৭টি খাতে এটি ব্যবহারে বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ফলে পাটের ব্যাগের উৎপাদন বেড়েছে। পাটপণ্যে মূল্যসংযোজনের হার বাড়াতে জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার (জেডিপিসি) থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারা নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে সেগুলো দিয়ে পণ্য উৎপাদন করছে।

সম্প্রতি পাট অধিদপ্তর থেকে পাটের পলিব্যাগ ও পাট সুতা থেকে ডেনিম জিন্স তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে। এগুলো বাজারে এলে পাটের চাহিদা আরও বাড়বে। একই সঙ্গে বাড়বে মূল্যসংযোজনের হারও। এক বছর আগেও বহুমুখী পাটপণ্যের সংখ্যা ছিল ১৩৫টি। গবেষণার মাধ্যমে নতুন নতুন পণ্য উদ্ভাবনের ফলে এখন তা বেড়ে ২৩৫টি হয়েছে।