ঢাকা ০৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র অলরাউন্ডার সাকিব

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৯:২০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫
  • ৩৪০ বার

সাকিব আল-হাসান একজন বাংলাদেশি ক্রিকেটার। ২০০৬ সালের আগস্ট মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক তার । তিনি বাম-হাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং বামহাতি অর্থোডক্স স্পিনার। সাকিবের খেলার মান আর ধারাবাহিকতা তাকে নিয়ে গেছে এক নতুন উচ্চতায়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যখন সাকিবের অভিষেক হয়, তখন বিষয়টা এমন ছিল যে, বাংলাদেশ নিজেদের দিনে যে কোন দলকে হারাতে পারে। সেই সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটের র‍্যাংকিং-এ বাংলাদেশের কেউ একক রাজত্ব করে বেড়াবে, এমনটা ভাবা যেত না। দলে যখন কিছুটা পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে, সেই পথ ধরেই সাকিব আল হাসানের অন্তর্ভুক্তি। তারপর?

তারপর শুধুই একজন সাকিবের বিশ্বসেরা হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে হয়ে উঠলেন মিডল অর্ডারে বাংলাদেশের অন্যতম এক ব্যাটিং স্তম্ভ। নির্দিষ্ট জায়গায় টানা বল করে যাওয়ার অসাধারণ পারদর্শিতা তাকে বোলিংয়েও এনে দিল সাফল্য। ২০০৯ এর জানুয়ারিতে ওয়ানডেতে প্রথম বারের মত বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার নির্বাচিত হলেন। পুরো বিশ্ব তখন থেকে বুঝতে শিখলো- হ্যাঁ, আমরাও পারি। ঐ বছরই মাশরাফির ইনজুরিতে দল যখন নেতৃত্ব শঙ্কটে ভুগছে, তখন কাণ্ডারি হয়ে সেই সাকিবই আবির্ভূত হলেন। তার নেতৃত্বেই আসলো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্ট ও ওয়ানডেতে প্রথম হোয়াটয়াশ, জিম্বাবুয়ের মাটিতে প্রথম সিরিজ জয়, নিউজিল্যান্ডকে প্রথম বাংলাওয়াশ এবং বলাই বাহুল্য সবক’টিতেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন সাকিব। তাঁর সতীর্থরাও তাকে দেখে বার বার অনুপ্রাণিত হন, যার প্রতিফলন এখন বাংলাদেশ ক্রিকেটে উজ্জ্বল।

এরপর শুধু দেশের ক্রিকেটেই নয়, বিদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি আলো ছড়ালেন। আইপিএল, সিপিএল, বিগ ব্যাশ, কাউন্টি ক্রিকেট, চ্যাম্পিয়ন’স লিগ- সব জায়গাতেই তার সরব উপস্থিতি। যখন ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে তাঁর ৪-১-৬-৬ বোলিং ফিগার দেখে বিশ্বের ক্রিকেট বোদ্ধারা নির্বাক হয়ে যান, বিগ ব্যাশ বা কাউন্টি ক্রিকেটের ধারাভাষ্যকাররা যখন একজন সাকিব এবং সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেটেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন, যখন ইডেন গার্ডেনসে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ফাইনালে ৭০ হাজার দর্শক ‘সাকিব সাকিব’ ধ্বনিতে বুদ হয়ে থাকে তখন আসলে একজন বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তের আনন্দটা ভাষায় প্রকাশ করার মত থাকে না।

আজ সেই সাকিবই একমাত্র ক্রিকেটার যিনি টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০, তিন ফরমেটেই বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার। এক টেস্টে শতরান ও ১০ উইকেট নিয়ে বসেছেন স্যার ইয়ান বোথাম এবং ইমরান খানের মত কিংবদন্তির পাশে। আর বাংলাদেশ ক্রিকেট? সেটা এখন এমনই উচ্চতায় যে পাকিস্তান-ভারতকে হোয়াইটয়াশ করার পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ঘটনাও এখন অনুমেয়ই মনে হয়। বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট নানা সময়ে নানা কিংবদন্তির হাত ধরে বদলে গেছে। গত এক দশকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই যে অগ্রগতি, সেখানেও কিন্তু সাকিব আল হাসান নামক এক নক্ষত্রের প্রতিচ্ছবি বরাবরই দৃশ্যপটে তাঁর বর্ণিল আলো ছড়িয়ে যায়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

জনপ্রিয় সংবাদ

বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র অলরাউন্ডার সাকিব

আপডেট টাইম : ০৯:২০:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

সাকিব আল-হাসান একজন বাংলাদেশি ক্রিকেটার। ২০০৬ সালের আগস্ট মাসে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অভিষেক তার । তিনি বাম-হাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং বামহাতি অর্থোডক্স স্পিনার। সাকিবের খেলার মান আর ধারাবাহিকতা তাকে নিয়ে গেছে এক নতুন উচ্চতায়।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট যখন সাকিবের অভিষেক হয়, তখন বিষয়টা এমন ছিল যে, বাংলাদেশ নিজেদের দিনে যে কোন দলকে হারাতে পারে। সেই সময়ে বিশ্ব ক্রিকেটের র‍্যাংকিং-এ বাংলাদেশের কেউ একক রাজত্ব করে বেড়াবে, এমনটা ভাবা যেত না। দলে যখন কিছুটা পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগতে শুরু করেছে, সেই পথ ধরেই সাকিব আল হাসানের অন্তর্ভুক্তি। তারপর?

তারপর শুধুই একজন সাকিবের বিশ্বসেরা হয়ে ওঠে। ধীরে ধীরে হয়ে উঠলেন মিডল অর্ডারে বাংলাদেশের অন্যতম এক ব্যাটিং স্তম্ভ। নির্দিষ্ট জায়গায় টানা বল করে যাওয়ার অসাধারণ পারদর্শিতা তাকে বোলিংয়েও এনে দিল সাফল্য। ২০০৯ এর জানুয়ারিতে ওয়ানডেতে প্রথম বারের মত বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার নির্বাচিত হলেন। পুরো বিশ্ব তখন থেকে বুঝতে শিখলো- হ্যাঁ, আমরাও পারি। ঐ বছরই মাশরাফির ইনজুরিতে দল যখন নেতৃত্ব শঙ্কটে ভুগছে, তখন কাণ্ডারি হয়ে সেই সাকিবই আবির্ভূত হলেন। তার নেতৃত্বেই আসলো ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেস্ট ও ওয়ানডেতে প্রথম হোয়াটয়াশ, জিম্বাবুয়ের মাটিতে প্রথম সিরিজ জয়, নিউজিল্যান্ডকে প্রথম বাংলাওয়াশ এবং বলাই বাহুল্য সবক’টিতেই সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন সাকিব। তাঁর সতীর্থরাও তাকে দেখে বার বার অনুপ্রাণিত হন, যার প্রতিফলন এখন বাংলাদেশ ক্রিকেটে উজ্জ্বল।

এরপর শুধু দেশের ক্রিকেটেই নয়, বিদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটেও তিনি আলো ছড়ালেন। আইপিএল, সিপিএল, বিগ ব্যাশ, কাউন্টি ক্রিকেট, চ্যাম্পিয়ন’স লিগ- সব জায়গাতেই তার সরব উপস্থিতি। যখন ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে তাঁর ৪-১-৬-৬ বোলিং ফিগার দেখে বিশ্বের ক্রিকেট বোদ্ধারা নির্বাক হয়ে যান, বিগ ব্যাশ বা কাউন্টি ক্রিকেটের ধারাভাষ্যকাররা যখন একজন সাকিব এবং সাথে বাংলাদেশ ক্রিকেটেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন, যখন ইডেন গার্ডেনসে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের ফাইনালে ৭০ হাজার দর্শক ‘সাকিব সাকিব’ ধ্বনিতে বুদ হয়ে থাকে তখন আসলে একজন বাংলাদেশি ক্রিকেট ভক্তের আনন্দটা ভাষায় প্রকাশ করার মত থাকে না।

আজ সেই সাকিবই একমাত্র ক্রিকেটার যিনি টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-২০, তিন ফরমেটেই বিশ্বসেরা অল-রাউন্ডার। এক টেস্টে শতরান ও ১০ উইকেট নিয়ে বসেছেন স্যার ইয়ান বোথাম এবং ইমরান খানের মত কিংবদন্তির পাশে। আর বাংলাদেশ ক্রিকেট? সেটা এখন এমনই উচ্চতায় যে পাকিস্তান-ভারতকে হোয়াইটয়াশ করার পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ জয়ের ঘটনাও এখন অনুমেয়ই মনে হয়। বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট নানা সময়ে নানা কিংবদন্তির হাত ধরে বদলে গেছে। গত এক দশকে বাংলাদেশ ক্রিকেটের এই যে অগ্রগতি, সেখানেও কিন্তু সাকিব আল হাসান নামক এক নক্ষত্রের প্রতিচ্ছবি বরাবরই দৃশ্যপটে তাঁর বর্ণিল আলো ছড়িয়ে যায়।