নান্দাইলে বীজতলা ও শ্রমিক সঙ্কটের কারণে বোরো আবাদে কৃষকরা

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে ২২ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ শুরু হয়েছে। তবে শীত উপেক্ষা করে বীজতলা ও শ্রমিক সঙ্কটের কারণে বোরো আবাদে কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু করে ফেব্রয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত বোরো আবাদ সম্পন্ন করা হয় এবং এই বোরো ধান কাটা হয় বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসের মধ্যে।

কিন্তু শৈত্যপ্রবাহের কারণে বীজতলার রোপণকৃত বীজ নষ্ট হয়েছে যার ফলে চারা সঙ্কট রয়েছে। তাই চড়া দামে বীজচারা ও উচ্চ মজুরিতে আবাদে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন নান্দাইলের কৃষকরা। শ্রমিক প্রতি রোজ ৫০০ টাকা করে অথবা প্রতি বিঘা জমিতে চারা লাগাতে এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৬০০ টাকা লাগছে। উপজেলার গাংগাইল ইউনিয়নের কৃষক কাদির মিয়া জানান, গরু-মহিষ না থাকায় পাওয়ারট্রিলার দিয়ে জমি চাষ করলেও মই দেয়া যায় না। তাই মই দিতে নিজেদেরই ব্যবহার করতে হয়।

তবে তেল ও সারের দাম কম থাকলে হয়তো চাষাবাদের খরচ পুষিয়ে উঠা সম্ভব হবে। কৃষক শামীম মিয়া জানান, শ্রমিক পাওয়া যায় না বলেই নিজেরাই বীজতলা, জমি প্রস্তুতসহ চারা রোপণ করছি। কারণ জমি তো চাষ করতে হবে তা না হলে জমি নষ্ট হবে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ধান চাষ না করলে না খেয়ে মরতে হবে। অপর দিকে শ্রমিক হেলাল উদ্দিন বলেন, এই শীতে কাদামাটি জমিতে কাজ করলে শরীরের অবস্থা খারাপ তো হতে পারে। আবার সবকিছু জিনিসের দাম বাড়তি।

উপজেলা কৃষি অফিসার মো. নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন ২২ হাজার ১৫ হেক্টর জমিতে বোর ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলে। স্থানীয় জাত ৭৫ হেক্টর, উচ্চ ফলনশীল ২০ হাজার ২২০ হেক্টর এবং হাইব্রিড এক হাজার ৭২০ হেক্টর জমিতে বোর ধান চাষ অব্যাহত রয়েছে। এতে করে ৮৭ হাজার ৭৮৯ মেট্রিক টন ধান নান্দাইলে উৎপাদিত হবে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য নান্দাইল কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। অপর দিকে, চলতি বোর মৌসুমে নান্দাইলে চার হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে।

কৃষি অফিসার মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান বিসিআইসি ১৩ জন ডিলার পৌরসভাসহ ১২ ইউনিয়নে ১১৭ জন তালিকাভ‚ক্ত খুচরা সার বিক্রেতা রয়েছেন। জনগণের চাহিদা মোতাবেক তারা সার সরবরাহ করে যাচ্ছেন। উপ-সহকারী কৃষি অফিসারগণ বিষয়টি নিয়মিত তদারকি করে যাচ্ছেন। বর্তমানে সারা নান্দাইলে কৃষকরা বোরো জমিতে চাষাবাদ অব্যাহত রেখেছেন। কৃষকরা বলেন, পানি সেচের বিষয়টি ভালো হলে এবং নিয়মিত বিদ্যুৎ সরবরাহসহ সময়মতো সার ও জমি পরিচর্যা করলে ভালো ফলনের আশা করা যায়।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর