প্রতিবন্ধকতায় হার মানেনি সাদ

হাওর বার্তা ডেস্কঃ চলতি এসএসসি পরীক্ষায়‘চকএনায়েত উচ্চ বিদ্যালয়’থেকে অংশ নিয়েছে আল ইয়ামি সাদ। অন্য দশ জনের মতো স্বাভাবিকভাবে হাটাচলা করতে পারেনা। এমনকি কথাও অস্পষ্টতা। ভ্যানে করে মায়ের সঙ্গে পরীক্ষায় অংশ নিতে এসেছে নওগাঁ জিলা স্কুলে। বাড়ি শহরের কাজীর মোড় মহল্লায়।

সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১ টা (৩ঘন্টা) পর্যন্ত পরীক্ষা হলেও আল ইয়ামি সাদ এর জন্য ৩০ মিনিট বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার ছিল ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষা। নির্ধারীত সময়ের পর কেন্দ্র থেকে সব পরীক্ষার্থী বেরিয়ে গেছে। নওগাঁ জিলা স্কুলের হলরুমের পিছনের বেঞ্চে একাই বসে তখনও পরীক্ষা দিচ্ছে আল ইয়ামি সাদ। মানবিক বিভাগ থেকে অংশ নিয়েছে সে। ছবি উঠানোর জন্য কেন্দ্র সচীবকে অনুরোধ করা হলে তিনি সম্মতি দেন। তখনও সে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পরীক্ষার খাতায় সম্পন্ন উত্তর লিখতে। হাতের আঙ্গুলগুলো বাঁকানো। তারপর আবার বাম হাতে দুই আঙ্গুল দিয়ে লেখা।

দেড়টার দিকে পরীক্ষা শেষে মায়ের ঘাড়ে ভর করে ভ্যানে চড়ে বসে। কথা হয় তার সাথে। পা দুটো বাঁকা ও শক্তি তেমন না থাকায় হাটতে পারেনা।

আল ইয়ামি সাদ জানায়, চারটি পরীক্ষায় ভাল হয়েছে। বেশি ভাল হয়েছে ইংরেজি। কারণ ইংরেজি পছন্দ করি। গণিত নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। মনে রাখতে পারিনা। জানিনা কি হবে। জেএসসিতে জিপিএ ৪ দশমিক ৮ এবং পিএসসিতে জিপিএ ৪ দশমিক ৬ পেয়েছি। বই পড়তে বেশি পছন্দ করি। পছন্দের লেখক হুমায়ুন আহমেদ। ভবিষ্যতে বড় অফিসার হওয়ার স্বপ্ন।

আল ইয়ামি সাদের মা হিরা ইসলাম বলেন, জন্মের তিন মাস পর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। এরপর দুইজন ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেয়া হয়। ভুল চিকিৎসার কারণেই হয়তো আজ এ অবস্থা। তারপরও আল্লাহর কাছে শুকরিয়া। যা আছে তাই নিয়ে সন্তুষ্ট। আমার ছেলেকে শিক্ষিত করতে চাই। লোকে অনেক কথায় বলেন। কোনো কথায় কান দেই না।

নওগাঁ চকএনায়েত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেজাউল আলম বলেন, আল ইয়ামি সাদ ছাত্র হিসেবে মেধাবি। ছোট অবস্থায় তার মা কোলে করে স্কুলে নিয়ে আসত। খুবই অসহায় মনে হয়। নিজেকেও খারাপ লাগে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর