হাওর বার্তা ডেস্কঃ ফরিদপুরের ভাঙ্গায় চলতি মৌসুমে ব্যাপক সরিষার আবাদ করা হয়েছে। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মাঠে মাঠে এখন হলুদের গালিচা। যেদিকে চোখ যায়, এ এক নয়নাভিরাম দৃশ্য। সরিষা ফুলের মৌ মৌ করা গন্ধ, মৌমাছির গুঞ্জন ও পাখপাখালির কিঁচিরমিঁচির ডাকে পল্লী-প্রকৃতির চিরচেনা রূপ সবাইকেই আকর্ষণ করে।
গ্রামের মাঠ ছাপিয়ে গ্রাম্যসড়ক ও মহাসড়কের পাশেও চোখে পড়ছে সরিষা ফুলের মনোরম দৃশ্য।
পড়ন্ত বিকেলে অস্তগামী সূর্যের সাথে হলুদ সরিষার চাদরের প্রান্তজুড়ে অনেকেই এ দৃশ্য সেলুলয়েডের ফ্রেমে বন্দী করে রাখছেন। উপজেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে মাঠের পর মাঠ সরিষার আবাদ করা হয়েছে। কৃষকরা এখন সরিষার পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সময় সার, নিড়ানী দেয়াসহ পোকামাকড় দমনের জন্য কিছুটা বাড়তি পরিচর্যার প্রয়োজন হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর ভাঙ্গা উপজেলায় এক হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল এক হাজার ২৬০ হেক্টর। অসময়ে বৃষ্টিপাতের ফলে কৃষকরা এ বছর সরিষা কিছুটা কম আবাদ করেছেন। তবে এলাকার কৃষকরা জানান, এ বছর সরিষা চাষের মাধ্যমে তারা ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন। এলাকার মাটি ও আবহাওয়া সরিষা আবাদের জন্য যথেষ্ঠ অনুক‚ল।
কৃষি বিভাগের সার্বিক সহযোগিতা এবং সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগের ফলে তারা সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন। এলাকার কৃষকরা জানান, বেশির ভাগ কৃষক বারী-১৫, বারী-১৪ ও টরি-৭ জাতের সরিষার আবাদ করেছেন। উপজেলার সাউতিকান্দা গ্রামের কৃষক সিরাজ মাতুব্বর জানান, তিনি তিন বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন; হলুদ সরিষায় ক্ষেত ভরে উঠেছে, তিনি সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন। উপজেলার চৌকিঘাটা গ্রামের কৃষক আক্কাছ আলী জানান, আমি তিন বিঘা জমিতে উন্নতজাতের সরিষার আবাদ করেছি, আবহাওয়া ভালো থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছি।
একইভাবে কথা হয় উপজেলার তুজারপুর গ্রামের কৃষক আমির হোসেন ও রশিবপুরা গ্রামের কৃষক কামাল মিয়ার সাথে। তারাও এ বছর সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন। এ ব্যাপারে ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার মো. ওয়াহিদুজ্জামানের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, অসময়ে বৃষ্টিপাতের ফলে যদিও কিছুটা সরিষার আবাদ কম হয়েছে, তবুও চলতি বছর উপযুক্ত মাটি ও অনুক‚ল আবহাওয়ার কারণে কৃষকদের জমি সরিষার ফুলে ফুলে ভরে উঠেছে। কৃষি বিভাগের সার্বিক তদারকি, পরামর্শ, সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগের ফলে আশা করছি, এ বছর কৃষকরা সরিষার বাম্পার ফলন পাবেন।