ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, গরু, মহিষ ও উট- এ ছয় ধরনের পশু দ্বারা কোরবানি দিতে হবে। এছাড়া অন্য কোনো পশু দ্বারা কোরবানি করা বৈধ নয়। কোরআন-হাদিসে কোরবানির পশু সম্পর্কে যে নির্দেশনা রয়েছে এখানে তা তুলে ধরা হলো:
১. ছাগল, ভেড়া, দুম্বা কমপক্ষে পূর্ণ এক বছর বয়সের হতে হবে। এর চেয়ে কম বয়সের ছাগল, ভেড়া, দুম্বা যদি এমন মোটাতাজা হয় যে, এক বছর বয়সীদের মধ্যে ছেড়ে দিলে তাদের চেয়ে ছোট মনে হয় না, তাহলে এর দ্বারা কোরবানি জায়েজ আছে। তবে অন্তত ছয় মাস বয়স হতেই হবে।
২. গরু ও মহিষের বয়স কমপক্ষে দুই বছর হতে হবে। ৩. উটের বয়স কমপক্ষে পাঁচ বছর হতে হবে। ৪. কোরবানির পশু হৃষ্টপুষ্ট হওয়া উত্তম। ৫. যে পশু লেংড়া অর্থাৎ যা তিন পায়ে চলতে পারে, এক পা মাটিতে রাখতে পারে না বা রাখতে পারলেও ভর করতে পারে না- এরূপ পশু দ্বারা কোরবানি হবে না। ৬. যে পশুর একটিও দাঁত নেই, এর দ্বারা কোরবানি হবে না। ৭. যে পশুর কান জন্ম থেকে নেই, এর দ্বারা কোরবানি হবে না। ৮. যে পশুর শিং মূল থেকে ভেঙে যায়, এর দ্বারা কোরবানি হবে না। তবে শিং গজায়ইনি বা কিছু পরিমাণ ভেঙে গেছে- এমন পশু দ্বারা কোরবানি জায়েজ আছে। ৯. যে পশু দুই চোখের কোনো চোখেই দেখে না বা একটি চোখের দৃষ্টিশক্তি এক-তৃতীয়াংশ বা তার বেশি নষ্ট, তা দ্বারা কোরবানি জায়েজ নেই।
১০. যে পশুর একটি কান বা লেজের এক-তৃতীয়াংশ কিংবা এর চেয়ে বেশি কেটে গেছে- এমন পশু দ্বারা কোরবানি হবে না। ১১. যে পশু জবাই করার স্থান পর্যন্ত হেঁটে যেতে পারে না- এমন কৃশকায় ও দুর্বল পশু দ্বারা কোরবানি হবে না। ১২. পছন্দসই ভালো পশু কেনার পর এমন দোষত্রুটি দেখা দিয়েছে যার কারণে কোরবানি বিশুদ্ধ হয় না, এমন হলে সেটি দিয়েই কোরবানি চলবে।
১৩. গর্ভবতী পশু কোরবানি করা জায়েজ। যদি পেটের বাচ্চা জীবিত পাওয়া যায় তাহলে সে বাচ্চাও জবাই করে দিতে হবে। তবে প্রসবের নিকটবর্তী পশু কোরবানি দেয়া মাকরুহ। ১৪. বন্ধ্যা পশু কোরবানি করা জায়েজ আছে। ১৫. হজরত বারা ইবনে আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের সামনে এসে দাঁড়ালেন তারপর বললেন, চার ধরনের পশু দিয়ে কোরবানি জায়েজ হবে না। অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছে পরিপূর্ণ হবে না- ক. অন্ধ; যার অন্ধত্ব স্পষ্ট। খ. রোগাক্রান্ত; যার রোগ স্পষ্ট। গ. পঙ্গু; যার পঙ্গুত্ব স্পষ্ট এবং ঘ. আহত বা পাগল; যার কোনো অঙ্গ ভেঙে গেছে বা পশু পাগল হয়ে গেছে। (তিরমিজি, নাসাঈ)।