ঢাকা ০২:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রোহিঙ্গারা ফিরতে না চাইলে জোর করে পাঠানো ঠিক নয়

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১১:৪৮:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৩৩৫ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোহিঙ্গাদের জোর করে মিয়ানমারে পাঠানো হতে পারে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সংস্থাটি বলেছে, রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে না চাইলে তাদেরকে জোর করে সেখানে পাঠানো ঠিক হবে না। ইউএনএইচসিআর বলেছে, মিয়ানমারে পাঠানোর আগে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে সেখানকার প্রকৃত অবস্থা জানাতে হবে। এরপর তারা স্বেচ্ছায় যেতে চাইলে তাদেরকে সেখানে পাঠানো যেতে পারে।

মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পর তারা যাতে আবারও হত্যা-নির্যাতনের শিকার না হয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। এর আগে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক ডেভিড বিজলি বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর মতো পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি হয়নি। এরইমধ্যে অভিযোগ উঠেছে, মিয়ানমার কৌশলে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে বসবাসের অনুপযোগী ক্যাম্পগুলোতে বন্দি করে ফেলতে চাইছে।

এদিকে, এছাড়া মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর আগে নিরাপত্তা ও নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলমানেরা। গত সোমবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর সদস্যরা বিভিন্ন দাবিতে সমাবেশ করেছে। সমাবেশে অংশ নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী মুহাম্মাদ মুসলমান বলেছেন, রোহিঙ্গাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নাগরিকত্ব দিতে হবে। অন্যথায় মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া সম্ভব নয়।

সেখানে বসবাসকারী ২০ হাজার রোহিঙ্গার স্বাক্ষর সম্বলিত এ সংক্রান্ত একটি আবেদপত্র কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া হবে বলে তিনি জানান। অপরদিকে, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে আগের মতোই হত্যা-নির্যাতনের শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাবিউ)। সংগঠনটির এশিয়া অঞ্চলের উপ-প্রধান ফিল রবার্টসন বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মিয়ানমারে ফেরার পথেই হত্যা-নির্যাতনের শিকার হতে পারে।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক কোনো নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করা হয়নি বলে তিনি জানান। ফিল রবার্টসন আরও বলেছেন, যে পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গারা তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন আবারও যে সে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। মিয়ানমারে প্রবেশের পরই তারা আগের মতো পরিস্থিতির শিকার হতে পারেন বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি এক চুক্তির আওতায় রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার কথা বলছে মিয়ানমার। কিন্তু রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে তাদের বসতভিটায় নয় বরং কাঁটা তারে ঘেরা শরণার্থী শিবিরে রাখা হবে। এ কারণে রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে রাজি নন।

শরণার্থী মুহাম্মাদ মুসলমান আরও বলেছেন, তাদের স্বজনদের অনেককেই হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা। এখন যারা ফেরত যাবে তাদেরকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হতে পারে। জীবন বাঁচাতে যেখান থেকে তারা পালিয়ে এসেছেন সেখানে কোন আশায় আবার ফেরত যাবেন তারা-এ প্রশ্ন করেন তিনি। এর আগে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলেছে, মিয়ানমারে পাঠানোর আগে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে সেখানকার প্রকৃত অবস্থা জানাতে হবে।

এরপর তারা স্বেচ্ছায় যেতে চাইলে তাদেরকে সেখানে পাঠানো যেতে পারে। মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পর তারা যাতে আবারও হত্যা-নির্যাতনের শিকার না হয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। এর আগে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক ডেভিড বিজলি বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর মতো পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি হয়নি। এরইমধ্যে অভিযোগ উঠেছে, মিয়ানমার কৌশলে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে বসবাসের অনুপযোগী ক্যাম্পগুলোতে বন্দি করে ফেলতে চাইছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

রোহিঙ্গারা ফিরতে না চাইলে জোর করে পাঠানো ঠিক নয়

আপডেট টাইম : ১১:৪৮:০৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩১ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ রোহিঙ্গাদের জোর করে মিয়ানমারে পাঠানো হতে পারে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। সংস্থাটি বলেছে, রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে না চাইলে তাদেরকে জোর করে সেখানে পাঠানো ঠিক হবে না। ইউএনএইচসিআর বলেছে, মিয়ানমারে পাঠানোর আগে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে সেখানকার প্রকৃত অবস্থা জানাতে হবে। এরপর তারা স্বেচ্ছায় যেতে চাইলে তাদেরকে সেখানে পাঠানো যেতে পারে।

মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পর তারা যাতে আবারও হত্যা-নির্যাতনের শিকার না হয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। এর আগে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক ডেভিড বিজলি বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর মতো পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি হয়নি। এরইমধ্যে অভিযোগ উঠেছে, মিয়ানমার কৌশলে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে বসবাসের অনুপযোগী ক্যাম্পগুলোতে বন্দি করে ফেলতে চাইছে।

এদিকে, এছাড়া মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর আগে নিরাপত্তা ও নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গা মুসলমানেরা। গত সোমবার কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর সদস্যরা বিভিন্ন দাবিতে সমাবেশ করেছে। সমাবেশে অংশ নেয়া রোহিঙ্গা শরণার্থী মুহাম্মাদ মুসলমান বলেছেন, রোহিঙ্গাদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি নাগরিকত্ব দিতে হবে। অন্যথায় মিয়ানমারে ফেরত যাওয়া সম্ভব নয়।

সেখানে বসবাসকারী ২০ হাজার রোহিঙ্গার স্বাক্ষর সম্বলিত এ সংক্রান্ত একটি আবেদপত্র কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দেয়া হবে বলে তিনি জানান। অপরদিকে, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মিয়ানমারে ফিরে গিয়ে আগের মতোই হত্যা-নির্যাতনের শিকার হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাবিউ)। সংগঠনটির এশিয়া অঞ্চলের উপ-প্রধান ফিল রবার্টসন বলেছেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীরা মিয়ানমারে ফেরার পথেই হত্যা-নির্যাতনের শিকার হতে পারে।

এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক কোনো নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করা হয়নি বলে তিনি জানান। ফিল রবার্টসন আরও বলেছেন, যে পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গারা তাদের ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন আবারও যে সে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। মিয়ানমারে প্রবেশের পরই তারা আগের মতো পরিস্থিতির শিকার হতে পারেন বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সম্প্রতি এক চুক্তির আওতায় রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার কথা বলছে মিয়ানমার। কিন্তু রোহিঙ্গা মুসলমানদেরকে তাদের বসতভিটায় নয় বরং কাঁটা তারে ঘেরা শরণার্থী শিবিরে রাখা হবে। এ কারণে রোহিঙ্গারা দেশে ফিরতে রাজি নন।

শরণার্থী মুহাম্মাদ মুসলমান আরও বলেছেন, তাদের স্বজনদের অনেককেই হত্যা করেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও উগ্র বৌদ্ধরা। এখন যারা ফেরত যাবে তাদেরকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হতে পারে। জীবন বাঁচাতে যেখান থেকে তারা পালিয়ে এসেছেন সেখানে কোন আশায় আবার ফেরত যাবেন তারা-এ প্রশ্ন করেন তিনি। এর আগে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলেছে, মিয়ানমারে পাঠানোর আগে রোহিঙ্গা শরণার্থীদেরকে সেখানকার প্রকৃত অবস্থা জানাতে হবে।

এরপর তারা স্বেচ্ছায় যেতে চাইলে তাদেরকে সেখানে পাঠানো যেতে পারে। মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার পর তারা যাতে আবারও হত্যা-নির্যাতনের শিকার না হয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করতে হবে। এর আগে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পরিচালক ডেভিড বিজলি বলেছেন, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ফেরত পাঠানোর মতো পরিস্থিতি এখনও সৃষ্টি হয়নি। এরইমধ্যে অভিযোগ উঠেছে, মিয়ানমার কৌশলে রোহিঙ্গাদের ফেরত নিয়ে বসবাসের অনুপযোগী ক্যাম্পগুলোতে বন্দি করে ফেলতে চাইছে।