হাওর বারতা ডেস্কঃ ভারতের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কেন্দ্র নয়াদিল্লির সঙ্গে বিএনপি যোগাযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছে বলে সংবাদ প্রকাশ করেছে পশ্চিমবঙ্গের প্রভাবশালী দৈনিক আনন্দবাজার। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই এই চেষ্টা বলে জানিয়েছে তারা। কূটনৈতিক সূত্রের খবর দিয়ে প্রকাশিক এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে গদি ধরে রাখতে কৌশল রচনা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আবার আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিয়ে ক্ষমতা দখলে মরিয়া বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামি জোটের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।
আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মোদি সরকারের কাছে বার্তা পৌঁছাতে বিজেপির সহযোগী উগ্রবাদী হিন্দুত্ববাদী সংগঠন রাষ্ট্রীয় সেবক সংঘ বা আরএসএসকে মাধ্যম করছে বিএনপি-জামায়াত জোট।
আরএসএস বিজেপির সঙ্গে জোটবদ্ধ এবং তারা বিজেপির চেয়ে কট্টর মৌলবাদী শক্তি। ৯০ দশকে বাবরি মসজিদ ভাঙার ঘটনায় সামনে ছিল এদের নেতা-কর্মীরাই।
খালেদা জিয়া যে বার্তাটি মোদি সরকারের কাছে পৌঁছাতে চাইছেন সেটা হলো, শুধুমাত্র ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রতি কূটনৈতিক পক্ষপাত বহাল না-রেখে তাঁদের সঙ্গেও একটা বোঝাপড়ার দিকে এগোক বিজোপ সরকার।
নয়াদিল্লিকে এটা বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে, বিএনপি তাদের কর্মসূচিতে সর্বদা বাণিজ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছে। ক্ষমতায় এলে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে নানা ধরনের ছাড়া দেবে তারা। পাশাপাশি বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অধিকারের বিষয়টি নিয়েও এবার তারা তৎপর হতে চায়।
সুনির্দিষ্ট কারও বক্তব্য উল্লেখ না করে সূত্রের খবর হিসেবে উল্লেখ করা ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ভারতের নাগপুরে আরএসএস-এর একটি অংশের সঙ্গে বিএনপি-র কয়েক জন প্রতিনিধি সম্প্রতি দেখা করেছেন। তা ছাড়া গত বছরের শেষে খালেদা জিয়া যখন লন্ডনে যান, সেখানেও সঙ্ঘের প্রবাসী কিছু নেতার সঙ্গে কথা হয় তাঁর।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে এসব বৈঠকের বিষয়ে কোনো স্বীকৃতি পাওয়া যায়নি বলেও প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আর বিএনপিও এ বিষয়ে চুপ।
আরএসএস সূত্রের উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দিল্লির সঙ্গে বোঝাপড়ায় আগ্রহী বলে জানিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তারা মোদী সরকারকে বোঝানোর চেষ্টা করছে, হাসিনা সরকারের সময়ই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর সব চেয়ে বেশি অত্যাচার হয়েছে এবং এখনও হয়ে চলেছে। মন্ত্রিসভায় অথবা জাতীয় সংসদে সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব নামমাত্র।
বিএনপি ঘরোয়া ভাবে এ কথাও আরএসএস-কে জানিয়েছে যে তারা অন্তত ৫০ জন সংখ্যালঘু প্রার্থীকে আগামী ভোটে প্রার্থী করতে ইচ্ছুক। ক্ষমতায় এলে মন্ত্রিসভায় হিন্দু প্রতিনিধিত্বও এখনকার থেকে বেশ খানিকটা বেশি থাকবে।
খালেদা জিয়া গত নভেম্বরে চোখের চিকিৎসার জন্য লন্ডন গেলেও আনন্দবাজার ‘দাঁতের চিকিৎসা’র জন্য গিয়েছিলেন বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। গোয়েন্দা সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডনে গিয়ে খালেদা জিয়া পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর কর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছেন। লন্ডনের পাকিস্তান হাই কমিশনের কর্তাদের সঙ্গেও অনেক বার বৈঠকে বসেছিলেন তিনি।
মোদি সরকার বাংলাদেশের দিকে সতর্ক নজর রাখছে বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।