ঢাকা ০৪:২৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিলাসিতায় সবাইকে ছাড়িয়ে কিম জং উন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:১৭:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৮
  • ৩৫১ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বে ধনীরাই বিলাসী জীবনযাপন করে থাকেন। তাদের ৩১ শতাংশই দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। ৪৫ শতাংশের বেড়ে ওঠা মধ্যবিত্ত ঘরে। তাদের মধ্যে কেবল ২৪ শতাংশ পরিবার থেকে সম্পত্তি পেয়েছেন। ধনীদের বেশির ভাগই বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত। কেউ ব্যবহার করেন সোনার সিঁড়ি, আবার কেউ ব্যবহার করেন সুপার কার। যেখানে বিলাসিতার ব্যাপারে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। চলুন জেনে নিই তার বিলাসী জীবন সম্পর্কে-

কিম জং উন কোথায় থাকেন বা উনার বাসস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট জবাব দেওয়াটাও কষ্টকর। কারণ দেশজুড়ে তার ১৭টি প্রাসাদ আছে। আছে তার সম্পূর্ণ নিজস্ব একটি দ্বীপ। সেখানে তিনি প্রায়ই সময় কাটাতে যান। এক কথায় পৃথিবীর বুকেই তিনি বানিয়ে নিয়েছেন স্বর্গ।

তিনি প্রচুর মদ পান করেন। তিনি এবং তার অভিজাত নিকটজনদের জন্য শুধু মদ আমদানি করতেই বছরে ৩০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় করেন। এই খরচ বহন করে সরকারি কোষাগার। হেনেসির মতো দামি ব্র্যান্ডের হুইস্কি ছাড়া তার চলে না। শুনলে অবাক হবেন, তার প্রতি রাতের প্রতি বোতল হুইস্কির দাম দুই হাজার ডলারেরও বেশি।

খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও তার রয়েছে ব্যাপক বাছ-বিচার! তার খাবার-দাবার আসে একেক দেশ থেকে। ডেনমার্ক থেকে আসে মানসম্মত পোর্ক, ইরান থেকে আসে ক্যাভিয়ার, চীন থেকে আসে তরমুজ, আর গোমাংস থেকে তৈরি জাপানের অত্যন্ত সুস্বাদু ‘কোবে’ পছন্দ কিমের।

কিম জং উন ধূমপায়ী। এ ক্ষেত্রে তার পছন্দ বাহারি ফ্রেঞ্চ সিগারেট। সিগারেটের পেছনে অনেক খরচ করেন তিনি। ফরাসি কোম্পানি দ্য ইয়েভস সেইন্ট লরেন্টের বানানো সিগারেট তার পছন্দ। প্রতি পিস সিগারেটের দাম শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠবে। প্রতি পিসের দাম ৪৪ ডলার করে। আর এই সিগারেট বহনের জন্য যেই চামড়ায় তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করা হয় তার দাম ১৪৪ ডলার।

সমুদ্রের বুকে উদ্দাম গতিতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য তার রয়েছে বিলাসবহুল ইয়ট। প্রায় আট মিলিয়ন ডলার মূল্যের নিজস্ব ইয়াট নিয়ে সমুদ্রে দাপিয়ে বেড়ান কিম। ডিজনি বোট আর ফেরির একটি চমৎকার সমন্বয়ে এই ইয়ট।

উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রেও কিম জং উন বিলাসী। ২০০৯ সালে রি সোন-জুনকে বিয়ে করার পর থেকেই রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থে একের পর এক উপহার কিনে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ক্রিশ্চিয়ান ডিওরের যে হাতব্যাগ মিসেস উন ব্যবহার করছেন, তার মূল্য এক হাজার ৪৫৭ ডলার। যেখানে একজন উত্তর কোরিয়ানের বার্ষিক গড় আয় ১৮০০ ডলার।

কিম জং উনের সিনেমা দেখার জন্য আছে এক হাজার আসন বিশিষ্ট আলাদা একটা বিলাসবহুল সিনেমা হল। আর এই হলের রক্ষণাবেক্ষণের পেছনে বছরে ব্যয় হয় কয়েক হাজার ডলার।

কিমের প্রিয় খেলা স্কি। আর এজন্য ৩৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ক্রিয়ং স্কি রিসোর্ট তৈরি করা হয়েছে। ডেইলি মেইলের তথ্যমতে, কিম নিজেও এই স্কি রিসোর্টকে নিখুঁত বলে গর্ব করেন। এই স্কি রিসোর্ট খোলা রাখার জন্য উত্তর কোরিয়া নির্ভর করে নিষ্ঠুর শিশুশ্রমের ওপর। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কাজ করে সেখানে অনেক শিশু। এই শিশুদের মধ্যে ১১ থেকে ১২ বছরের অনেকেই রয়েছে।

দামি দামি ঘড়ি সংগ্রহ করারবাতিক আছে কিম জং উনের। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের তথ্য অনুযায়ী, কিম জং উনের ব্যক্তিগত ঘড়ির সংগ্রহের যে মোট দাম, তা প্রায় ৮.২ মিলিয়ন ডলার। অথচ উত্তর কোরিয়ার সাধারণ জনগণের পরিস্থিতি কিন্তু পুরো উলটো। সরকারের পক্ষ থেকে আসা নামমাত্র রেশনের ওপর নির্ভরশীল বেশির ভাগ মানুষ। ২০১৫ সালের আগস্টের এক হিসাব অনুযায়ী, খাদ্য হিসাবে প্রতি সাধারণ উত্তর কোরীয় নাগরিকের জন্য দৈনিক বরাদ্দ ২৫০ গ্রাম শস্যদানা। প্রোটিন এবং শুকনো মাছ বা স্কুইডের মতো খাবার অত্যন্ত দুর্লভ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

বিলাসিতায় সবাইকে ছাড়িয়ে কিম জং উন

আপডেট টাইম : ১২:১৭:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ বিশ্বে ধনীরাই বিলাসী জীবনযাপন করে থাকেন। তাদের ৩১ শতাংশই দরিদ্র পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। ৪৫ শতাংশের বেড়ে ওঠা মধ্যবিত্ত ঘরে। তাদের মধ্যে কেবল ২৪ শতাংশ পরিবার থেকে সম্পত্তি পেয়েছেন। ধনীদের বেশির ভাগই বিলাসী জীবনযাপনে অভ্যস্ত। কেউ ব্যবহার করেন সোনার সিঁড়ি, আবার কেউ ব্যবহার করেন সুপার কার। যেখানে বিলাসিতার ব্যাপারে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন ছাড়িয়ে গেছেন সবাইকে। চলুন জেনে নিই তার বিলাসী জীবন সম্পর্কে-

কিম জং উন কোথায় থাকেন বা উনার বাসস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট জবাব দেওয়াটাও কষ্টকর। কারণ দেশজুড়ে তার ১৭টি প্রাসাদ আছে। আছে তার সম্পূর্ণ নিজস্ব একটি দ্বীপ। সেখানে তিনি প্রায়ই সময় কাটাতে যান। এক কথায় পৃথিবীর বুকেই তিনি বানিয়ে নিয়েছেন স্বর্গ।

তিনি প্রচুর মদ পান করেন। তিনি এবং তার অভিজাত নিকটজনদের জন্য শুধু মদ আমদানি করতেই বছরে ৩০ মিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় করেন। এই খরচ বহন করে সরকারি কোষাগার। হেনেসির মতো দামি ব্র্যান্ডের হুইস্কি ছাড়া তার চলে না। শুনলে অবাক হবেন, তার প্রতি রাতের প্রতি বোতল হুইস্কির দাম দুই হাজার ডলারেরও বেশি।

খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও তার রয়েছে ব্যাপক বাছ-বিচার! তার খাবার-দাবার আসে একেক দেশ থেকে। ডেনমার্ক থেকে আসে মানসম্মত পোর্ক, ইরান থেকে আসে ক্যাভিয়ার, চীন থেকে আসে তরমুজ, আর গোমাংস থেকে তৈরি জাপানের অত্যন্ত সুস্বাদু ‘কোবে’ পছন্দ কিমের।

কিম জং উন ধূমপায়ী। এ ক্ষেত্রে তার পছন্দ বাহারি ফ্রেঞ্চ সিগারেট। সিগারেটের পেছনে অনেক খরচ করেন তিনি। ফরাসি কোম্পানি দ্য ইয়েভস সেইন্ট লরেন্টের বানানো সিগারেট তার পছন্দ। প্রতি পিস সিগারেটের দাম শুনলে আপনার চোখ কপালে উঠবে। প্রতি পিসের দাম ৪৪ ডলার করে। আর এই সিগারেট বহনের জন্য যেই চামড়ায় তৈরি ব্যাগ ব্যবহার করা হয় তার দাম ১৪৪ ডলার।

সমুদ্রের বুকে উদ্দাম গতিতে ঘুরে বেড়ানোর জন্য তার রয়েছে বিলাসবহুল ইয়ট। প্রায় আট মিলিয়ন ডলার মূল্যের নিজস্ব ইয়াট নিয়ে সমুদ্রে দাপিয়ে বেড়ান কিম। ডিজনি বোট আর ফেরির একটি চমৎকার সমন্বয়ে এই ইয়ট।

উপহার দেওয়ার ক্ষেত্রেও কিম জং উন বিলাসী। ২০০৯ সালে রি সোন-জুনকে বিয়ে করার পর থেকেই রাষ্ট্রীয় কোষাগারের অর্থে একের পর এক উপহার কিনে দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ক্রিশ্চিয়ান ডিওরের যে হাতব্যাগ মিসেস উন ব্যবহার করছেন, তার মূল্য এক হাজার ৪৫৭ ডলার। যেখানে একজন উত্তর কোরিয়ানের বার্ষিক গড় আয় ১৮০০ ডলার।

কিম জং উনের সিনেমা দেখার জন্য আছে এক হাজার আসন বিশিষ্ট আলাদা একটা বিলাসবহুল সিনেমা হল। আর এই হলের রক্ষণাবেক্ষণের পেছনে বছরে ব্যয় হয় কয়েক হাজার ডলার।

কিমের প্রিয় খেলা স্কি। আর এজন্য ৩৫ মিলিয়ন ডলার খরচ করে ক্রিয়ং স্কি রিসোর্ট তৈরি করা হয়েছে। ডেইলি মেইলের তথ্যমতে, কিম নিজেও এই স্কি রিসোর্টকে নিখুঁত বলে গর্ব করেন। এই স্কি রিসোর্ট খোলা রাখার জন্য উত্তর কোরিয়া নির্ভর করে নিষ্ঠুর শিশুশ্রমের ওপর। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কাজ করে সেখানে অনেক শিশু। এই শিশুদের মধ্যে ১১ থেকে ১২ বছরের অনেকেই রয়েছে।

দামি দামি ঘড়ি সংগ্রহ করারবাতিক আছে কিম জং উনের। ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফের তথ্য অনুযায়ী, কিম জং উনের ব্যক্তিগত ঘড়ির সংগ্রহের যে মোট দাম, তা প্রায় ৮.২ মিলিয়ন ডলার। অথচ উত্তর কোরিয়ার সাধারণ জনগণের পরিস্থিতি কিন্তু পুরো উলটো। সরকারের পক্ষ থেকে আসা নামমাত্র রেশনের ওপর নির্ভরশীল বেশির ভাগ মানুষ। ২০১৫ সালের আগস্টের এক হিসাব অনুযায়ী, খাদ্য হিসাবে প্রতি সাধারণ উত্তর কোরীয় নাগরিকের জন্য দৈনিক বরাদ্দ ২৫০ গ্রাম শস্যদানা। প্রোটিন এবং শুকনো মাছ বা স্কুইডের মতো খাবার অত্যন্ত দুর্লভ।