ঢাকা ০৮:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫, ১৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অ্যালোভেরা জেলির যে সব রোগের ওষুধ

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ১২:৪২:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০১৮
  • ২৪৯ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অ্যালো ভেরার ব্যবহার বেশ কয়েক শতাব্দি ধরে হয়ে আসলেও এই প্রাকৃতিক উপাদানটিকে কাজে লাগিয়ে যে আরও অনেক শারীরিক উপকার পাওয়া যায়। বর্তমানে যে হারে ক্যান্সার সহ একাধিক মারণ রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে অ্যালো ভেরা জেল খাওয়া প্রয়োজন যে বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। প্রতিদিন আমাদের ঘিরে ধরছে নানা ক্রনিক ডিজিজ।

যেমন ধরুন, পরিবেশ দূষণের কারণে একদিকে বাড়ছে ফুসফুসের নানা রোগ, অন্যদিকে আমাদের অনিয়ন্ত্রিত জীবন, নানবিধ নেশার প্রতি আকর্ষণ এবং অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দেওয়া থেকে বিরত থাকার কারণে শরীরে এসে বাসা বাঁধছে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে শরীরকে যদি রোগের খপ্পর থেকে দূরে থাকতে চান,তাহলে অ্যালো ভেরা জেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে ভুলবেন না যেন!

প্রাচীনকালে লেখা একাধিক আয়ুর্বেদ গ্রন্থের দিকে নজর ফেরালে জানতে পারবেন সেই কোন কাল থেকে নানাবিধ রোগের চিকিৎসায় অ্যালো ভেরা জেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। অ্যালো ভেরা জেলের নানা উপকারিতার বিষয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করা হবে। প্রসঙ্গত, নিয়মিত অল্প করে অ্যালো ভেরার রস খাওয়া শুরু করলে সাধারণত যে যে উপকারিতাগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি হল :

১. ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি দূর হয়:
বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপদানটি খাওয়া শুরু করলে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতিও দূর হতে থাকে। প্রসঙ্গত, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল সেই উপাদান, যা আমাদের শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, অ্যালো ভেরা জেলকে যদি তুলসি, করলা অথবা আমলকির রসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে আরও বেশি উপকার মেলে। সেক্ষেত্রে ভিতর এবং বাইরে থেকে শরীরের ক্ষমতা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।

২. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
শীত মানেই পিকনিক, সেই সঙ্গে এদিক-সেদিকের খাবার খাওয়া তো রোজের নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়েছে। আর এমনটা করতে গিয়ে কি পেটের হাল বেজায় বেহাল হয়ে পরেছে? তাহলে তো বন্ধু আজ থেকেই অ্যালো ভেরা জুস খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করার পর পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বদ-হজমের মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বল, অ্যাসিডিটি এবং কনস্টিপেশনের মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে। এবার বুঝেছেন তো খাদ্যরসিকদের জন্য অ্যালো ভেরা রস খাওয়ার প্রয়োজন কতটা!

৩. শরীর থেকে সব বিষাক্ত উপাদান বেরিয়ে যায়:
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এই রসটা যদি খেতে পারেন, তাহলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর পরিমাণ এত বৃদ্ধি পায় যে দেহের প্রতিটি কোণায় জমতে থাকা টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, এই সব টক্সিক উপাদানদের মাত্রা যদি বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাহলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ রোগ ঘারে চেপে বসতে সময়ই নেয় না। তাই বিষয়ে সাবধান থাকাটা জরুরি!

৪. অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমে:
সরকার প্রকাশিত পরিসংখ্যানের দিকে নজর ফেরালে জানতে পারবেন আমাদের দেশের সিংহভাগ মহিলা নাগরিকই অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন। এমন পরিস্থিতিতে অ্যালো ভেরা প্লান্টের রস খাওয়ার প্রয়োজন যে বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান দেহের অন্দরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে লহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়তে শুরু করে। ফলে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমতে সময়ই লাগে না।

৫. হরমোনাল ইমব্যালেন্স দূর করে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত অ্যালো ভেরা জেল খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে, যার প্রভাবে প্রয়োজনীয় হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে শুরু করে। ফলে হরমেনাল ইমব্যালেন্স হওয়ার মতো সমস্যা ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। প্রসঙ্গত, প্যানক্রিয়াস সংক্রান্ত নানা রোগের চিকিৎসাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
সুস্থভাবে দীর্ঘদিন যদি বাঁচতে চান তাহলে অ্যালো ভেরা রস খেতে ভুলবেন না যেন! কারণ নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

অ্যালোভেরা জেলির যে সব রোগের ওষুধ

আপডেট টাইম : ১২:৪২:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০১৮

হাওর বার্তা ডেস্কঃ ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অ্যালো ভেরার ব্যবহার বেশ কয়েক শতাব্দি ধরে হয়ে আসলেও এই প্রাকৃতিক উপাদানটিকে কাজে লাগিয়ে যে আরও অনেক শারীরিক উপকার পাওয়া যায়। বর্তমানে যে হারে ক্যান্সার সহ একাধিক মারণ রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে অ্যালো ভেরা জেল খাওয়া প্রয়োজন যে বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। প্রতিদিন আমাদের ঘিরে ধরছে নানা ক্রনিক ডিজিজ।

যেমন ধরুন, পরিবেশ দূষণের কারণে একদিকে বাড়ছে ফুসফুসের নানা রোগ, অন্যদিকে আমাদের অনিয়ন্ত্রিত জীবন, নানবিধ নেশার প্রতি আকর্ষণ এবং অস্বাস্থ্যকর খাওয়া-দেওয়া থেকে বিরত থাকার কারণে শরীরে এসে বাসা বাঁধছে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজ এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো রোগ। এমন ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে শরীরকে যদি রোগের খপ্পর থেকে দূরে থাকতে চান,তাহলে অ্যালো ভেরা জেলের সঙ্গে বন্ধুত্ব পাতাতে ভুলবেন না যেন!

প্রাচীনকালে লেখা একাধিক আয়ুর্বেদ গ্রন্থের দিকে নজর ফেরালে জানতে পারবেন সেই কোন কাল থেকে নানাবিধ রোগের চিকিৎসায় অ্যালো ভেরা জেলের ব্যবহার হয়ে আসছে। অ্যালো ভেরা জেলের নানা উপকারিতার বিষয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করা হবে। প্রসঙ্গত, নিয়মিত অল্প করে অ্যালো ভেরার রস খাওয়া শুরু করলে সাধারণত যে যে উপকারিতাগুলি পাওয়া যায়, সেগুলি হল :

১. ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি দূর হয়:
বেশ কিছু কেস স্টাডিতে দেখা গেছে নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপদানটি খাওয়া শুরু করলে শরীরের প্রয়োজনীয় ভিটামিন এবং মিনারেলের ঘাটতি দূর হয়। সেই সঙ্গে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ঘাটতিও দূর হতে থাকে। প্রসঙ্গত, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হল সেই উপাদান, যা আমাদের শরীরকে রোগ মুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। প্রসঙ্গত, অ্যালো ভেরা জেলকে যদি তুলসি, করলা অথবা আমলকির রসের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন, তাহলে আরও বেশি উপকার মেলে। সেক্ষেত্রে ভিতর এবং বাইরে থেকে শরীরের ক্ষমতা তো বাড়েই, সেই সঙ্গে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না।

২. হজম ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
শীত মানেই পিকনিক, সেই সঙ্গে এদিক-সেদিকের খাবার খাওয়া তো রোজের নিয়ম হয়ে দাঁড়ায়েছে। আর এমনটা করতে গিয়ে কি পেটের হাল বেজায় বেহাল হয়ে পরেছে? তাহলে তো বন্ধু আজ থেকেই অ্যালো ভেরা জুস খাওয়া শুরু করতে হবে। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি শরীরে প্রবেশ করার পর পাচক রসের ক্ষরণ এতটা বাড়িয়ে দেয় যে বদ-হজমের মতো রোগ ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে গ্যাস-অম্বল, অ্যাসিডিটি এবং কনস্টিপেশনের মতো সমস্যাও কমতে শুরু করে। এবার বুঝেছেন তো খাদ্যরসিকদের জন্য অ্যালো ভেরা রস খাওয়ার প্রয়োজন কতটা!

৩. শরীর থেকে সব বিষাক্ত উপাদান বেরিয়ে যায়:
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে এই রসটা যদি খেতে পারেন, তাহলে শরীরে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টর পরিমাণ এত বৃদ্ধি পায় যে দেহের প্রতিটি কোণায় জমতে থাকা টক্সিক উপাদানেরা বেরিয়ে যেতে শুরু করে। প্রসঙ্গত, এই সব টক্সিক উপাদানদের মাত্রা যদি বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাহলে শরীরের প্রতিটি অঙ্গের কর্মক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। ফলে নানাবিধ রোগ ঘারে চেপে বসতে সময়ই নেয় না। তাই বিষয়ে সাবধান থাকাটা জরুরি!

৪. অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমে:
সরকার প্রকাশিত পরিসংখ্যানের দিকে নজর ফেরালে জানতে পারবেন আমাদের দেশের সিংহভাগ মহিলা নাগরিকই অ্যানিমিয়ায় ভুগছেন। এমন পরিস্থিতিতে অ্যালো ভেরা প্লান্টের রস খাওয়ার প্রয়োজন যে বেড়েছে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটিতে উপস্থিত একাধিক উপকারি উপাদান দেহের অন্দরে প্রবেশ করার পর এমন খেল দেখায় যে লহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন বাড়তে শুরু করে। ফলে অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমতে সময়ই লাগে না।

৫. হরমোনাল ইমব্যালেন্স দূর করে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত অ্যালো ভেরা জেল খাওয়া শুরু করলে দেহের অন্দরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে, যার প্রভাবে প্রয়োজনীয় হরমোনের ক্ষরণ ঠিক মতো হতে শুরু করে। ফলে হরমেনাল ইমব্যালেন্স হওয়ার মতো সমস্যা ধারে কাছেও ঘেঁষতে পারে না। প্রসঙ্গত, প্যানক্রিয়াস সংক্রান্ত নানা রোগের চিকিৎসাতেও এই প্রকৃতিক উপাদানটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

৬. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটায়:
সুস্থভাবে দীর্ঘদিন যদি বাঁচতে চান তাহলে অ্যালো ভেরা রস খেতে ভুলবেন না যেন! কারণ নিয়মিত এই প্রকৃতিক উপাদানটি গ্রহণ করলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটা শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে সর্দি-কাশি থেকে শুরু করে ছোট-বড় কোনও রোগই ধারে কাছে ঘেঁষতে পারে না। সেই সঙ্গে সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।