ঢাকা ০৪:০১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শর্করা জাতীয় খাবারের দেহের প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচনা করে থাকে

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:১৯:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭
  • ৩৯৮ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমাদের খাদ্যের প্রধান উপাদান শর্করা বা কার্বো-হাইড্রেট। ধান, গম, ভুট্টা, আলু, চিনি, গুড় এবং এসব উপাদান থেকে প্রস্তুত খাদ্যবস্তুকে শর্করাজাতীয় খাবারের প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ ভাত, রুটি, হালুয়া, পায়েস, ফিরনি, চিড়া, মুড়ি, খই, কেক, পাউরুটি, বিস্কুট, পপকর্ন, সিঙ্গারা, সমুচা, পিঠা, চিপস  ও সফ্ট ড্রিংক, বোতলজাত ফ্রুট জুস, চটপটি, হালিম, তন্দুর রুটি, নানরুটি, আলু ভর্তা, পুড়ি, নুডুলস, পাস্তা ইত্যাদিকে শর্করাজাতীয় খাদ্যবস্তু বলা যেতে পারে। শর্করাজাতীয় খাদ্য যেহেতু

শক্তির প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচিত, তাই যেসব ব্যক্তি শক্তি ব্যয় করে কাজ করে বা কায়িক শ্রম সম্পাদন করে, তাদের বেশি পরিমাণে শর্করাজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। কুলি, মজুর, রিকশা, ঠেলাগাড়ি ও ভ্যানচালক, খেলোয়াড়, কল-কারখানার শ্রমিক,  উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের শক্তিদায়ক খাদ্যের প্রয়োজন হওয়ায় তাদের বেশি শর্করাজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, তা না হলে তারা সুস্থ জীবন-যাপন করতে পারবে না। যারা উল্লিখিত পেশার সঙ্গে সংযুক্ত নন যেমন অফিসে কাজ করে এমন ব্যক্তি, শিক্ষক, ডাক্তার, ব্যবসায়ী, গাড়িচালক, গৃহিণী এদের বেলায় শর্করাজাতীয় খাদ্যে চাহিদা খুবই কম।

যদি এ ধরনের পেশার ব্যক্তি বেশি পরিমাণে শর্করাজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে থাকেন তবে তাদের দেহে ট্রাইগ্লিসারাইড জাতীয় ফ্যাট বা চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে এবং দীর্ঘ সময় ধরে অধিক পরিমাণে শর্করাজাতীয় খাদ্য গ্রহণের ফলে ট্রাইগ্লিসারাইড শরীরে চর্বি হিসেবে জমা হতে থাকবে এবং চর্বি জমা হওয়ার ফলে শরীরের আকৃতি বিকৃত হতে থাকে এবং শরীরের আকার বড় হতে থাকবে সুতরাং দেখা যাচ্ছে, মানুষ মোটাসোটা এবং মেদ-ভুঁড়ি সম্পন্ন হওয়ার জন্য অধিক পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।

আমাদের অনেকের মাঝে একটি ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান যে, শুধু চর্বিজাতীয় খাদ্য গ্রহণের ফলেই মানুষের শরীরে চর্বি জমা হয়ে মোটাসোটা হয়ে থাকে, তা সত্য নয়। প্রয়োজনের অধিক পরিমাণ শর্করা গ্রহণের ফলেও মানুষের দেহে চর্বি জমা হয় এবং ওজন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

শর্করা হজমের ফলে সুগারে রূপান্তরিত হয় এবং রক্তে সুগারের পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটে। সুস্থ ব্যক্তির শরীর খুব তাড়াতাড়ি সুগারকে শরীরের বিভিন্ন অংশে মজুদ করে রক্তে সুগারের মাত্রাকে স্বাভাবিক রাখতে পারে, তবে যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের শরীর তাড়াতাড়ি সুগার মজুদ করতে না পারায় রক্তে সুগারের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে।

ডা. এম শমশের আলী, সিনিয়র কনসালটেন্ট (প্রা.), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শমশের হার্ট কেয়ার এবং মুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী, ঢাকা।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

শর্করা জাতীয় খাবারের দেহের প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচনা করে থাকে

আপডেট টাইম : ০১:১৯:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আমাদের খাদ্যের প্রধান উপাদান শর্করা বা কার্বো-হাইড্রেট। ধান, গম, ভুট্টা, আলু, চিনি, গুড় এবং এসব উপাদান থেকে প্রস্তুত খাদ্যবস্তুকে শর্করাজাতীয় খাবারের প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ ভাত, রুটি, হালুয়া, পায়েস, ফিরনি, চিড়া, মুড়ি, খই, কেক, পাউরুটি, বিস্কুট, পপকর্ন, সিঙ্গারা, সমুচা, পিঠা, চিপস  ও সফ্ট ড্রিংক, বোতলজাত ফ্রুট জুস, চটপটি, হালিম, তন্দুর রুটি, নানরুটি, আলু ভর্তা, পুড়ি, নুডুলস, পাস্তা ইত্যাদিকে শর্করাজাতীয় খাদ্যবস্তু বলা যেতে পারে। শর্করাজাতীয় খাদ্য যেহেতু

শক্তির প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচিত, তাই যেসব ব্যক্তি শক্তি ব্যয় করে কাজ করে বা কায়িক শ্রম সম্পাদন করে, তাদের বেশি পরিমাণে শর্করাজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। কুলি, মজুর, রিকশা, ঠেলাগাড়ি ও ভ্যানচালক, খেলোয়াড়, কল-কারখানার শ্রমিক,  উঠতি বয়সের ছেলেমেয়েদের শক্তিদায়ক খাদ্যের প্রয়োজন হওয়ায় তাদের বেশি শর্করাজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে হবে, তা না হলে তারা সুস্থ জীবন-যাপন করতে পারবে না। যারা উল্লিখিত পেশার সঙ্গে সংযুক্ত নন যেমন অফিসে কাজ করে এমন ব্যক্তি, শিক্ষক, ডাক্তার, ব্যবসায়ী, গাড়িচালক, গৃহিণী এদের বেলায় শর্করাজাতীয় খাদ্যে চাহিদা খুবই কম।

যদি এ ধরনের পেশার ব্যক্তি বেশি পরিমাণে শর্করাজাতীয় খাদ্য গ্রহণ করতে থাকেন তবে তাদের দেহে ট্রাইগ্লিসারাইড জাতীয় ফ্যাট বা চর্বির পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে এবং দীর্ঘ সময় ধরে অধিক পরিমাণে শর্করাজাতীয় খাদ্য গ্রহণের ফলে ট্রাইগ্লিসারাইড শরীরে চর্বি হিসেবে জমা হতে থাকবে এবং চর্বি জমা হওয়ার ফলে শরীরের আকৃতি বিকৃত হতে থাকে এবং শরীরের আকার বড় হতে থাকবে সুতরাং দেখা যাচ্ছে, মানুষ মোটাসোটা এবং মেদ-ভুঁড়ি সম্পন্ন হওয়ার জন্য অধিক পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাদ্য মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে।

আমাদের অনেকের মাঝে একটি ভ্রান্ত ধারণা বিদ্যমান যে, শুধু চর্বিজাতীয় খাদ্য গ্রহণের ফলেই মানুষের শরীরে চর্বি জমা হয়ে মোটাসোটা হয়ে থাকে, তা সত্য নয়। প্রয়োজনের অধিক পরিমাণ শর্করা গ্রহণের ফলেও মানুষের দেহে চর্বি জমা হয় এবং ওজন বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।

শর্করা হজমের ফলে সুগারে রূপান্তরিত হয় এবং রক্তে সুগারের পরিমাণ বৃদ্ধি ঘটে। সুস্থ ব্যক্তির শরীর খুব তাড়াতাড়ি সুগারকে শরীরের বিভিন্ন অংশে মজুদ করে রক্তে সুগারের মাত্রাকে স্বাভাবিক রাখতে পারে, তবে যারা ডায়াবেটিস রোগী তাদের শরীর তাড়াতাড়ি সুগার মজুদ করতে না পারায় রক্তে সুগারের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটে।

ডা. এম শমশের আলী, সিনিয়র কনসালটেন্ট (প্রা.), ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শমশের হার্ট কেয়ার এবং মুন ডায়াগনস্টিক সেন্টার, শ্যামলী, ঢাকা।