হাওর বার্তা ডেস্কঃ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার জামিন বাতিল করে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত। একই সঙ্গে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থন সমাপ্ত করে যুক্তিতর্কের (আর্গুমেন্ট) দিন ধার্য করা হয়েছে। গতকাল দুই মামলার শুনানির ধার্য দিনে খালেদা জিয়া আদালতে হাজির না হওয়ায় ঢাকার ৫ম বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান এ আদেশ দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা দুই মামলার বিচারকাজ রাজধানীর বকশীবাজারের কারা অধিদপ্তরের প্যারেড গ্রাউন্ডে স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে চলছে।
এর আগে চিকিৎসার জন্য লন্ডনে যাবার পর নির্ধারিত তারিখে আদালতে হাজির না হওয়ায় গত ১২ই অক্টোবর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন এই আদালত। পরে বিদেশ থেকে ফিরে ১৯শে অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণ করে অন্তবর্তীকালীন জামিন পান খালেদা জিয়া।
খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানান, দুটি মামলাতেই তিনি (খালেদা জিয়া) শুনানির ধার্য তারিখ পর্যন্ত জামিনে ছিলেন। গতকাল এসব মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের দিন ধার্য ছিল।
কিন্তু হরতালের কারণে খালেদা জিয়া আদালতে সময়মতো হাজির হতে পারছেন না মর্মে সময়ের আবেদন করেন তার আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও জয়নুল আবেদীন। শুনানি শেষে আদালতের বিচারক খালেদার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারিসহ জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আগামী ৫, ৬ ও ৭ই ডিসেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দিন ধার্য করেন।
দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল হাওর বার্তাকে বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) আদালতে হাজির হননি অথচ তার আইনজীবীরা হাজিরা দাখিল করেন। আদালত তার জন্য কতক্ষণ বসে থাকবেন। তাই আদালত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। দুদকের আইনজীবী আরো বলেন, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৪২ ধারার কার্যক্রম (আত্মপক্ষ সমর্থন) সম্পন্ন করা হয়েছে। আগামী ৫, ৬ ও ৭ই ডিসেম্বর যুক্তিতর্কের জন্য সময় দেয়া হয়েছে। খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লা মিয়া বলেন, হরতালের কারণে তিনি (খালেদা জিয়া) দুপুর ২টার পর আদালতে আসবেন বলে আমরা সময়ের আবেদন করেছিলাম।
আদালত আবেদন না-মঞ্জুর করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন। এর আগে গত ২৩শে নভেম্বর আদালতে হাজির হয়ে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দিয়েছিলেন খালেদা জিয়া। একই সঙ্গে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় রিকল করা সাক্ষীদের বক্তব্য ওই দিন খালেদা জিয়াকে পড়ে শোনান আদালতের বিচারক। পরে আদালতের প্রশ্নের জবাবে খালেদা জিয়া নিজেকে নির্দোষ দাবি করে এই মামলার স্বপক্ষে আরো বক্তব্য দেবেন বলে আদালতকে জানান। গতকাল দুই মামলাতেই তার হাজিরার দিন ধার্য ছিল। মামলার নথিপত্র অনুযায়ী, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের নামে আসা দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে খালেদা জিয়া, তার ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩রা জুলাই রমনা থানায় মামলা দায়ের করে দুদক।
অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা অবৈধভাবে লেনদেনের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ই আগস্ট রাজধানীর তেজগাঁও থানায় খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুদক। ২০১৪ সালের ১৯শে মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে মামলার বিচারকাজ শুরু হয়।