ঢাকা ১২:৫৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ডায়বেটিস বাড়ায় ইচ্ছা মতো ডায়েট

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০৬:০৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০১৭
  • ৩১৪ বার

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আপনি হয়তো দুপুরে ভাত-মাছ-সবজি পেট ভরে খাওয়ার শুরুতে একবাটি করলা সেদ্ধ খান। বছর দশেক ধরে ডায়াবিটিসে ভোগার কারণে এই নিয়ম। কিন্তু এরপরও ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে না এসে উল্টো দিন দিন বেড়ে চলছে। ফলে বাড়ছে ওষুধের মাত্রাও।

কিংবা ধরুন ডায়াবেটিস আক্রান্ত কেউ সকালে উঠে মেথি ভেজানো পানি পান করেন। নাস্তার আগে ও পরে ওষুধতো রয়েছেই। তবে নাস্তাটা হয়তো ভাত, রুটি কিংবা পরোটা ছাড়া জমে না। বিয়েবাড়িতে দুয়েকটা রসগোল্লাও খাওয়া হয়।

ব্লাড সুগারটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আবার কেউ হয়তো ভাত-রুটি সব নিয়ম মেনে পরিমিত খান। তবে রোজ রাতে দুই পেগ না খেলেঘুম আসে না। তাই বাকি সব খাবারে আরও কড়াকড়ি। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার একেবারেই বন্ধ রেখেছেন।

আধুনিক গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়, উপরে লেখা সব ধরনের অভ্যাসই আপনার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। নিজের ইচ্ছা মতো খাদ্যাভ্যাসের কারণেই বাড়ছে ঝুঁকি। যার কারণে ডায়াবিটিসের প্রকোপ ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আরও নানা রোগের আশঙ্কা। আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন।

বাংলাদেশে আগামী ২০ বছরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে ১ কোটি ২০ লাখে। বেসরকারি সংস্থা হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল এমনই তথ্য দিয়েছে। বিশেষ়জ্ঞররা জানান, জীবনযাপন পরিবর্তন আনা এই রোগের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে ওষুধের থেকেও বেশি জরুরি, খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণের দিকে নজর দেওয়া। তার মানে, ইচ্ছেমতো খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা নয়। নিজের প্রতিদিনকার খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাসে বিজ্ঞানসম্মতভাবে পরিবর্তন আনতে হবে।

চিকিৎসকদের মতে, কার কতোটা ক্যালোরি প্রয়োজন, তা বিভিন্ন পরীক্ষা করে তারপর বলা যায়। কোনো চিকিৎসকই খালি চোখে রোগীকে দেখে এটা বলে দিতে পারেন না।

ডায়াবেটিক আহার মানে শুধু মিষ্টি, আলু ও ভাত কমিয়ে দেওয়া নয়। ডায়েটিশিয়ানরা জানান, ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে খাদ্যে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। কিন্তু কার্বোহাইড্রেট একেবারেই যেন বাদ না পড়ে যায়- সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। তবে সেটার পরিমাণ নিজে ঠিক করে নেওয়া ঠিক নয়। এটা শুধু রক্তে সুগারের মাত্রার ওপরে নয়, রোগীর বয়স ও ওজনের ওপরেও নির্ভর করে। ফলে কোন রোগীর খাবারে দৈনন্দিন কতটা ক্যালোরি রাখা উচিত, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেটা ঠিক করতে হবে। সেই ক্যালোরির হিসাব করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, একজন ডায়াবেটিস রোগী কখন কী খাবেন।

সাধারণ হিসাব অনুযায়ী, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে শাকসবজি, ফল, খই, চিঁড়া, মুড়ি— এসব খাবার বেশি খাওয়া ভালো। তবে একেক জন রোগীর জন্য খাবারের এই চার্ট একেক রকম হয়।

চিকিৎসকরা জানান, ডায়াবেটিক রোগীদের ওজনের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। এক্ষেত্রে ওজন বেড়ে অন্যান্য সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এটা অবশ্য বহু রোগীই জানেন, সেই অনুযায়ী তারা ওজন কমানোর চেষ্টাও করেন। কিন্তু সেই চেষ্টা চিকিৎসাশাস্ত্রের নিয়ম মেনে করতে হবে। এই বিষয়টাই মাথায় রাখেন না বেশির ভাগ রোগী।

ওজন বাড়া মানেই রোগীর শরীরে ইনস্যুলিন কম কাজ করতে পারে। এক্ষেত্রে ডায়াবিটিস আরও জটিলতায় রূপ নেয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওজন কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করান, ওজন একটু বেশি থাকলেই খাদ্যে ক্যালরির পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া জরুরি। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কড়া ডায়েট চার্ট মেনে চলতে হবে। ইচ্ছা মতো দুয়েকটা খাবার বাদ দিয়ে নিজের ডায়েট নিজে বানিয়ে নিলে রোগ আরও খারাপের দিকে যাবে। সঙ্গে অন্য বহু রোগ বাসা বাঁধবে শরীরে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

ডায়বেটিস বাড়ায় ইচ্ছা মতো ডায়েট

আপডেট টাইম : ০৬:০৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর ২০১৭

হাওর বার্তা ডেস্কঃ আপনি হয়তো দুপুরে ভাত-মাছ-সবজি পেট ভরে খাওয়ার শুরুতে একবাটি করলা সেদ্ধ খান। বছর দশেক ধরে ডায়াবিটিসে ভোগার কারণে এই নিয়ম। কিন্তু এরপরও ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে না এসে উল্টো দিন দিন বেড়ে চলছে। ফলে বাড়ছে ওষুধের মাত্রাও।

কিংবা ধরুন ডায়াবেটিস আক্রান্ত কেউ সকালে উঠে মেথি ভেজানো পানি পান করেন। নাস্তার আগে ও পরে ওষুধতো রয়েছেই। তবে নাস্তাটা হয়তো ভাত, রুটি কিংবা পরোটা ছাড়া জমে না। বিয়েবাড়িতে দুয়েকটা রসগোল্লাও খাওয়া হয়।

ব্লাড সুগারটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে আবার কেউ হয়তো ভাত-রুটি সব নিয়ম মেনে পরিমিত খান। তবে রোজ রাতে দুই পেগ না খেলেঘুম আসে না। তাই বাকি সব খাবারে আরও কড়াকড়ি। কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার একেবারেই বন্ধ রেখেছেন।

আধুনিক গবেষণা রিপোর্ট অনুযায়, উপরে লেখা সব ধরনের অভ্যাসই আপনার জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে। নিজের ইচ্ছা মতো খাদ্যাভ্যাসের কারণেই বাড়ছে ঝুঁকি। যার কারণে ডায়াবিটিসের প্রকোপ ছড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে আরও নানা রোগের আশঙ্কা। আনন্দবাজার পত্রিকার প্রতিবেদন।

বাংলাদেশে আগামী ২০ বছরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দাঁড়াবে ১ কোটি ২০ লাখে। বেসরকারি সংস্থা হেলেন কেলার ইন্টারন্যাশনাল এমনই তথ্য দিয়েছে। বিশেষ়জ্ঞররা জানান, জীবনযাপন পরিবর্তন আনা এই রোগের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে ওষুধের থেকেও বেশি জরুরি, খাওয়াদাওয়া নিয়ন্ত্রণের দিকে নজর দেওয়া। তার মানে, ইচ্ছেমতো খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করা নয়। নিজের প্রতিদিনকার খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাসে বিজ্ঞানসম্মতভাবে পরিবর্তন আনতে হবে।

চিকিৎসকদের মতে, কার কতোটা ক্যালোরি প্রয়োজন, তা বিভিন্ন পরীক্ষা করে তারপর বলা যায়। কোনো চিকিৎসকই খালি চোখে রোগীকে দেখে এটা বলে দিতে পারেন না।

ডায়াবেটিক আহার মানে শুধু মিষ্টি, আলু ও ভাত কমিয়ে দেওয়া নয়। ডায়েটিশিয়ানরা জানান, ডায়াবিটিসের ক্ষেত্রে খাদ্যে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণের দিকে নজর দেওয়া জরুরি। কিন্তু কার্বোহাইড্রেট একেবারেই যেন বাদ না পড়ে যায়- সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। তবে সেটার পরিমাণ নিজে ঠিক করে নেওয়া ঠিক নয়। এটা শুধু রক্তে সুগারের মাত্রার ওপরে নয়, রোগীর বয়স ও ওজনের ওপরেও নির্ভর করে। ফলে কোন রোগীর খাবারে দৈনন্দিন কতটা ক্যালোরি রাখা উচিত, চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেটা ঠিক করতে হবে। সেই ক্যালোরির হিসাব করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, একজন ডায়াবেটিস রোগী কখন কী খাবেন।

সাধারণ হিসাব অনুযায়ী, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে শাকসবজি, ফল, খই, চিঁড়া, মুড়ি— এসব খাবার বেশি খাওয়া ভালো। তবে একেক জন রোগীর জন্য খাবারের এই চার্ট একেক রকম হয়।

চিকিৎসকরা জানান, ডায়াবেটিক রোগীদের ওজনের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া দরকার। এক্ষেত্রে ওজন বেড়ে অন্যান্য সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এটা অবশ্য বহু রোগীই জানেন, সেই অনুযায়ী তারা ওজন কমানোর চেষ্টাও করেন। কিন্তু সেই চেষ্টা চিকিৎসাশাস্ত্রের নিয়ম মেনে করতে হবে। এই বিষয়টাই মাথায় রাখেন না বেশির ভাগ রোগী।

ওজন বাড়া মানেই রোগীর শরীরে ইনস্যুলিন কম কাজ করতে পারে। এক্ষেত্রে ডায়াবিটিস আরও জটিলতায় রূপ নেয়। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো ওজন কমানোর চেষ্টা করতে হবে।

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা মনে করান, ওজন একটু বেশি থাকলেই খাদ্যে ক্যালরির পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া জরুরি। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে কড়া ডায়েট চার্ট মেনে চলতে হবে। ইচ্ছা মতো দুয়েকটা খাবার বাদ দিয়ে নিজের ডায়েট নিজে বানিয়ে নিলে রোগ আরও খারাপের দিকে যাবে। সঙ্গে অন্য বহু রোগ বাসা বাঁধবে শরীরে।